রাজধানীতে চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় বছরজুড়েই সংকট লেগে থাকে। শীত মৌসুমে এ সংকট আরও তীব্র হয়ে ওঠে। শীতে গ্যাসের চাহিদা থাকে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। কিন্তু সরবরাহ থাকে আগের মতোই। শীতকালে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গ্যাসের উপজাত কনডেনসেট জমে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায়। সঞ্চালন লাইন পরিষ্কার করা সম্ভব হলেও বিতরণ লাইন পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। ফলে শীতকালে গ্যাস সরবরাহে স্বাভাবিকতা বজায় রাখা দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়। শীতকালে তিতাস গ্যাস কোম্পানির আওতাধীন এলাকায় এ বছর গ্যাসের চাহিদা ১৯৫ কোটি ঘনফুট। সরবরাহের পরিমাণ ১৫০ কোটি ঘনফুট। এ বিশাল ঘাটতি কিছুতেই পূরণ করা সম্ভব নয়। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় বিতরণ লাইনে কনডেনসেট জমে সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টির ঘটনা। রাজধানীর গ্যাস সংকটের আরেকটি কারণ হলো বিপুলসংখ্যক অবৈধ গ্যাস সংযোগ। এর ফলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে। তীব্র গ্যাস সংকটে রাজধানীর রামপুরা, বনশ্রী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী ও পুরান ঢাকার বেশ কিছু এলাকায় হাহাকার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন থাকায় অসংখ্য পরিবারে রান্নাবান্না শিকেয় উঠেছে। সকালে গ্যাস পাওয়া অসম্ভব হয়ে ওঠে বহু এলাকায়। দুপুর বা বিকালে কিছু গ্যাস পাওয়া গেলেও তা দিয়ে চাহিদা মেটানো কষ্টকর ব্যাপার। রাজধানীর গ্যাস সংকট মোচনে সরবরাহ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এর পাশাাপাশি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগের জন্য তিতাস গ্যাস কোম্পানির দুর্নীতিবাজ কর্মচারীরা অনেকাংশে দায়ী। তাদের যোগসাজশে ঘটে গ্যাস চুরির ঘটনা। এই চৌর্যবৃত্তি বন্ধে অবৈধ সংযোগের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রেখে প্রচলিত আইনে পরিবর্তন আনতে হবে। তিতাস গ্যাসের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কেউ অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে জড়িত এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে চাকরিচ্যুত করাসহ অন্যান্য শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। তিতাসের অসৎ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে তা সরকারের সুনামকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ বিষয়টি মনে রেখেই গ্যাসের অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।