আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণপরিবহনে নৈরাজ্য

রাজধানীর গণপরিবহনে অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাক্ষমতাধর সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশের পরিবহন খাত। রাজনীতির কুশীলবরা পরিবহন খাতের মালিক হওয়ায় তারা ক্রমেই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ছেন। রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জামায়াতের বিরোধ থাকলেও পরিবহন ব্যবসায় কায়েমি স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে তারা সবাই একাট্টা। ফলে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে প্রায় প্রতিটি রুটের বাসযাত্রীদের কাছ থেকে। ট্যাঙ্কি্যাবের সার্ভিস এখন রাজধানীতে উধাও বললেই চলে। অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্দ্য তো সব সীমা ছাড়াতে চলেছে। মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অন্তত তিনগুণ ভাড়া দাবি করে তারা। গত কয়েক বছরে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি নতুন রুট এবং কিছু নতুন বাস চালু হলেও রাস্তা থেকে উঠে গেছে অনেক গাড়ি। প্রায় দেড় কোটি মানুষের এই নগরীতে এখন অনেক রুটেই পর্যাপ্ত পাবলিক বাস নেই। সরকারি সড়ক পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি গত পাঁচ বছরে প্রায় এক হাজার বাস কিনলেও নিম্নমানের শত শত বাস ইতোমধ্যে গ্যারেজবন্দী হয়ে পড়েছে। সচল বাসগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ইজারা দিয়ে চালানো হচ্ছে। ফলে ইজারাদাররা সরকারি এই বাসে নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা না করে দ্বিগুণ টাকা আদায় করছে। রাজধানীর জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে অন্তত সাড়ে ৭ হাজার বাস-মিনিবাসের প্রয়োজন। রাস্তায় চলাচল করছে প্রায় সোয়া চার হাজার বাস-মিনিবাস। গত আট বছরে রাজধানীতে প্রায় ছয় হাজার বাসের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হলেও সেগুলোর প্রায় অর্ধেকই এখন ঢাকার রাস্তায় নেই। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বেশ কিছু রুটে নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির বাস চলাচল করছে। এসব রুটে অন্য কোম্পানির বাস ঢুকতে দেওয়া হয় না। এসব রুটে যাত্রীদের জিম্মি করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। রাজধানীর গণপরিবহনে নৈরাজ্য চলায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিম্নবিত্ত এমনকি নিম্ন মধ্যবিত্তদের পক্ষে রাজধানীতে স্বল্প খরচে চলাচলের কোনো উপায় নেই বললেই চলে। স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের আশা তো দূরাশার শামিল। পরিবহন অব্যবস্থাপনা রাজধানীবাসীর ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ালেও তা দেখার কোনো কর্তৃপক্ষ দেশে নেই বললেও অত্যুক্তি হবে না। রাজধানীর দেড় কোটি মানুষের স্বার্থে এই অব্যবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.