আমার এ ছোটো মেয়ে জীবনানন্দ দাস (অগ্রন্থিত কবিতা) আমার এ ছোটো মেয়ে — সব শেষ মেয়ে এই শুয়ে আছে বিছানার পাশে – শুয়ে থাকে — উঠে বসে — পাখির মতন কথা কয় হামাগুড়ি দিয়ে ফেরে মাঠে মাঠে আকাশে আকাশে।…. ভুলে যাই ওর কথা — আমার প্রথম মেয়ে সেই মেঘ দিয়ে ভেসে আসে যেন বলে এসে: ‘বাবা, তুমি ভালো আছ? ভালো আছ? — ভালোবাসো?’ হাতখানা ধরি তার: ধোঁয়া শুধু কাপড়ের মতো শাদা মুখখানা কেন! ‘ব্যথা পাও? কবে আমি মরে গেছি — আজও মনে কর?’ দুই হাত চুপে চুপে নাড়ে তাই আমার চোখের ’পরে, আমার মুখের ’পরে মৃত মেয়ে; আমিও তাহার মুখে দু’হাত বুলাই; তবু তার মুখ নাই — চোখ চুল নাই। তবু তারে চাই আমি — তারে শুধু — পৃথিবীতে আর কিছু নয় রক্ত মাংস চোখ চুল — আমার সে মেয়ে আমার প্রথম মেয়ে — সেই পাখি — শাদা পাখি — তারে আমি চাই; সে যেন বুঝিল সব — নতুন জীবন তাই পেয়ে হঠাৎ দাঁড়াল কাছে সেই মৃত মেয়ে। বলিল সে: ‘আমারে চেয়েছ, তাই ছোটো বোনটিরে – তোমার সে ছোটো-ছোটো মেয়েটিরে এসেছি ঘাসের নিচে রেখে সেখানে ছিলাম আমি অন্ধকারে এত দিন ঘুমাতেছিলাম আমি’ — ভয় পেয়ে থেমে গেল মেয়ে, বলিলাম: ‘আবার ঘুমাও গিয়ে — ছোটো বোনটিরে তুমি দিয়ে যাও ডেকে।’ ব্যথা পেল সেই প্রাণ — খানিক দাঁড়াল চুপে — তারপর ধোঁয়া সব তার ধোঁয়া হয়ে খসে গেল ধীরে ধীরে তাই, শাদা চাদরের মতো বাতাসেরে জড়ায় সে একবার কখন উঠেছে ডেকে দাঁড়কাক — চেয়ে দেখি ছোটো মেয়ে হামাগুড়ি দিয়ে খেলে — আর কেউ নাই। বাগানে কি ধরেছিলে হাত – শক্তি চট্টোপাধ্যায় যবে হাত ধরেছিলে হাতে এ-প্রাণ ভরেছে অকস্মাতে সকল বিস্ময় তখনই তো ধ্বংসের সময়, তখনই তো নির্মাণের জয়। তোমার হাতের মাঝে আছে পর্যটন- একথা কি খুশি করে মন? একথা কি দেশ ঘুরে আসে স্মরণীয় বসন্তবাতাসে! এবার হলো না তবু ছুটি দুলে ওঠে মোরগের ঝুঁটি বেলা গেলো – বুকে রক্তপাত বাগানে কি ধরেছিলে হাত বাগানে কি ধরেছিলে হাত?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।