আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলন

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আজ সংবাদ সম্মেলন করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ছাড়াও নির্বাচন বর্জনে ১৮ দলের পক্ষ থেকে যুক্তি তুলে ধরবেন তিনি। একইভাবে নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন বক্তব্যের জবাবও দেওয়া হবে। নির্বাচনের আগমুহূর্তে বেগম জিয়ার এ সংবাদ সম্মেলনকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন রাজনীতিসংশ্লিষ্টরা।

৮৩ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টা পরই সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। আজ বিকাল ৫টায় পঞ্চম দফা অবরোধ কর্মসূচি শেষ হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চলমান সংকট ও সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর ১৮-দলীয় জোটের নেতা বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর উদ্দেশে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন। দলীয় নেতারা বলছেন, ভোট কেন্দ্রে না যেতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানানোর যুক্তিও তুলে ধরবেন বেগম জিয়া। তার বক্তব্যে দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য থাকবে। পাশাপাশি নির্বাচনকে 'অসাংবিধানিক ও অগ্রহণযোগ্য' আখ্যা দিয়ে ভোট কেন্দ্রভিত্তিক প্রতিরোধের 'দুর্গ' গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানানো হবে। এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারি দলের নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্যেরও জবাব দেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি হিসেবে অবরোধের পাশাপাশি অসহযোগ, গণকারফিউ ও গণঅবস্থান কর্মসূচি থাকতে পারে। এর আগে ২১ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। সরকার তাদের দাবি না মেনে 'সর্বদলীয়' সরকার গঠন করে। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এর পর থেকেই নির্বাচনের তফসিল স্থগিত ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। দমননীতি পরিহার করে সমঝোতায় আসুন : দমননীতি পরিহার করে সরকারকে সমঝোতায় আসার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি মন্তব্য করেন, যৌথ বাহিনী অভিযানের নামে সাতক্ষীরাকে 'মৃত্যু উপত্যকার ধ্বংসস্তূপে' পরিণত করেছে। সারা দেশে পুলিশ, যৌথ বাহিনী ও সরকারদলীয় বাহিনী সমন্বিতভাবে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে হত্যা করছে, গ্রেপ্তার-নির্যাতন চালাচ্ছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী আজ কারাগারে। যার মধ্যে বৃদ্ধা, নারী ও শিশুরাও রয়েছে। সাতক্ষীরা আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেখে মনে হবে, এ যেন ভূমিকম্পে ভয়াবহ ধ্বংসস্তূপের এক জনপদ। জোর করে ক্ষমতা অাঁকড়ে রাখা ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণের ওপর যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে তা সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। জনগণ চায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন। সরকারকে বলব, জনগণের ইচ্ছা পূরণে সমঝোতায় আসুন।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গতকাল বিকালে ঘোষিত ৮৩ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিনের পরিস্থিতি জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার ভোর ৬টা থেকে ১৮ দলের ডাকা পঞ্চম দফা অবরোধ কর্মসূচি শেষ হচ্ছে আজ বিকাল ৫টায়। বিএনপির এই নেতা জানান, অবরোধের তৃতীয় দিনে সারা দেশে একজন নিহত, ৫২৭ জন আহত, নিখোঁজ তিনজন এবং ৩৭৫ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ২ হাজার ৭০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাজধানীর নিকুঞ্জ থেকে শেখ রবিউল আলম নামে এক বিএনপি নেতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেলেও তার কোনো হদিস মিলছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

যৌথ বাহিনীর অভিযানে সাতক্ষীরার পরিস্থিতি তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সাতক্ষীরায় এখন এখানে-ওখানে জ্বলছে আগুন। তাদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে গোটা জেলার পরিবেশ। আশ্রয় ও গৃহহীন হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। কেবল তাই নয়, যৌথ বাহিনীকে দেখলেই সেখানকার মানুষ পালাচ্ছে। রাত শুরু হলে আতঙ্কে বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে বাড়ির পুরুষ ও যুবক ছেলেরা।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী, মুকন্দুপর, ফরিদপুর, শ্রীধরকাঠি, হোগলা ও কুশলিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর ও ভদ্রখালী গ্রামে যৌথ বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্ররা কর্মীরা জগদীশ, তাপস, বিশ্বনাথ, ইন্দ্রজিৎসহ পাঁচজন হিন্দু সম্প্রদায়ের দোকানপাট জ্বালিয়ে দিয়েছে। কেবল তাই নয়, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে ১৮-দলীয় জোটের ১২টি বসতবাড়ি ও ২৭টি দোকান এবং কুশলিয়া ইউনিয়নের ১৯টি বাড়িঘর ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগ, লুটপাট করা হয়েছে। অনেকের বাড়িতে অগি্নসংযোগে মানুষজন অগি্নদগ্ধ হয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, গতকাল (রবিবার) মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রার্র্থীদের সম্পদের হলফনামা সরিয়ে ফেলতে বলেছে, যাতে জনগণ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিশাল সম্পদের হিসাব না দেখতে পারে। আমরা এখন দেখব, ক্ষমতাসীন দলের এই অন্যায় আবদার নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করে কি না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব প্রার্থীদের হলফনামা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনগণকে জানানো। তথ্য অধিকার আইনে এটা গণমাধ্যম প্রকাশ করতে পারে। এরই মধ্যে কিছু গণমাধ্যমে তা প্রকাশ পাচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.