আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভুয়া ওয়ারেন্ট ও সার্টিফিকেট

আইনের শাসন বা সুশাসন আমাদের এই দেশে নিকট বা দূরঅতীতেও যেমন ছিল না- এখনো নেই। মাৎস্য ন্যায়ের ঐতিহ্যবাহী এ ভূখণ্ডে সব পাল্টালেও পাল্টায়নি দুর্বৃত্তদের দাপট। আধুনিক এই যুগেও তাই দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব নানা ক্ষেত্রে অনুভূত। হতদরিদ্র দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার হাতছানি ১৬ কোটি মানুষকে আন্দোলিত করলেও সুশাসনের ক্ষেত্রে কোনো সুখবর নেই। প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকার কারণে বাড়ছে প্রতারকদের দৌরাত্দ্য। প্রতিপক্ষকে জব্দ করার জন্য ভুয়া ওয়ারেন্ট ও জাল মেডিকেল সার্টিফিকেটকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পড়ে শত শত মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে গ্রেফতারির ভয়ে। এমনকি কোনো দোষ না করেও জেল খাটার ঘটনাও কম নয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দায়েরকৃত মামলার বরাত দেওয়া হয়েছে ছিনতাই ও রক্তাক্ত মারধরের অভিযোগ এনে ওই থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় ১১ নভেম্বর। মারধরের প্রমাণ হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক চন্দা চমার স্বাক্ষরিত মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই নামে ঢাকা মেডিকেলে কোনো চিকিৎসকই নেই। অথচ মামলার শিকার বিবাদীরা এখন পুলিশের ফেরার। সম্প্রতি কাফরুল থানার পুলিশ বরিশাল জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৪ এর গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয় দক্ষিণ ইব্রাহিমপুরের একটি বাসায়। তারা আসামির বৃদ্ধ পিতার কাছে তার চার ছেলের খোঁজ জানতে চায়। তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করে। এক ছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করেও নিয়ে যায়। বাকি তিন ছেলে গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়। পরে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয় বরিশালে এই নামের কোনো ট্রাইব্যুনালই নেই। দেশের বিভিন্ন থানায় ভুয়া ডাক্তারি সার্টিফিকেটের বদৌলতে একের পর এক মামলা হচ্ছে। ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানায় গ্রেফতার করা হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেল খাটার ঘটনাও ঘটছে। নামের মিল থাকায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বদলে আরেকজনকে গ্রেফতার করে সাজা ভোগে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটেছে এসব সম্ভবের দেশে। থানা পুলিশের যোগসাজশেই অপরাধী চক্রের সদস্যরা একের পর এক অপরাধ করে চললেও কোনো প্রতিকার নেই। আইনি ব্যবস্থা, মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ব্যাপারে কার্যত নির্বিকার। এর চেয়ে লজ্জার আর কিইবা থাকতে পারে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.