খুব ক্ষুদ্র একজন মানুষ। নাস্তিকের প্রশ্নঃ
চন্দ্রকে নূরের তৈরি এবং সূর্যকে প্রদীপ বা আগুণ বলা হয়েছে। চন্দ্র নূরের তৈরি নয় এবং সূর্যের পুরো অংশ আগুন নয়। তাহলে কোরানের একথা কিভাবে সত্য হল। [৭১:১৫-১৬; ২৫:৬১] আয়াতে বলা হয়েছে চন্দ্র আলো প্রদান কারী উৎস।
বর্তমানে স্পষ্টতই দেখা গিয়েছে চন্দ্রের নিজস্ব আলো নেই। অর্থাৎ চন্দ্র আলোর উৎস নয়। এর ব্যাখ্যা কি? [বোকা মেয়ের ১০ নম্বর প্রশ্ন ]
উত্তরঃ
আগে আয়াত গুলো দেখি। অনেক গুলো অনুবাদ দিয়েছি যাতে কেউ বলতে বা পারেন যে আমি আমার সুবিধামত অনুবাদ বাছাই করেছি।
71:15
أَلَمۡ تَرَوۡاْ كَيۡفَ خَلَقَ ٱللَّهُ سَبۡعَ سَمَـٰوَٲتٍ۬ طِبَاقً۬ا
Transliteration
Alam taraw kayfa khalaqa AllahusabAAa samawatin tibaqa
Sahih International
Do you not consider how Allah has created seven heavens in layers
Muhsin Khan
See you not how Allah has created the seven heavens one above another,
Pickthall
See ye not how Allah hath created seven heavens in harmony,
Yusuf Ali
"'See ye not how Allah has created the seven heavens one above another,
Shakir
Do you not see how Allah has created the seven heavens, one above another,
Dr. Ghali
Have you not seen how Allah created seven heavens as strata, (i.e., in layers).
Bangla NEW
তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন।
71:16
وَجَعَلَ ٱلۡقَمَرَ فِيہِنَّ نُورً۬ا وَجَعَلَ ٱلشَّمۡسَ سِرَاجً۬ا
Transliteration
WajaAAala alqamara feehinna nooran wajaAAalaashshamsa siraja
Sahih International
And made the moon therein a [reflected] light and made the sun a burning lamp?
Muhsin Khan
And has made the moon a light therein, and made the sun a lamp?
Pickthall
And hath made the moon a light therein, and made the sun a lamp?
Yusuf Ali
"'And made the moon a light in their midst, and made the sun as a (Glorious) Lamp?
Shakir
And made the moon therein a light, and made the sun a lamp?
Dr. Ghali
And He has made the moon therein for a light, and He has made the sun for a luminary?
Bangla NEW
এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে।
২৫:৬১ঃ
تَبَارَكَ ٱلَّذِى جَعَلَ فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجً۬ا وَجَعَلَ فِيہَا سِرَٲجً۬ا وَقَمَرً۬ا مُّنِيرً۬ا
Transliteration
Tabaraka allathee jaAAala feeassama-i buroojan wajaAAala feeha sirajan wa qamaran muneera
Sahih International
Blessed is He who has placed in the sky great stars and placed therein a [burning] lamp and luminous moon.
Muhsin Khan
Blessed be He Who has placed in the heaven big stars, and has placed therein a great lamp (sun), and a moon giving light.
Pickthall
Blessed be He Who hath placed in the heaven mansions of the stars, and hath placed therein a great lamp and a moon giving light!
Yusuf Ali
Blessed is He Who made constellations in the skies, and placed therein a Lamp and a Moon giving light;
Shakir
Blessed is He Who made the constellations in the heavens and made therein a lamp and a shining moon.
Dr. Ghali
Supremely Blessed is He Who has made in the heaven constellations, and He has made therein a luminary and an enlightening moon.
