হৃদয়ে আমার “একাত্তর” স্বপ্নে দেখি রঙিন ভোর! আমরা যারা খুব কাছ থেকে নাস্তিক/নাস্তিকদের দেখেছি তারা একটি বিষয় খুব ভাল করে লক্ষ্য করে থাকবো! তা হলো, এই শ্রেণীর লোকেরা তাদের অর্জিত জ্ঞানের উপর এতটাই আস্থাশীল যে জগতের সব কিছুকেই তারা তাদের এই ঠুনকো জ্ঞান দিয়ে বুঝতে বা ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করে! এরকমই এক নাস্তিকের গল্প আপনাদের এখন শোনাবো।
আমি: এই মহাবিশ্বের অবশ্যই একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন, তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন ।
নাস্তিক: হে হে , তাইলে আপনের ঐ সৃষ্টিকর্তারে সৃষ্টি করছে আবার কোন্ সৃষ্টিকর্তায় ?
আমি: তাঁকে কেউ সৃষ্টি করে নি, তিনি স্বয়ম্ভু । তাঁর কোন জন্ম বা মৃত্যু নেই । তিনি ছিলেন, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন।
তাকে সূরা এখলাসের অনুবাদ এবং ব্যাখ্যাটা শুনিয়ে দিলাম এরপর ।
নাস্তিক: তার মানে আপনের আল্লাহকে কেউ বানায় নি বা সৃষ্টি করে নি উনি এমনি এমনি হয়ে গেছেন?
আমি: এই মূর্খের কথা শুনে নিজেকে খুব কষ্টে ঠাণ্ডা রাখলাম । তাকে বললাম, দেখুন আপনার কথাটা আসলে ঠিক না । যিনি নিজেই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তাকে আবার কে সৃষ্টি করবে বলুন ? আপনারা দাবী করে থাকেন এই মহাবিশ্ব নাকি স্রস্টা ছাড়াই অস্তিত্বে এসেছে! সেটা আসলে কিভাবে সম্ভব ?
নাস্তিক: আপনাদের আল্লাহ্ যদি এমনি এমনি আসতে পারে তাহলে মহাবিশ্ব কি এমনি এমনি সৃষ্টি হতে পারে না ?
আমি: মনে মনে বললাম খুবই ভাল যুক্তি (ততক্ষণে আমার বুঝা হয়ে গেছে এইটা আসলে কত বড় উন্মাদ, এর সাথে তর্কে যাওয়াই বৃথা )! তার মানে আপনি বলতে চান মহাবিশ্ব এমনি এমনি সৃষ্টি হয়েছে,আল্লাহ্ সৃষ্টি করেন নি?
নাস্তিক: তা না হলে তো আবার আপনার আল্লাহর জন্মদিন পালন করতে হবে, কারন তিনি তাহলে জন্ম নিলেন কিভাবে ?
আমি: ভাই দেখুন, আমাদের মানব জাতীর জ্ঞান খুবই সামান্য এই জ্ঞান দিয়ে জগতের সব কিছুকে আমরা কখনোই পুরোপুরি বুঝতে সক্ষম হবো না! সৃষ্টির রহস্যই যদি আমরা পুরোপুরি বুঝতে সক্ষম না হই তাহলে স্রস্টাকে কি ভাবে বুঝতে পারবো? তার চেয়ে কি এটাই যৌক্তিক নয়, আমরা আমাদের এই সিমাবদ্ধতাকে অকপটে মেনে নিয়ে স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করি ?
নাস্তিক: এখন আমরা অনেক কিছুই জানি না তার মানে তো এই না যে কোনো দিনই জানতে পারব না ?
আমি: কি জানতে পারবেন? আল্লাহ্ নেই?! মহাবিশ্বের কোন স্রষ্টা নেই ?
নাস্তিক: অবশ্যই । আর এটাই ১০০ ভাগ খাঁটি কথা ।
আমি: যদি এর বিপরীতটাই সত্যি হয় যে সত্যি একজন স্রষ্টা আছেন ?
নাস্তিক: বিজ্ঞান তো এর মধ্যেই প্রমান করে ফেলেছে, এই মহাবিশ্বের কোন স্রষ্টা নেই!
