বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিন পার হয়েছে ব্যাপক সহিংসতায়। সারা দেশে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। রক্তক্ষয়ী হরতালে নিহত হয়েছেন পাঁচজন। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন তিন শতাধিক ব্যক্তি। শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজধানীতে ব্যাপক ককটেল সন্ত্রাস, সংঘর্ষ ও নির্বিচারে যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। জয়পুরহাটে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দুটি ট্রেন। পাবনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হয়েছেন এক জামায়াত কর্মী। যশোরে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে হরতাল সমর্থকরা। পিরোজপুরে হরতাল সমর্থকদের হামলায় নিহত হয়েছেন যুবলীগ কর্মী।
ফরিদপুরের নগরকান্দায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা। এ ছাড়া বগুড়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন। নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজধানী : রাজধানীতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যাত্রাবাড়ীতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ও তেজগাঁও শিল্প এলাকার পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ, গাড়িতে আগুন, ভাঙচুরসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংখ্যক ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। বিশেষ করে গতকাল রাজধানী ছিল ককটেলের নগরী।
মুহুর্মুহু ককটেলের বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। ভোর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪১ পিকেটারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে ১১ জনকে পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর ও আটটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে রাজধানীসহ সারা দেশে সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও দেড় হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ছয় শতাধিক নেতা-কর্মী।
মামলায় আসামি করা হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে।
এদিকে কাকডাকা ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল বের করে হরতাল সমর্থকরা। কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে হরতালকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
ভোরে গাবতলীতে বিআরটিসির ডিপোতে ঢুকে ছয়টি দ্বিতল বাসে অগ্নিসংযোগ করে পিকেটাররা। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
ততক্ষণে আগুনে বাসগুলো সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী কর্মচারীরা জানান, খুব ভোরে অপরিচিত ৫-৭ জন যুবক দেয়াল টপকে ডিপোর মধ্যে ঢুকে। তাদের প্রত্যেকের হাতে পেট্রল ছিল।
ভোর সাড়ে ৪টায় মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় পাবনা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সকাল ৬টার দিকে মিরপুর-২ নম্বর গ্রামীণ ব্যাংক টাওয়ারের কাছে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সাতজনকে আটক করে। প্রায় একই সময়ে সনি সিনেমা হলের সামনে চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
সাড়ে ৬টার দিকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সামনে ছাত্রদল-যুবদলের কর্মীরা ৫-৬টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১৩ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দীন। ভোর ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ী বিবিরবাগিচা এলাকায় ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পিকেটাররা অগ্নিসংযোগ করে।
আগুনে কার্যালয়ের আসবাবপত্র পুড়ে যায়। পরে পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল সোয়া ৮টার দিকে দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে বাপেঙ্রে স্টাফ বাসে (ঢাকা মেট্রো জ ১১ -১৩৬৬) আগুন দিয়েছে পিকেটাররা। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার রসুলপুর পুলিশ ফাঁড়িতে গভীর রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ফাঁড়িতে থাকা কয়েক পুলিশ সদস্যের বিছানাপত্র পুড়ে যায়।
খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নেভানো হয়।
ভোর সাড়ে ৬টার সবুজবাগ থানার বাসাবো এলাকায় র্যাব-৩ এর মেজর আলী আহসানের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে পাঁচটি ককটেলসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলো রূপচান হোসেন, মো. জাকির ওমেদ আলী ও মো. মামুন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খিলগাঁওয়ে ঝটিকা মিছিল বের করে যুবদল। এ সময় মিছিল থেকে পরপর ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
