স্বাধীনতা চাই..........
ফুরিয়ে যাচ্ছে সৌদি আরবের মরুভূমির বালি৷ জলবায়ু পরিবর্তনের এটা নাকি একটি প্রভাব৷ আর এ কারণেই সৌদি সরকার সে দেশ থেকে বালি রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে৷ সৌদি মরুভূমির বালি বিভিন্ন দেশে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়৷
এশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আরব উপদ্বীপেঅবস্থিত দেশ সৌদি আরব৷ আয়তন সাড়ে ২২ লাখ বর্গকিলোমিটার৷ এই দেশটির পূর্ব দিকে পারস্য উপসাগর৷ পশ্চিমে লোহিত সাগর৷ সৌদি আরব, একটি আরবি শব্দ৷ এর অর্থ সুখী মরুভূমি৷ নামের সঙ্গে এই দেশের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থারও বেশ মিল আছে৷ কারণ সেখানে মরুভূমির মোট আয়তন দেশের আয়তনের ৫০ শতাংশ৷ সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় সম্পদ তেল৷ সৌদি আরবের তেলের মোট মজুদের পরিমাণ প্রায় ২৬২ বিলিয়ন ব্যারেল৷ তবে মরুভূমির এই দেশটিতে পানি সম্পদও রয়েছে প্রচুর৷ বলা হয় ২০ লাখ হেক্টর মিঠাপানি রয়েছে এখানে৷ কেবল কি মরুভূমি... ধূ ধূ বালিময়, নাকি এখানে বনও আছে? উত্তর...বনের আয়তন ৩৬ লাখ হেকটর৷ দেশের আয়তনের ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ৷
ফিরে যাই মরুভূমির গল্পে৷ সম্প্রতি একটি সংবাদ পুরো বিশ্বকে বেশ কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এতে বলা হচ্ছে সৌদি আরবের মরুভূমির বালি নাকি শেষ হয়ে যাচ্ছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা'র এপোলো প্রোগ্রামের লুনার সাইন্স প্ল্যানিং-এর সুপারভাইজার, বস্টন ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর রিমোট সেনসিং-এর পরিচালক প্রখ্যাত ভূ-তত্ত্ববিদ ড. ফারুক আল বাজ জানিয়েছেন, বিশ্বের যে কোন মরুভূমি এবং বিশেষ করে আরব বিশ্বের মরুভূমির তলদেশে এত বিশাল পানির মজুদ লুকিয়ে রয়েছে যে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না৷ এটা তাদের গবেষণার ফলাফল৷ মধ্যপ্রাচ্য হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক অঞ্চলগুলোর অন্যতম৷ জাতিসংঘের বিশ্ব পানি উন্নয়ন সংস্থার রিপোর্টে পানির দুষ্প্রাপ্যতার বিচারে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের নাম উল্লেখ করা হয়, যার ৬টিই মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত৷ আবার এই ৬টির মধ্যে ৩টিই শীর্ষ-১০ এর একেবারে উপরে অবস্থান করছে৷
ড. বাজ বলেন, ‘যে জায়গাগুলোকে আজ আমরা মরুভূমি বলছি, আজ থেকে মাত্র ৫ হাজার বছর আগেও কিন্তু সেগুলো মরুভূমি ছিল না৷ ৫ থেকে ১১ হাজার বছর আগেও সেখানে ছিল সবুজ তৃণময় সমতল ভূমি, ছিল চমৎকার পরিবেশ৷ আজকের মরুভূমি সে সময় সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত ছিল, গাছপালা ছিল, বন ছিল, পশু-পাখি ছিল৷ সেখানে নদী ছিল, লেক ছিল, মানুষের বসবাস ছিল, ঘর-বাড়ি ছিল, বাগান ছিল, হাট-বাজার ছিল! এই জীবনময় জলযুগের পূর্বে সেখানে বিরাজ করছিল ড্রাই পিরিয়ড বা শুষ্ক যুগ৷ আবার তারও পূর্বে ছিল আর্দ্র যুগ বা জলযুগ৷ এ সময়টি ছিল ২৫ থেকে ৩৫ হাজার বছর পূর্বের সময়-কালের মধ্যে৷ এভাবে যত পেছনে যাওয়া যায় জলযুগ ও শুকনো যুগ চক্রাকারে আবর্তনশীল ছিল৷ সর্বশেষ দূরবর্তী সময়কালটি ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার বছর থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার বছর পূর্বের সময়কালের মধ্যে৷ কালের গর্ভে এই চক্রটি অব্যাহত ছিল৷ তিনি জানান, বেশির ভাগ মরুভূমির নীচে যে পানির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে তার অনেকটাই অত্যন্ত পুরনো৷ যেমন মিশরের পশ্চিম অঞ্চলের মরুভূমির নীচে যে সব পানির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর বেশির ভাগই ৩০ হাজার বছরের পুরনো৷ এর অর্থ, হাজার হাজার বছর ধরে ভূ-ত্বকের শিলা স্তরের ভিতর দিয়ে পানি মরুভূমির নীচের ভূগর্ভে জমা হচ্ছে এবং সেখানে অবস্থান করছে৷ এবার বিজ্ঞানীদের প্রশ্ন তাহলে কি বালি ফুরিয়ে যাবার পর আবার উপরে উঠে আসবে পানি!!!!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।