------ একটি স্নিগ্ধ ভোরের অপেক্ষায়
-হাসান ইকবাল
(ইভ-টিজিংয়ে উক্তত্যতার শিকার হয়ে আমার ছোটবোন টুনি যখন হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে)
আমার বুকের ভেতর গোপন প্রকোষ্টে যে ব্যাথা জমা হয়ে আছে
তা নেভাতে গিয়ে দাবানল হয়ে প্রজ্বলিত হয়ে উঠল
নিমিষে তা পা থেকে মাথা, আপাদমস্তক আমি শিহরিত হলাম
অদ্ভুত এক চৈতন্যতায়।
আমার গভীর ঘুমের আচ্ছন্নতায় দেখতে পেলাম
আমার গরিয়সী মায়ের মলিন মুখ, ভাই-বোন, আমার প্রিয়তমা স্ত্রী'র আকুলতা।
হাসপাতালের আইসিইউ'র বেডে শুয়ে অবচেতন
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা যন্ত্রনাকাতর আমার প্রিয় ছোটবোন টুনির মুখ।
কি নিষ্ঠুর অপেক্ষা, কখন জ্ঞান ফিরবে, দারোয়ান থেকে শুরু করে
নার্স, ডিউটি ডক্টর, তাদের কাছে কেন যেন কৃপা খুঁজি বারবার।
ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন।
অনেক শুষ্ক মুখে হাসি ফুটে উঠে, আবার কেউ নিয়ে চলে আপন স্বজনের লাশ। ক্রন্দন ধ্বনিতে অট্রহাসি হাসে হাসপাতালের দেয়াল।
ঘন কাঁচের সীমানা ভেদ করে ঊঁকি মারে আমার মা
কখন শুনতে পাবে একটি সুমধুর ডাক,
একটি উৎফুল্ল মধুর সময়ের অপেক্ষার আকুপাকু আমাদের প্রতিটি নিউরণ।
কতটা নিলর্জ হলে মানুষ এতটা নির্মম হতে পারে,
আমার বোনের বাক স্বাধীনতাকে তুচ্ছ করে
শুধু হুমকি, খুন, অপহরণ অথবা টাকা দিয়ে বেঁচে থাকার এক নতুন সমীকরন
আমার স্বাধীন এই বাংলাদেশে।
জ্ঞান ফিরবে বলে বসে থাকা হাসপাতালের সিঁড়ি, বেলকনি
অথবা আইসিইউ'র সামনে।
কি অদ্ভুত এক অন্তমিল। হাসপাতালে যারা আছে সবাই আমারি মতো
আপনজনের জন্য নিংড়ানো ভালোবাসা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, জেগে থাকা রাতের পর রাত।
কখন ভোর হবে কেউ জানেনা,
উকি মেরে দেখি এক অদ্ভুত নিরবতা এক মৃত্যুপুরীর মতো।
২৬ নভেম্বর ২০১২
মোহাম্মদপুর, ঢাকা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।