পুরান ঢাকায় অন্তত ১৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে পিকেটাররা। সকাল সোয়া ৮টায় নয়াবাজার মোড়ে এবং সোয়া ১০টায় তাঁতীবাজারে দুটি, বেলা ১২টায় বংশাল মোড়ে একটি, সাড়ে ১২টায় সুরিটোলায় একটি, পৌনে ১টায় বাবুবাজার ব্রিজের কাছে পরপর সাতটি ককটেল বিস্ফোরিত হলে আশপাশের এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করে। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। হরতালে দু-একটি রিকশা, ভ্যান ও সিএনজি ছাড়া তেমন কোনো গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। অধিকাংশ দোকানপাট ছিল বন্ধ।
বংশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হাসান বলেন, দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন অলিগলি থেকে চোরাগোপ্তাভাবে হঠাৎ করে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। তাই কাউকে আটক করা যায়নি। বেলা পৌনে ২টায় মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের (সিএমএম) সংরক্ষিত নথি শাখায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর দুপুর ২টায় পাটুয়াটুলী ও সদরঘাট এলাকায় দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। ধানমন্ডিতে ভোরে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে হরতাল সমর্থকরা।
এ সময় সেখানে ৭-৮টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মগবাজারে সকাল ৭টায় ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। এ সময় সেখানে পরপর ২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুলিশের ধাওয়ায় মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় রমনা থানা এলাকায়ও বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।
বেলা ১টার দিকে শান্তিনগর মোড়ে র্যাব-পুলিশের সামনেই দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা।
বেলা ২টার দিকে কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে সুমন নামের এক পিকেটারের শরীর ঝলসে গেছে। এ ছাড়া টিকাটুলী র্যাব-৩ এর কার্যালয়ের সামনেই দুর্বৃত্তরা পরপর ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরের সামনে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাত সোয়া ৭টার দিকে বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে পরপর আটটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা।
রাত ৮টার দিকে লালবাগ শেখ সাহেববাজারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আখতার হোসেনের বাসার সামনে হরতালের স্লোগান দিতে দিতে একদল দুর্বৃত্ত কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
হরতালবিরোধী মোটর শোভাযাত্রা: হরতাল প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ-যুবলীগ পুলিশের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বিশাল আকারের এক মোটর শোভাযাত্রা বের করে। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মোটর শোভাযাত্রাটি যাত্রা শুরু করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দিকে যায়। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মইনুল হোসেন নিখিল। শোভাযাত্রা থেকে হরতালবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
হরতাল সমর্থকদের সন্ধ্যার পরে বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা ভাঙচুর : গতকাল সন্ধ্যার পর হরতাল সমর্থকরা বোমা হামলার তাণ্ডবে মেতে ওঠে। এ সময় তারা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা ভাঙচুর করেছে। বোমা হামলা চালানো হয় উত্তরা, আদাবর, শাহজাহানপুর, পল্টন, লক্ষ্মীবাজার, মালিটোলা, তাঁতীবাজার, বংশাল, গুলশান, নিউমার্কেট, পুলিশ সদর দফতর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যাত্রাবাড়ী, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, রাজধানীর আদাবরে আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল জলিলের আদাবরের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করেছে হরতাল সমর্থকরা।
শাহজাহানপুর আমতলী এলাকায় একটি সিএনজি অটোরিকশায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে সিএনজি ড্রাইভার আইয়ুব আলী (৪৫) নামে একজন অগি্নদগ্ধ হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
সিপিবি অফিস লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ : রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) অফিস লক্ষ্য করে কয়েক দফা ককটেল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সন্ধ্যায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
দুর্বৃত্তরা হামলা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ।
