২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার ঘটনা কারও অজানা নয়। বিএসএফের গুলিতে মারা যাওয়া ফেলানীর দেহ কাঁটাতারের বেড়ার ওপর কয়েক ঘণ্টা ঝুলে থাকে। ঝুলে থাকা দেহের ছবি সে সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে ছাপা হলে দেশ-বিদেশে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এর তীব্র সমালোচনা করে। ফেলানীর সেই ছবি দেখে শিউরে উঠেছিল অসংখ্য মানুষ। সে ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বাংলাদেশ সরকারও। এরপর বিভিন্ন সময় নানা সংগঠনের তরফে সে নির্মম ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়। কিন্তু এবারের প্রতিবাদ একটু ভিন্নধর্মী। ফেলানী হত্যার প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার প্রাঙ্গণকে। সীমান্তে প্রহরার নামে বিএসএফের সীমান্ত-হত্যা বন্ধ করা, ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার ও ফৌজদারি আদালতে ফেলানীর হত্যার বিচার দাবিতে সরব হলো পশ্চিমবঙ্গের 'লিটল ম্যাগাজিন সমন্বয় মঞ্চ'।
বইমেলার লিটল ম্যাগাজিনের প্যাভিলিয়নের মধ্যে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে ঢাউস পোস্টার। সেখানেই জ্বলজ্বল করছে বিএসএফের গুলিতে মারা যাওয়া ফেলানীর দেহ কাঁটাতারের বেড়ার ওপর ঝুলে থাকার নির্মম চিত্র। এরই নিচে চলছে ফেলানী হত্যার সুবিচার চেয়ে একটি স্বাক্ষর অভিযান। বইমেলা শেষ হওয়া অবধি এ স্বাক্ষর অভিযান চলবে। বইমেলা শেষে সেই স্বাক্ষরযুক্ত স্মারকলিপিটি তুলে দেওয়া হবে বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতরে। ফেলানীকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যাও প্রকাশ করেছে 'তবু বাংলার মুখ' নামের একটি লিটল ম্যাগাজিন। ম্যগাজিনটিতে তিন বছর আগেকার ওই বাংলাদেশি কিশোরীর হত্যার বিস্তারিত কাহিনীও তুলে ধরা হয়েছে।
ফেলানী হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে লিটল ম্যাগাজিন সমন্বয় মঞ্চের প্রধান উদ্যোক্তা তথা 'তবু বাংলার মুখ' সম্পাদক অসিত রায় বলেন, 'সেদিনের ঘটনায় ভেতরে ভেতরে গুমরে উঠেছিলাম।'
ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানকে নির্দোষ সাব্যস্ত করার বিষয়টি নিয়েও সরব হন তিনি। তার বক্তব্য, ফেলানী যদি কোনো অপরাধ করে থাকত তাহলে তাকে আটক করে বিএসএফ নিজেদের আইন ও ১৯৭৪ সালের সীমান্ত-চুক্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু একজন কিশোরীর জীবন কেড়ে নেওয়া হলো কেন!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।