Right is right, even if everyone is against it; and wrong is wrong, even if everyone is for it
সবখানেই পাল্টে যাচ্ছে কৃষির চেহারা। জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে কৃষির বিভিন্ন উপকরণের চাহিদা কৃষককে ভাবিয়ে তুলছে। সরকার নানাভাবে চাইছে কৃষিকে কৃষকের অনুকূল রাখতে। সেই মাফিক নানা উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু কার্যত কৃষকের মুক্তি মিলছে না কিছুতেই।
বর্তমান সময়ে এসে কৃষির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র হচ্ছে সেচ। এক সময় এদেশে শুধু বোরো মৌসুমে সেচ সুবিধার কথা চিন্তা করা হতো, কিন্তু এখন শুধু বোরো নয় সব মৌসুমেই সেচের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সঠিক সময়ে পরিমাণমতো সেচ দিতে না পারায় কৃষক নানাভাবে মারও খাচ্ছে।
বর্তমান সরকার কৃষিক্ষেত্রে নানাবিধ যুগোপযোগী উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে। এই সেচের প্রশ্নে সরকারের যেসব পরিকল্পনার কথা জানা যায় তার মধ্যে রয়েছে চর, পাহাড়ি খরাপ্রবণ ও লবণাক্ত জমিসহ সর্বস্তরে আধুনিক সেচ ব্যবস্থাপনা প্রয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
আধুনিক সেচ প্রযুক্তির ব্যাপক সম্প্রসারণ যাতে সেচের পানির দক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়। সুনির্দিষ্ট নীতির আলোকে দক্ষ সেচ গ্রুপ তৈরি করা, সেচযন্ত্র পরিচালনা, মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করা। সেচ বিষয়ে কৃষক ও সম্প্রসারণকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান যাতে তারা গবেষণা ও মাঠপর্যায়ের জ্ঞানের ফারাক কমিয়ে অধিকতর ফলন নিশ্চিত করতে পারে। জলাশয় সংরক্ষণ, খাল খনন, পুকুর ও অন্য জলাধারগুলো সংস্কারের মাধ্যমে ভূউপরিস্থ সেচের পানি সংরক্ষণ করা এবং ভূগর্ভস্থ পানির ওপর থেকে চাপ কমিয়ে আনা। রাবার ড্যাম, ক্রসড্যাম, ফিতাপাইপ, ভূগর্ভস্থ সেচ পদ্ধতি বাস্তবায়ন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ তৈরি, মেরামত এবং নদীভাঙন রোধ কৃষিবান্ধব কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করণ এবং মৌসুমি বাঁধ দিয়ে সেচের জন্য বর্ষার পানি সংরক্ষণ। পরিকল্পনাগুলো নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ও সময়োপযোগী। কিন্তু এত সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন যথেষ্টই সময়সাপেক্ষ, তবে অসম্ভব বা অবান্তর নয়। আমরা বিশ্বাস করি পর্যায়ক্রমে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে সেচের প্রশ্নে কৃষককে আর কোন সংকটে পড়তে হবে না।
সেচ নিয়ে সমকালীন অতীত ও বর্তমানের চিত্রগুলো একটু দেখে নেয়া যাক। পঞ্চাশের দশক থেকেই এদেশে সেচ অবকাঠামো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। তৎকালীন সময়ের শাসকরা কিছু সেচ প্রকল্পও গ্রহণ করে। আর ষাটের দশকে এসে এদেশে লো লিফট পাম্প এবং গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ শুরু হয়। আর যখন এদেশে উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ শুরু হল ঠিক তখন থেকেই আধুনিক ও কার্যকর সেচ ব্যবস্থা কৃষির জন্য একেবারে অপরিহার্য হয়ে উঠল।
সেচব্যবস্থা নিয়ে চারদিকে যেন শোরগোল পড়ে গেল। সেচব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং কৃষকের মাঠে পানি পৌঁছে দেয়ার জন্য সরকারিভাবেই নেয়া হয় নানা উদ্যোগ। যার সাফল্য হিসেবেই ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলন যেমন নিশ্চিত করা গেছে একইভাবে দেশব্যাপী একটি সেচ অবকাঠামোও গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব মতে, এ পর্যন্ত দেশে ৬১৭টি ছোট-বড় সেচ প্রকল্প ও উপ-প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে তিস্তা ব্যারাজ, গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প, মুহরী সেচ প্রকল্প, মনু নদী সেচ প্রকল্প, নর্থ বাংলাদেশ ডিটিডব্লিউ প্রকল্প, মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও গ্রামোন্নয়ন প্রকল্প এবং চাঁদপুর সেচ প্রকল্প।
