দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ নির্বাচনের প্রার্থীদের সম্পর্কে যে তথ্য তুলে ধরেছে তাতে হতাশ হওয়ার মতো অনেক উপাদানই বিদ্যমান। সুজনের দেওয়া তথ্য মতে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৫৪০ প্রার্থীর মধ্যে ৫০ জনই এসএসসি পাসও নন। যারা দেশের মানুষের জন্য আইন প্রণয়ন করবেন বলে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন তাদের একাংশের বিদ্যার ওই দৌড় চূড়ান্তভাবেই হতাশার। প্রার্থীদের মধ্যে ৫৯ জনের অর্থাৎ ১১ শতাংশের বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২২ জনও রয়েছেন। রাজনীতি রাজনীতিকদের জন্য শোভনীয় হলেও দশম সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের ৫২ শতাংশই ব্যবসায়ী। তাদের ৮১ জন ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। স্মর্তব্য, সুজন প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, প্রার্থীদের মধ্যে ৩৮২ জন অর্থাৎ ৭০ দশমিক ৭৪ শতাংশ স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর পাস। এসএসসি পাসের সংখ্যা ৪৩ এবং এসএসসি পাসও করেননি এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৫০। প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী ২৭৭ জন অর্থাৎ ৫১ দশমিক ২৯ শতাংশ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের মালিক। এদের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১১৫ জনও রয়েছেন। সংসদ নির্বাচনে টাকাওয়ালাদের প্রাধান্য এবং এসএসসি পাসও করেননি এমন প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নানা কারণে উদ্বেগজনক। ব্যবসায়ী এমনকি কালো টাকার মালিকরা রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে যেভাবে টাকার জোরে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছেন তাতে জাতীয় সংসদ তার বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ক্রমান্বয়ে ব্যবসায়ীদের ক্লাবে পরিণত হচ্ছে। দেশের রাজনীতিকে বিপথগামী করার ক্ষেত্রে এই বিচ্যুতি অবদান রাখছে। রাজনীতি থেকে লোপ পাচ্ছে দেশ ও জনগণের সেবার মনোভাব। আমাদের মতে, রাজনীতিতে কালো টাকার মালিক, সন্ত্রাসী ও মাস্তানদের আধিপত্য দূর করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে যেমন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, তেমন নির্বাচনী বিধিতেও পরিবর্তন আনা দরকার। সংসদ ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অতীতে নির্বাচিত হননি এমন প্রার্থীদের নূ্যনতম যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণের কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও নূ্যনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া দরকার।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।