ব্যারিস্টার তুরিনের বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের উত্তরার বাসার সামনে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় তুরিন আফরোজ বাসাতেই ছিলেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উত্তরা থানার পুলিশ।
এদিকে আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, বিএনপির ডাকা হরতালের সমর্থনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এ সময় তাদের ধাওয়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রায় ছয় রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল। গতকাল সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটক সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে গেলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আহমেদ সজল ও সকালের খবরের খালেদুন রাতুলের ওপর চড়াও হন আশুলিয়া থানার এসআই রাকিব।
পাবনা : হরতাল চলাকালে নিহত হয়েছেন এক জামায়াত কর্মী। দুপুর ১২টার দিকে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পাবনা-নাটোর মহাসড়কের মুলাডুলিতে পিকেটিং করছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন মুন্নাসুর রহমান মুনাস (২৮) নামের এক জামায়াত কর্মী।
এ সময় শিবিরের পাঁচ কর্মী গুলিবিদ্ধসহ আহত হন ৪০ জন। গুলিবিদ্ধ পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে ঈশ্বরদী উপজেলা শিবির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন (২৫) এবং সংগঠনের কর্মী ইসলাম হোসেন (২৩) ও সোহাগকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ১৮-দলীয় জোটের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে পিকেটাররা মহাসড়ক অবরোধ করে ২২টি যানবাহনে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে।
বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবিরকর্মীরা আওয়ামী লীগের স্থানীয় অফিসসহ বেশকয়েকটি মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া সকাল ৯টার দিকে বেড়া সিঅ্যান্ডবি মোড়ে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধের সময় বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পিকেটাররা। এ সময় পুলিশ ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
যশোর : অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় হরতাল সমর্থকদের পিটুনিতে নিহত হয়েছেন নওয়াপাড়া পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন শিমুল (৩৮)। এ সময় গুরুতর আহত হন তার তিন সহযোগী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগ নেতা শিমুল তার লোকজন নিয়ে মাইক্রোবাসে নওয়াপাড়া শহরে হরতালবিরোধী কর্মসূচি পালন করছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় ফেরিঘাটের কাছে তার মাইক্রোবাসটি হরতাল সমর্থকদের মিছিলের সামনে পড়ে। এ সময় হরতাল সমর্থকরা মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দিলে শিমুল দৌড়ে পাশের পুলিশ ফাঁড়ির পুরনো ভবনে আশ্রয় নেন। সেখানেই পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। ঘটনার সময় ফাঁড়িতে কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন না।
তার অন্য সঙ্গীরা ভৈরব নদের দিকে দৌড় দিলে তাদেরও ধরে পিটুনি দেয় হরতাল সমর্থকরা। পরে পুলিশ শিমুলের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গুরুতর আহত আরমান মোল্লা, লিমন হোসেন ও এনামুল ইসলামকে উদ্ধার করে প্রথমে অভয়নগর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবদুস সালেক বলেন, নিহত শিমুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যশোরের এএসপি (হেড কোয়ার্টার) রেশমা শারমিন জানান, যুবলীগ নেতা শিমুল হত্যায় জড়িত সন্দেহে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
নিহত যুবলীগ নেতা শিমুলের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাসহ অসংখ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
পিরোজপুর : জিয়ানগরে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে স্বপন শীল নামের এক যুবলীগ কর্মীকে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মী বাপ্পি মোল্লা ও তার বাবা আলাউদ্দিন মোল্লাকে কুপিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। ভোর রাত ৪টার দিকে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা জিয়ানগর উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের চর বলেশ্বর এলাকায় যুবলীগ কর্মী স্বপন শীল ও দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
হামলাকারীরা বালিপাড়া বাজারে আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়ে অগি্নসংযোগ করে। গুরুতর আহত তিনজনকে খুলনা হাসপাতালে নেওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে যুবলীগ কর্মী স্বপন মারা যান। এদিকে সকাল থেকেই শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হরতাল সমর্থকরা সশস্ত্র অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে সরকারদলীয় সমর্থকরা রাস্তায় নামলে উভয় পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় পিকেটারদের হামলায় ১৫-২০ জন আহত হন।