এতসব প্রকল্প থাকলেও খোদ প্রকল্প এলাকাতেই আমরা দেখতে পায় শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার। আবার সেচ পাম্পের হিসেবের দিকে দৃষ্টি দিলেও এক বড় পরিসংখ্যান আমাদের সামনে আসে। বোরো মৌসুমে দেশের ১ কোটি ২০ লাখ একর চাষযোগ্য জমিতে ২৩ লাখ ৩০ হাজার সেচপাম্প ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে ১ কোটি ৪ লাখ একর জমি চাষে ব্যবহৃত হয় ১১ লাখ ৫৮ হাজার ডিজেলচালিত সেচপাম্প। বাকি ১৬ লাখ একর জমি চাষে ব্যবহৃত হয় ১০ লাখ ৮০ হাজার বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্প।
কথা হচ্ছে এর পরেও কি সেচের প্রশ্নে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ? মোটেও না। সেচ নিয়ে প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে এসে দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের হাহাকার চোখে পড়ে। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার কথাই ধরা যাক। সেখানে বহুদিন ধরেই বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্প মালিকরা কৃষকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত সমবায় স্কিমের সেচকর না নিয়ে মনগড়া একটি হিসাব তৈরি করে ধান আদায় করে আসছে। গত দুই বছর বোরো মৌসুম ও তার পরবর্তী আমন মৌসুমে পাম্প মালিকরা কৃষকদের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি সেচের জন্য এক-চতুর্থাংশ (কোন কোন জায়গায় এক-তৃতীয়াংশ) পরিমাণ ধান আদায় করেছে।
বিঘাপ্রতি ২৪ মণ ধান হলে সেখানে পাম্প মালিক আদায় করেছে ৬ মণ, কোথাও ৮ মণ। তারা কৃষকের মতামতের তোয়াক্কা না করে ক্ষেতের সবচেয়ে ভালো অংশের ধান জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি কৃষককে বেঁধে রেখে ধান কাটার মতো মধ্যযুগীয় নির্যাতনসুলভ আচরণের নজিরও সৃষ্টি করেছে। বিগত শতকের আশি ও নব্বই দশকে ওই আটঘরিয়া উপজেলাতেই সেচ পাম্প মালিকদের এমন শোষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দু�জন কৃষককে আত্মাহুতি পর্যন্ত দিতে হয়েছে। এই একই চিত্র দেশের অনেক এলাকায়।
বগুড়াসহ উত্তরের বিভিন্ন জেলায় সেচপাম্প মালিকদের শোষণের বহু চিত্র রয়েছে। সরকার কৃষকদের স্বার্থে সেচে শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কৃষক পর্যন্ত তার সুফল এসে পৌঁছাচ্ছে না। অধিকাংশ এলাকার কৃষকরাই জানে না সরকারের ভর্তুকির হিসাব-নিকাশ, সুফল পাওয়া তো দূরের কথা। গত পাঁচ বছর একটানা জাতীয় বাজেটের আগে কৃষকদের সঙ্গে কৃষি বাজেট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দেখেছি দেশের প্রায় সব এলাকাতেই সেচখাতে কৃষকরা সরকারি ভর্তুকির সুফল পাচ্ছে না। সরকারের ভর্তুকি কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোন অবকাঠামো না থাকায় কৃষকদের প্রাপ্তির জায়গাটি অনিশ্চিত থেকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে সেচকাজে ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণেও বাংলাদেশের কৃষি ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্য দিনের পর দিন হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে পৃথিবীতে ভূগর্ভস্থ পানি নির্ভরতার হিসেবে বাংলাদেশের স্থান এক নম্বরে। এদেশে মোট সেচকাজের ৭০ ভাগই ভূগর্ভস্থ পানিনির্ভর। দিনে দিনে কমছে বৃষ্টিপাতের হার। গত ৩০ বছরে এই হার কমেছে ২�শ থেকে ৩�শ মিলিমিটার।
