অবশেষে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ালেন দেশের উচ্চ আদালত। সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন, স্বাধীনতা, সম্পত্তি ও মর্যাদা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ। বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সংবাদপত্রে প্রকাশিত তিনটি প্রতিবেদন আমলে নিয়ে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শকের ওপর রুল জারি করেছেন। এই রুলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে আদালতকে সাত দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। দশম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে চলছে। সাম্প্রদায়িকতাবাদী অপশক্তির দ্বারা সংখ্যালঘুদের প্রাণহানি ও সম্ভ্রম লুটের ঘটনা ঘটেছে। অগি্নসংযোগ ও লুটপাটের মতো অপরাধও সংঘটিত করেছে দুর্বৃত্তরা। উচ্চ আদালতের আদেশে বলা হয়- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাগরিকদের, বিশেষত সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা রক্ষায় মারাত্দকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। রুলে প্রয়োজনীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, ঢাকা, নাটোর, যশোর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, টাঙ্গাইল, বগুড়া, পিরোজপুর ও চাঁদপুরের জেলা প্রশাসককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সভ্য সমাজে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা একটি অকল্পনীয় বিষয়। নিজেদের সভ্য মানুষ বলে দাবি করলেও বাস্তবের সঙ্গে পার্থক্য থাকায় আমাদের সমাজে সাম্প্রদায়িকতার বিষ নিঃশ্বাস প্রায়শ অনুভূত হচ্ছে। কলঙ্কিত হচ্ছে দেশ ও জাতির ভাবমূর্তি। আশার কথা, এই লজ্জা দেশের উচ্চ আদালতকেও আকর্ষিত করেছে, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর নিরাপত্তা রক্ষায় আদালতের রুল তারই প্রমাণ। আমরা আশা করব, এ ঘটনা সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও দায়িত্বশীল হতে সাহায্য করবে এবং নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা তথা দুর্বৃত্ত দমনে শক্ত পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।