ফরিদপুর : হরতালের প্রথম দিন পুলিশের গুলিতে নগরকান্দা উপজেলায় নিহত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা। অন্যদিকে ফরিদপুরে যুবদলের মিছিলে গুলি চালিয়েছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। আহতদের শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টার দিকে নগরকান্দা উপজেলায় বিএনপির মিছিল বের করে।
পুলিশ এতে বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশ বিএনপির মিছিলে গুলি চালায়। গুলিতে নগরকান্দা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মারুফ হোসেন নিহত হন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন আরও দুই বিএনপি কর্মী। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত হওয়ার পর নগরকান্দায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় ফরিদপুর, ভাঙ্গা, বোয়ালমারী, মুকসেদপুর, সালথা থানা থেকে বেশ কয়েক প্লাটুন পুলিশ ও র্যাব সদস্য আনা হয়।
জয়পুরহাট : ১৮ দলের ডাকা ৬০ ঘণ্টা হরতালের ১ম দিনে জয়পুরহাট রেল স্টেশনে এবং পুরনোপৈল রেলগেইট এলাকায় সৈয়দপুর থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর রূপসা এক্সপ্রেস ও খুলনা মেইলে অগি্নসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে পিকেটাররা। সকাল সাড়ে ১০টায় রেলগুমটি থেকে স্টেশন পর্যন্ত চলন্ত ট্রেনে তাণ্ডব চালায় পিকেটাররা।
এতে আন্তঃনগর ট্রেনের ৯টি বগির জানালা দরজা ভাঙচুর করে একটি বগিতে আগুন দেয় তারা। এ সময় পিকেটারদের ছোঁড়া পাথরে ৩০ যাত্রী আহত হয়।
বিভিন্ন স্থান থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- রংপুর : বিভিন্ন স্থানে হরতাল সমর্থকরা ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বেশ কয়েকটি যানবাহনে। বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। সকাল ও দুপুরে নগরীতে পুলিশ বেষ্টনীতে মিছিল করে বিএনপি।
মিঠাপুকুরে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। রাজশাহী : দিনভর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শত শত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে হরতালকারীরা। সকালে সাহেববাজার কালীমন্দিরে ফুলের টব, ব্যানারসহ জিনিসপত্র ভাঙচুর করে হরতালকারীরা। তারা নব কুমারের মিষ্টির দোকানসহ পাঁচটি দোকান ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। রাবির উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিন বলেন, সকালে দফতরে যাওয়ার সময় বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল আমাদের দাফতরিক কাজ করতে নিষেধ করে।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অফিস করিনি। চট্টগ্রাম : ওয়াসার মোড়ে পিকেটাররা চারটি সিএনজি চালিত ট্যাঙ্ িভাঙচুর করে। এ সময় সিএনজি উল্টে দুই মহিলা আহত হন। নগরীর আমতলা তনিপুলে ট্রাক ভাঙচুর এবং ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরায় পিকআপ ভ্যান ও বাসে অগি্নসংযোগ করে পিকেটাররা। জামায়াত-শিবির সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।
সকালে হালিশহর নয়াবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন নুসরাত নাহরিন অন্তরা নামের এক শিক্ষিকা। দুপুরে সীতাকুণ্ডে মোসলেম উদ্দিন নামে এক যুবলীগ নেতাকে কোপানোর ঘটনায় শিবিরের সঙ্গে যুবলীগের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। পিকেটিংকালে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। সকালে বাকলিয়া থেকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন ও মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে মেহেদীবাগ থেকে মিছিল বের হয়।
সিলেট : ক্লাস চলায় উপশহরের বি ব্লকের শাহজালাল উপশহর উচ্চ বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বরিশাল : নগরীর নাজিরের পোল থেকে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এমপির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে ছাত্রদল মোটরসাইকেল মহড়া নিয়ে হাসপাতাল রোড, নতুন বাজার এবং মরকখোলা পোল এলাকায় তিনটি অটোরিকশা ও একটি বঙ্ভ্যান ভাঙচুর করে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় ছাত্রদলের মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের বহিরাগত (বিএম কলেজ) নেতা-কর্মীরা। খুলনা : ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে হরতাল হয়েছে।