যে হারে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে সে হারে পূর্ণ হচ্ছে না। এই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত রূপ দেখা গেছে চলতি আমন মৌসুমের শুরুর দিকে। রোপণ মৌসুমের নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কৃষক শুধু পানির অভাবে আমন রোপণ করতে পারেনি। এবার অধিকাংশ এলাকাতেই আমন রোপণ হয়েছে এক মাস দেরিতে। জলবায়ুর এই অস্বাভাবিক আচরণ আমাদের কৃষিকে দিনের পর দিন সংকটাপন্ন করে তুলছে।
পানিপ্রাপ্তির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ধাবিত হচ্ছে এক বন্ধ্যাত্বের মুখে।
একটি সময়ে এসে সরকার সেচসুবিধা নিবিঢ় করতে ডিজেল ও বিদ্যুতে ভর্তুকি দেয়া শুরু করে। সারাদেশেই যখন বিদ্যুতের ঘাটতি, তখন কিভাবে সেচ পাবে গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা। এই তিন বছর আগেও দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখা যায় দিনে বিদ্যুতের দেখা নেই। রাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার আশা নিয়ে কৃষকরা তাদের সেচপাম্প চালু রাখে।
কিন্তু রাতেও থেকে থেকে বিদ্যুৎ যায়। অগত্যা কৃষকদের অবলম্বন হয়ে ওঠে ডিজেলচালিত সেচপাম্প। কিন্তু বিশ্ববাজারে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ধান আবাদে সবচেয়ে বড় খরচের জায়গাটি দখল করে সেচখাত। এদিকে সেচের পানি অপচয় রোধ করা এবং কৃষকদের সেচবাবদ অর্থব্যয় কমাতে এদেশে ব্যবহার শুরু হয়েছে নানা প্রযুক্তির। বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে সেচের ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে প্রি-পেইড মিটার কার্ড।
যার মাধ্যমে সেখানকার কৃষকরা বেশ উপকৃত।
আবার সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে উদ্যোগী তরুণ আব্দুর রাজ্জাক সিএনজি গ্যাসের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতে সেচপাম্প চালিয়ে কৃষকদের তাক লাগিয়ে দেন। একটি সিএনজি জেনারেটর দিয়ে ৬টি সেচপাম্প বসিয়ে বহু কৃষকের ক্ষেতে পানি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা চালু করেন তিনি। বেসরকারি ওই উদ্যোগটিও যথেষ্টই কার্যকর।
এর মধ্যেই সেচের পানি সাশ্রয়ের এক নতুন বার্তা হিসেবে আসে এডব্লিউডি।
জমি ভিজিয়ে এবং শুকিয়ে পানি দেয়ার ব্যবস্থা। যেটি কোন কোন গ্রামে এখন পরিচিতি পেয়েছে জাদুর নল হিসেবে। হিসাবটি ইতিমধ্যে অনেকেরই জানা হয়ে গেছে যে, এদেশে ১ কেজি ধান উৎপাদনের পেছনে পানি ব্যয় করা হয় ৩ থেকে ৪ হাজার লিটার। যার বড় একটি অংশের পানি অপচয় হয়ে যায়। দেখা গেছে এডব্লিউডি ব্যবহারের পর কৃষকরা (যেসব এলাকার কৃষকরা ব্যবহার করছে) সেচ ক্ষেত্রে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা থেকে অনেকটাই মুক্ত হতে পারছে।
কিন্তু কথা হচ্ছে এই এডব্লিউডি�র সম্প্রসারণ নিয়ে। এখনও এই প্রযুক্তি ও এর উপকরণ দেশের কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে তেমন কার্যকর কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
গত কয়েক বছর ধরে সরকার বোরো মৌসুমে রাজধানীর আবাসিক ও বাণিজ্যিক বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে গ্রামে কৃষকদের আবাদি ক্ষেতে সেচসুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীর দোকানপাট সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ করার ঘোষণাও করা হয়। যা গ্রামাঞ্চলে সেচসুবিধা পৌঁছে দিতে অনেকটাই ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও এ তথ্য আমাদের ভাবিয়ে তোলে যে, শুধু সেচের অভাবেই দেশে হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি থেকে যায় প্রতি বছর। আর অর্থের অভাবে কৃষকরা পরিমাণমতো সেচ দিতে না পারায় ফসলের ঘাটতি থেকে যায় কমপক্ষে ১০ লাখ টন।
এবার এসেছে নতুন এক প্রকল্প। যার মধ্য দিয়ে উঁকি দিচ্ছে দেশের সেচখাতে নতুন এক সম্ভাবনা। সাভারের নিভৃতপল্লী কাইশারচর গ্রামে বেসরকারি উদ্যোগ স্থাপিত হয়েছে সৌরপাম্প প্রকল্প।
