আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফের বেড়েছে এসিড সন্ত্রাস

দেশে আবারও এসিড সন্ত্রাস বেড়েছে। অতিসম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে এসিড নিক্ষেপের ঘটনাই এর প্রমাণ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি তিন দিনে ঘটছে একটি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা। প্রতি মাসে এসিডে ঝলসে যায় ১০ জন নারী। এসিড সারভাইভাল ফাউন্ডেশনের তথ্যে, চলতি বছরের বিগত আট মাসে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে ৪১টি। এতে ৫২ জন ক্ষতিগ্রস্ত হন। অথচ ২০১২ সালে মোট এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে ৭১টি এবং এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯৮ জন। আর এ সংখ্যাই এসিড সন্ত্রাস বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রয়োগ না করা, যত্রতত্র এসিড বিক্রি হওয়া এবং জাতীয় এসিড নিয়ন্ত্রণ কাউন্সিলের নিয়মিত বৈঠক না হওয়ায় এসিড সন্ত্রাস আবারও সংঘটিত হচ্ছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বামীর ছুড়ে দেওয়া এসিডে ঝলসে যায় শার্শার নটাদিয়া গ্রামের এক তরুণীর মুখ। এর আগে একই মাসে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় বখাটে যুবকদের ছোড়া এসিডে আমেনা খাতুন নামে এক স্কুলছাত্রীর মুখ ঝলসে যায়। গত আগস্টে কাপাসিয়ায় দুর্বৃত্তদের ছুড়ে দেওয়া এসিডে পুড়ে যায় এক কলেজছাত্রীর মুখ ও শরীর। সর্বশেষ মাদারীপুরের রাজৈরে দুর্বৃত্তদের এসিডে ঝলসে যায় নাসিমা বেগম নামে এক মা ও তার মেয়ে মিতুর শরীর। আইন বিশেষজ্ঞরা জানান, এসিড নিক্ষেপ, অপরাধ দমন ও এসিডের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণে এবং এসিড অপরাধ দমনে ২০০২ সালের ১৭ মার্চ প্রণীত হয় 'এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২'। আইনে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু সরকারি হিসাব মতে, এসিড সন্ত্রাসের ঘটনায় ২০০২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১১ বছরে মাত্র ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া ১০৮ জনের যাবজ্জীবন ও ১৭০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে। এ সময়ে সারা দেশে মামলা হয়েছে ১ হাজার ৮১২টি। এতে অভিযুক্ত ছিলেন ৪ হাজার ৬৮২ জন। গ্রেফতার হয়েছেন ৫৭৪ জন, যা মাত্র ১২ দশমিক ২৬ শতাংশ। বাকি ৮৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ অভিযুক্ত পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ ১ হাজার ৯২টি মামলায় অভিযোগপত্র এবং ৭১০টিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। ৪৯২টি মামলায় ১ হাজার ৬৪২ জন অভিযুক্ত খালাস পেয়েছেন। সাজা হয়েছে এমন মামলার সংখ্যা মাত্র ১৭২টি। সাজার হার প্রায় ১০ শতাংশ। মোট সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ২৯১ জন। এসিড সারভাইভাল ফাউন্ডেশনের তথ্যে জানা যায়, ২০০০-১১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরে গড়ে এসিড সন্ত্রাসের ২০০ ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় সারভাইভাল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী মুনিরা রহমান বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এমডিজি (সহস াব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনের জন্য বছরে এসিডে নিক্ষেপের ঘটনা ৫০-এ সীমাবদ্ধ রাখার কথা। কিন্তু বাস্তব ঘটনা ভিন্ন। এসিডের যত্রতত্র ব্যবহার রোধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ জানা যাচ্ছে না। এ জন্য সরকারের শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র এসিড বিক্রি বন্ধ করতে এসিড কাউন্সিল কমিটির কাছে বেশ কয়েকবার চিঠি লেখা হলেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.