ভারতের বিভিন্ন শেল্টার হোমসে বন্দী ৭২ বাংলাদেশি শিশুকে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারকে এ আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন। ভারতে বন্দী এসব শিশুকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না আদালত তা জানতে চেয়েছেন। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের তিন সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে জবাব দিতে বলা হয়েছে। স্মর্তব্য, বাংলাদেশ প্রতিদিনে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয় 'ফিরতে চায় ভারতে বন্দী ৭২ শিশু' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন। জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংবাদটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. আসাদ উল্যা ও মো. জে আর খান রবিন। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, গত দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময় পশ্চিমবঙ্গে পাচার হয়ে যাওয়া ৭২ ছেলে ও মেয়ে শিশু বিএসএফ ও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে তাদের ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা জেলায় শেল্টার হোমসগুলোতে পাঠানো হয়। সেখানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই শিশুদের বেশির ভাগই ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নাটোর, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। দালালরা এ শিশুদের ভারতে পাচারের সময় সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের উদ্ধার করে। এই হতভাগ্য শিশুরা এখন দেশে ফিরে আসতে চায়। তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছে পশ্চিমবঙ্গের একটি উন্নয়ন সংস্থা স্পার চাইল্ড লাইন। সংবাদপত্রে জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো সংবাদ প্রকাশ পেলে সরকারের উচিত ত্বরিত সে দিকে নজর দেওয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি আমাদের কর্তাব্যক্তিরা এ ক্ষেত্রে 'কানে দিয়েছি তুলো আর পিঠে বেঁধেছি কুলো' নীতি গ্রহণ করায় পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও কোনো কাজ হয় না। তবে এক্ষেত্রে আশাজাগানিয়া হলো বাংলাদেশের উচ্চ আদালত জনস্বার্থ ও মানবাধিকার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তারা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারকে নির্দেশনা দিয়ে ন্যায্যতার প্রতি তাদের আগ্রহকে যেমন তুলে ধরছেন তেমন এসব ব্যাপারে প্রশাসনের যে সচেতন হওয়া উচিত সে তাগিদ সৃষ্টি করছেন। আমরা আদালতের এ ভূমিকাকে প্রশংসা করতে চাই এবং বিশ্বাস করি, আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত ভূমিকা সরকারকে তাদের দায়বোধ সম্পর্কে সচেতন করে তুলবে। একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে মানবাধিকার ও ন্যায্যতার পক্ষে
ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।