পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তনের হিসেব চেয়েও দিলি্লতে জোটের পথ খোলা রাখলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। গতকাল কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের জনসমাবেশ থেকে মোদী বলেন, পরিবর্তনের লক্ষ্যে আপনারা এ রাজ্যে মমতাকে ক্ষমতায় এনেছেন, মমতার নেতৃত্বে এখানে উন্নয়ন চলছে। গোটা ভারতের জন্য আমাকে ভোট দিন, আমি সেখানে উন্নয়ন করব। মোদীর মতে, নয়াদিলি্লতে বিজেপিকে ভোট দিলে আপনাদের তিনগুণ লাভ হবে। এক দিনের পশ্চিমবঙ্গে মমতার নেতৃত্বে উন্নয়ন, দিলি্লতে আমার নেতৃত্বে উন্নয়ন আর সবার মাথার উপরে রয়েছে প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিনিও আপনাদেরই বাংলার মানুষ'। বাংলার সবকটি আসনেই বিজেপিকে জেতানোর আহ্বান জানিয়ে মোদী বলেন, বাংলার জীবন বদলানোর সংকল্প নিয়ে আমি এখানে এসেছি। আমাকে ভোট দিন, তারপর দেখুন বাংলার জন্য কী করি। বাংলার যুবকদের ভাগ্য পাল্টাতে ভোট দিন। বিজেপির ওপর ভরসা রাখুন, এ রাজ্যের যুবকদের ভাগ্য পাল্টে দেব। দীর্ঘ ৩৫ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যে পরিবর্তন এনেছে তার জন্য রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে রাজ্যে যে পরিবর্তন এসেছে তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলেন মোদী।
তিনি বলেন, অনেক আশা নিয়ে এ রাজ্যে পরিবর্তন এনেছেন, এবার হিসাব চাওয়ার পালা। বাংলার মানুষ যে পরিবর্তন এনেছেন, এবার রাজ্য সরকারের কাছে হিসাব চান, রাজ্য সরকারকে জিজ্ঞাসা করুন কী কাজ হচ্ছে।
এদিন ব্রিগেডের সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে সুর কিছুটা নরম করলেও বামেদের আক্রমণ করতে ছাড়েননি মোদী। কটাক্ষ করলেন বামেদের উদ্যোগে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার চেষ্টাকেও। মোদী বলেন, 'দেশের উন্নতি করতে গেলে বামেদের সরান। তৃতীয় ফ্রন্ট যেখানে আছে সেখানেই অনুন্নয়ন হয়েছে। পূর্ব ভারতে তৃতীয় ফ্রন্টে রাজত্বে তাই পূর্ব ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে অথচ পশ্চিম ভারত এগিয়ে যাচ্ছে'। তৃতীয় ফ্রন্ট দেশকে তৃতীয় সারিতে নিয়ে যাবে বলেও মোদী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'সংখ্যালঘু উন্নয়ন তৃতীয় ফ্রন্টের লক্ষ্য নয়, কমিউনিস্টরা মুখে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। ভোট এলেই এরা এ কথা বলেন। সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করেন তারা'।
এদিন কংগ্রেসের রাজতন্ত্র নিয়েও আক্রমণ করেন মোদী। গান্ধী পরিবারের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে মোদী বলেন, 'ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর সে সময় দলের সবচেয়ে বলিষ্ঠ নেতা হিসেবে প্রণব মুখোপাধ্যায় থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়নি, এমনকি রাজীব গান্ধী তাকে তার মন্ত্রিসভাতেও স্থান দেননি। পরে ২০০৪ সালেও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ থাকা সত্ত্বেও তার জায়গায় মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী করা হলো। কংগ্রেসের এই আচরণ কোনোদিনই ভোলা যাবে না'।
এদিনের সভায় মোদী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিং, বরুন গান্ধী, শাহনওয়াজ হুসেন, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী-সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী, ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা, পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি রাহুল সিনহা, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তপন সিকদার, তথাগত রায়, জাদুকর পি সি সরকারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিনের ব্রিগেড সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল বেশ জোরালো।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।