দুপুরে পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের বাঁকা আরাজী ভবানীপুর জামে মসজিদের অদূরে হরতাল সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করে। এ সময় পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে গুলি চালায়। খবর পেয়ে গ্রামবাসী এগিয়ে এলে পুলিশের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। এতে স্কুলছাত্রী সুমাইয়া খাতুন (১৪), গৃহবধূ শুকজান বেগম (৫০) ও খালেদা (৪০) গুলিবিদ্ধ এবং আল মামুন (১২), লিটন সানা (৩০), মাসুম গাজী (২৫), আসাদুল গাজী (২৫) ও এমদাদুল হক (২০) আহত হন। মহানগরীতে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ও ৬টি ইজিবাইক ভাঙচুর করা হয়।
এ সময় দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ : সকাল পৌনে ৬টায় শহরের মণ্ডলপাড়া ও নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে নগর বিএনপি ও মহানগর যুবদলের মিছিল বের হয়। এ ছাড়া সকাল ৬টায় মিশনপাড়ায় জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীবের অনুসারীরা, বেলা আড়াইটায় আড়াইহাজার বাজার এলাকায় বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও মহিলা দলনেত্রী পারভীন আক্তারের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। সকালে মিশনপাড়া সলিমুল্লাহ সড়কে টায়ারে আগুন দেয় পিকেটাররা। ১০টায় শহরের দেওভোগ এলাকায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের অনুসারীরা টায়ারে আগুন দেয় ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান সিটি মেয়র আইভীর দেওভোগের বাসার দিকে যাওয়ার সময় ভাঙচুর করা হয়। রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : দুপুরে কাঞ্চন পৌর বাজারে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সকালে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের ম্যাঙ্ গার্মেন্টে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। উপজেলার খাদুনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়।
বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মহাসড়কে মিছিল শেষে ফেরার পথে নোয়াপাড়া গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে ও দোকানে লুটপাট চালায়। রুচি ফাস্টফুড নামক একটি দোকানের মালিক মোশাররফকে মারধর এবং জাহাঙ্গীর টেঙ্টাইলে ভাঙচুর করে। পরে দুপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তারাব বিশ্বরোডে যুবলীগ কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৮ রাউন্ড টিয়ার শেল ও গুলি ছোড়ে।
সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, এতে বোঝা যায় দেশে বাকশালী শাসন চলছে। নরসিংদী : সড়ক-মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর, দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিকুল, ছাত্রদলের ফয়সাল, লিটন ও যুবদল নেতা ওমর ফারুকসহ ১০ জন আহত হয়।
বাজির মোড়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। পটুয়াখালী : কলাপাড়া ও বাউফলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ৭০ জন আহত হয়েছে। সাতক্ষীরা : আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা ও তালা উপজেলার সুজনশাহ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের এস আই হাফিজ, এ এস আই হুমায়নসহ ৪ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। আশুলিয়া (ঢাকা) : টঙ্গী-বাইপাইল মহাসড়কের সরকার মার্কেট এলাকায় বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় ১০ জন আহত হয়। সাভার-আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পৃথক স্থানে সাতটি গাড়িতে আগুন দেয় পিকেটাররা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হরতালকারীদের সংঘর্ষ ও অগি্নসংযোগের ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে।
গাজীপুর : চান্দনা চৌরাস্তায় হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সকালে সিটি মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের নেতৃত্বে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মিছিল বের হয়।
ভোরে ঢাকা-বাইপাস সড়কের পুবাইলের চামুড্যা এলাকায় একটি পণ্যবাহী ট্রাকে আগুন দেয় হরতাল সমর্থকরা। নাটোর : বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মুক্তির দাবিতে জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল এবং ৬০ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিনে বড়াইগ্রাম উপজেলার আহমদপুরে একটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ এবং শহরের হরিশপুর এলাকায় কমপক্ষে ১০টি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়াও মাগুরা, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়ি, নীলফামারী, রাঙামাটি, সুনামগঞ্জ, বেনাপোল, গোপালগঞ্জ, লালমনিরহাট, মাদারীপুর, কক্সবাজার, ঝালকাঠি, কেরানীগঞ্জ, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে হরতাল পালিত হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।