আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা বাড়তি চাহিদা এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট

ভালবাসি আসছে বোরো মৌসুমে বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা পূরণে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকলেও সেচ মৌসুমে সারাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। কৃষি ফলনের জন্য সারাদেশে বাড়তি এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্রয়োজন হবে। কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ করা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তবে উৎপাদন ঘাটতি ও লাইন ওভারলোডেট থাকায় সেচের জন্য নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া নিয়ে অনিশ্চিতা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক বলেছেন, নতুন সংযোগ দেওয়া হবে কি না বা কতগুলো দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় লাগবে। বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থার নির্ভরযোগ্যতার ওপর তা নির্ভর করবে। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসছে বোরো মৌসুমে বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা পূরণে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করব। আশা করি কোনও সমস্যা হবে না। সরকারী হিসেবে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বিদ্যুতচালিত সেচ পাম্প ব্যবহƒত হবে।

এর মধ্যে নতুন পাম্পের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। সেচ মৌসুমে প্রতিদিন (রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা) পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করতে হবে। এর মধ্যে ঢাকায় সেচ পাম্পের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮৩ মেগাওয়াট। ময়মনসিংহ অঞ্চলের সেচ পাম্পের বিপরীতে বিদ্যুতের চাহিদা ২৩০ মেগাওয়াট। রাজশাহী অঞ্চলের সেচ পাম্পের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ৩৪০ মেগাওয়াট।

রংপুর অঞ্চলের সেচ পাম্পের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ২৩৫ মেগাওয়াট। খুলনা অঞ্চলের সেচ পাম্পের জন্য চাহিদা রয়েছে ১৪৩ মেগাওয়াট। কুমিল্লা অঞ্চলের সেচ পাম্পের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ১১৭ মেগাওয়াট। চট্টগ্রাম অঞ্চলের সেচ পাম্পের জন্য চাহিদা ৩৪ মেগাওয়াট। সিলেট অঞ্চলে জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ২০ মেগাওয়াট এবং বরিশাল অঞ্চলের পাম্পের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৭ মেগাওয়াট।

বিদ্যুতচালিত সেচযন্ত্রের বাইরে ডিজেলচালিত আরও প্রায় ১৫ লাখ সেচযন্ত্র রয়েছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সেচ পাম্পগুলোতে বিদ্যুত সরবরাহ করে থাকে। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) প্রায় ২ লাখ পাম্পে বিদ্যুত সরবরাহ করে থাকে। অবশিষ্ট পাম্পগুলোতে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বিদ্যুত সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে। বর্তমানে আরইবি, ওজোপাডিকো ও পিডিবির বিতরণ অঞ্চল মিলে সেচের জন্য মোট প্রায় ৫৭ হাজার নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগের আবেদন রয়েছে।

তবে বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে এসব আবেদন আমলে নিচ্ছেন না কর্তৃপ। তাই আবেদনকারি কৃষকদের নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চিতা দেখা দিয়েছে। তারা সংযোগ না পেলে উৎপাদনের উপর প্রভাব পরবে। সূত্র জানায়, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহী বিভাগে জানুয়ারি থেকেই সেচ পাম্প চালু করা হয়। ঢাকা বিভাগে জানুয়ারির শেষ দিকে সেচ পাম্প চালুর প্রয়োজন হয়।

তবে দেশের দপিশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে কিছুটা বিলম্বে সেচ কাজ শুরু হয়। অঞ্চলভেদে জানুয়ারির প্রথম থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সেচ কার্যক্রম চলে। সূত্র জানায়, বোরো মৌসুমে বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবেলায় কৌশল খুঁজছে বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণের সঙ্গে সংশিস্নষ্ট বিভাগগুলো। সেচ মৌসুমে প্রয়োজনীয় বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে করণীয় নির্ধারণ করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, বোরোর বাম্পার ফলন নিশ্চিত করতে কৃষি জমিতে সেচের জন্য প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত গ্রামীণ জনপদে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে।

নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে যাতে কেউ সেচযন্ত্র না চালায় সে ব্যাপারেও তদারকি জোরদার করা হবে। সারাদেশে চুরি হওয়া ট্রান্সফরমারগুলোও পুনরায় স্থাপন শুরু উদ্যোগ নিবে আরইবি। সূত্র জানায়, বোরো মৌসুমে গ্রামে বিদ্যুতের বাড়তি সরবরাহ নিশ্চিত করতে অফ পিক আওয়ারে শহরে লোডশেডিং বাড়ানো হবে। এর অংশ হিসেবে রাত আটটায় খাবার ও ওষুধ ছাড়া সব দোকান ও বিপণিবিতান বন্ধ করতে বলা হবে। সন্ধ্যাকালীন সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) শিল্পকারখানা জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবে না।

ওই সময় এছাড়া কৃষকের স্বার্থে পানির পাম্পসহ ভারী বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। শহরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলো আগের মতোই বন্ধ রাখারও অনুরোধ জানানো হবে। সপ্তাহের একেক দিন একেক এলাকার দোকানপাট ও শিল্পকারখানায় ছুটি থাকবে। সেচযন্ত্র চালানো যাবে রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত। তবে ওই সময় কোনো ফিডারে বিশেষ কারণে কোনো দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে পরদিন দিনের বেলায় সেই নির্দিষ্ট ফিডারের গ্রাহকেরা সেচযন্ত্র চালাতে পারবেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর পিডিবির সর্বোচ্চ উৎপাদনের ল্যমাত্রা সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট। আর সর্বোচ্চ চাহিদা হবে সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.