আমি: এই বার আর কথা বাড়ালাম না । এইটা যে কত বড় জ্ঞানী(!?) তা আমি এখন পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম ।
নাস্তিক: স্রষ্টা বলতে কেউ নেই, তাকে কেউ দেখে নাই । মানুষই তার কল্পনায় স্রস্টাকে সৃষ্টি করেছে। স্রষ্টা মানুষের অজ্ঞতা আর
ভণ্ডামির যুগপৎ সমন্বয়।
আমি: আপনারা নাস্তিকরা দাম্ভিকতা আর গোঁড়ামি ছাড়া মানব জাতিকে কিছুই দিতে পারেন নি । নিজেদের মূর্খতাকে আপনারা পাশ কাটিয়ে যান নির্লজ্জের মতো । আপনারা মহাবিশ্ব কে ব্যাখ্যা করেন গোঁজামিল আর অপবিজ্ঞানের সমন্বয়ে । আর যেখানে আটকে যান সেখানেই "প্রাকৃতিক কারণ" নামক এক মায়াজাল সৃষ্টি করেন । কথায় কথায় বলেন "প্রকৃতির দান", প্রকৃতির নিয়ম।
কিন্তু কখনোই বলেন না কে এই " প্রকৃতি" কি এই "প্রাকৃতিক কারণ "?! আপনারা স্রষ্টার আসন কি প্রকৃতিকে দিচ্ছেন না ? আপনারা এটা মানতে পারেন না যে স্রষ্টা অসীম, স্বয়ম্ভূ । কিন্তু ঠিকি বিশ্বাস করেন মহাবিশ্ব অসীম স্বতঃস্ফূর্ত । এই কি আপনাদের পাণ্ডিত্য, আপনাদের বিজ্ঞান? আপনারা বা আমরা কেউই আমাদের অর্জিত জ্ঞান দিয়ে স্রস্টাকে ব্যাখ্যা করতে পারব না বা পারছি না! এটা আমাদের সীমাবদ্ধতা। তার মানে তো এই না যে, আমরা আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে যা কিছু বুঝতে বা ব্যাখ্যা করতে পারবো না তার কোন ভিত্তি নেই?!
নাস্তিক: আমাদের সত্যকে মেনে নেয়া উচিত ।
আমি: সত্য, সুন্দর, নীতি, আদর্শ ,সম্মান এই গুলো আসলে কি ? এগুলো বস্তুর কি রকম গুনাবলি ? অবশ্য এই জগতের যেহেতু স্রষ্টাই নেই, এ জীবনের কোন উদ্দেশ্যই নেই সুতরাং এ সব সত্য, সুন্দর, নীতি, আদর্শ, সম্মান, প্রেম, ভালবাসা এগুলোরও কোন মূল্য নেই! কি বলেন ?
নাস্তিক: তা কেন হবে ? জগত ব্যাখ্যায় সত্য, সুন্দর, নীতি, আদর্শ,সম্মান, প্রেম ,ভালবাসা এগুলোর প্রয়োজনীয়তা সন্দেহাতীত!
আমি: আপনার নাস্তিকতাবাদ যেখানে জীবনের, জগতের উদ্দেশ্যকেই স্বীকার করে না সেখানে এসবের কি মূল্য থাকতে পারে?
নাস্তিক: কিছু জিনিসকে এমনিতেই মেনে নিতে হয় তার জন্য ব্যাখ্যা খুঁজতে যাওয়া ঠিক না ।
আমি: তাহলে স্রস্টাকে এমনিতেই স্বীকার করে নিলে সমস্যা কোথায়???????? (এইবার জনাব নাস্তিক সাহেব একেবারে নির্বাক ,হতভম্ব)
নাস্তিক: আজ যাই আরেকদিন কথা হবে ।
আমি: যদি কিছু মনে না করেন একটা কথা জিজ্ঞেস করি ?
নাস্তিক: করেন!
আমি: আপনার বোনকে কেউ যদি আপনার সামনে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আপনি তখন কি করবেন ?
নাস্তিক: তাকে (ধর্ষককে) কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবো ।
আমি: কেন এমনটা করবেন ?
নাস্তিক: এটা অন্যায় তাই।
আমি: ন্যায় অন্যায় এগুলো কি ?
নাস্তিক: এগুলো মানুষের বিবেক ।
আমি: এই বিবেক জিনিসটা কি ?
নাস্তিক :ভাই আজকে যাই আরেক দিন কথা হবে ।
আমি: ঠিকাছে যান ,তবে একটা কথা শুনে যান ,আপনার বোনকে ধর্ষক যদি ধর্ষণ করেই থাকে তার জন্য আপনি তাকে বাধা দিতে বা তার (ধর্ষক এর) বিচার চাইতে পারেন না । কারণ সে কিন্তু আপনার বোনকে এমনি এমনি ধর্ষণ করেছে এটার পেছনে তার অন্য কোন উদ্দেশ্য বা কারণ ছিলো না!
ইহা একটি কাল্পনিক কাহিনী! ইহার সাথে কাহারো কোন কিছু মিলিয়া গেলে তাহা নিছক কাকতাল জ্ঞান করিতে হইবে! ইহার জন্য লেখককে দায়ী করা চলিবে না! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।