৩০ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ ওই প্রকল্প নির্বিঘ্নে একটানা ২০ বছর অন্তত ২৫ থেকে ৩০ একর জমিতে সেচসুবিধা পৌঁছে দিতে পারবে। কৃষকদের ভাবতে হবে না সেচখাতের জ্বালানি কিংবা বিদ্যুৎ নিয়ে। কাছ থেকে যেসব কৃষক এই প্রযুক্তিটি দেখেছেন তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। তাদের কাছে রীতিমতো জাদুর মতোই একটি ব্যবস্থা। সেচ নিয়ে বহুকাল সমস্যা আর দুর্দশা পেরিয়ে এসে তারা এখন অনেকটাই নিশ্চিত যে বিদ্যুৎ কিংবা জ্বালানি তেলের শক্তি দিয়ে পাম্প চালিয়ে সেচ দেয়া তাদের জন্য এক দুরাশা।
এখন সূর্যের অমিত শক্তি যদি সেচের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যায় তাহলে সত্যিই তারা বেঁচে যাবে। একই সঙ্গে বেঁচে যাবে দেশের বড় একটি অংশের বিদ্যুৎ। তার মাধ্যমে দেশের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছেনি সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া যাবে, একইভাবে সরকারও বেঁচে যাবে জ্বালানি তেলের জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয় থেকে। উদ্যোগটি বেসরকারি খাতের। বাংলাদেশে বিকল্প জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিয়ে ৩০ বছরের সফল যাত্রায় এবার রহিমআফরোজ স্থাপন করেছে এই সৌরপাম্প।
উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন এই কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার। এক্ষেত্রে তারা বলছেন সরকার ও ব্যক্তি উদ্যোক্তার অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে দেশে ছড়িয়ে দেয়া যেতে পারে এই প্রকল্প। গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানসহ অন্য কর্মকর্তারা দেখতে গিয়েছিলেন ওই সৌরপাম্পের কার্যক্রম। পুরো কার্যক্রম দেখে বেশ আশান্বিত হন তারা। কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড� এসএম নাজমুল ইসলামও এক্ষেত্রে জানালেন সরকারের আন্তরিকতার কথা।
তিনি বললেন, বেসরকারি খাত থেকে এমন উদ্যোগ এলে সরকার সেই দিকটিকেই বেশি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখবে। তিনি জানালেন, ইতিমধ্যে ১৪টি প্রতিষ্ঠান এই সৌরপাম্প স্থাপনের প্রস্তাবনা পেশ করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প প্রস্তাব।
উদ্যোক্তারা বলছেন, এই সৌরপাম্প স্থাপন করা হলে দেশে ৮০ কোটি লিটার ডিজেল সাশ্রয় হবে, যার দাম ৩ হাজার ২�শ কোটি টাকা, আর বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ৭৬০ মেগাওয়াট। যা ব্যবহার হতে পারে দেশের উন্নয়নমুখী অন্য কোন প্রকল্পে।
উদ্যোক্তা, বিএডিসির কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কৃষকদের সমন্বিত পরামর্শ হল, এ বিষয়ে সরকার কার্যকরভাবে ভেবে দেখতে পারে। সবাই বলেছেন পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা। সরকারের ভর্তুকির অর্থ পর্যায়ক্রমে এই খাতে ব্যয় করে দেশের সিংহভাগ এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া যেতে পারে স্থানীয় এই সেচব্যবস্থা। এর মধ্য দিয়ে কৃষক যেমন বাঁচবে, সরকারও রেহাই পাবে ভর্তুকির বোঝা থেকে।
বোরো মৌসুম আসন্ন।
এ মৌসুম মানেই সেচের মৌসুম। নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধার কোন ঘাটতি ঘটলেই বোরো মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ফলনের প্রশ্নে কৃষকের দুশ্চিন্তার সীমা থাকে না। গৃহীত পরিকল্পনাগুলো একে একে বাস্তবায়নের পাশাপাশি কৃষকের কাছে সহজে ও সস্তায় সেচ পৌঁছে দিয়ে কৃষি উৎপাদনের গতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে, সেটিই প্রত্যাশা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।