Bangla NEW
কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র।
যারা আয়াতগুলো ও তার অনুবাদ পড়েছেন, আশা করি উপরের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। তারপরো
৭১: ১৫ । বোঝায় যাচ্ছে এই আয়াতটি প্রশ্নের সাথে প্রাসাংগিক নয়।
তারপর নাস্তিক সাহেব এই প্রশ্নের সাথে এই আয়াতকে রেফারেন্স হিসেবে দিলেন তা বোধগম্য হয়। তবে একটা জিনিস বোঝা যায়, প্রচুর পড়াশোনার ঘাটতি রয়েছে প্রশ্নকর্তার।
৭১:১৬। সবগুলো অনুবাদেই, “সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরুপে/ light’’ বলা হয়েছে। Shahih international এ বলা হয়েছে এটা reflected light. এখানে আরবীতে চন্দ্রকে বলা হয়েছে নূর বলে।
নুর মানে হল আলো। (আলোক উৎস নয়। )
“এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে/ burning lamp/ lamp/ (Glorious) Lamp/ a luminary” ।
তাহলে সূর্যকে বলা হয়েছে আলোকপ্রদানকারী প্রদীপরুপে। আরবী শব্দটা হল সিরাজা( سِرَاجً۬ا)।
যার অর্থ lamp.
২৫:৬১। এখানেও আগের মতই সূর্যকে বলা হয়েছে সিরাজা( سِرَٲجً۬ا) ।
আর চন্দ্রকে বলা হয়েছে luminous moon/ light/shining moon/ enlightening moon. আরবী শব্দটা হল قَمَرً۬ا مُّنِيرً۬ا.
তাহলে বিভিন্ন অনুবাদ থেকে আমরা যেটা বুঝলাম সেটা হল, চন্দ্রকে বলা হয়েছে আলোরুপে/ আলোপ্রতিফলকরুপে/আলো প্রদায়করুপে। ২টি আয়াতের কোন অনুবাদেই এটা বলা হয়নি যে এটা নূরের তৈরী। আরবিতেও সেটা বুঝাচ্ছে না।
তাহলে সহজেই বুঝা যাচ্ছে “চন্দ্র নুরের তৈরী এটা কুরানে বলা হয়েছে” এটা প্রশ্নকর্তার কত বড় ভুল।
“সূর্য আগুন” এটাও কোথাও বলা হয়নি। বলা হয়েছে lamp. প্রশ্নকর্তা যদি lamp বলতে শুধু লন্ঠনের আগুন বুঝে থাকেন তাহলে কিছুই করার নেই। বরং ল্যাম্প হল যে কোন আলোক উৎস যেখানে আলো তৈরী হয়। একটা অনুবাদে দেখতে পাচ্ছি burning lamp বলা হচ্ছে।
সেটাও সত্য। সূর্যে কন্টিনিয়াস বার্নিং এর ফলে আলো তৈরী হচ্ছে। তিনি যদি বার্নিং শব্দের কারণে আগুন বুঝিয়ে থাকেন তাহলেও “সূর্যের পুরো অংশ আগুন” সে কথা উনি এই তিনি আয়াতের কোন জায়গায় পেলেন?
উনি বললেন, কোরানে বলা “চন্দ্র আলো প্রদান কারী উৎস”। উৎস শব্দটা উনি কোথায় পেলেন? কোন কোন অনুবাদের প্রদানকারী বলা থাকলেও “উৎস” কোথাও বলা হয়নি।
বোঝাই যাচ্ছে, প্রশ্নকর্তার প্রশ্নটাই পুরোটাই একটা গোজামিল।
হয় এটি খ্রিষ্টানদের ওয়েবসাইট থেকে কপি করা যাদের পাদ্রিরা তাদের অনুসারিদেরকে ইসলামে কনভার্ট হয়া থেকে যেভাবেই হোক ফেরানোর জন্য গোজামিল দিয়ে বুঝিয়ে রাখে, অথবা প্রশ্নকর্তার ভুল বা মিথ্যা প্রচারণা ।
এবার এই আয়াত গুলো দিয়েই কোরানের বৈজ্ঞানিক তথ্য গুলো তুলে ধরব।
নুরের ভাষাগত অর্থ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এটা প্রতিফলিত আলোর কাছাকাছি ( কিন্তু কোন ভাবেই আলোর উৎস না) । একটা অনুবাদে [shahih international-যেটা সবথেকে বেশি গ্রহণযোগ্য ] প্রতিফলিত কথাটা উল্লেখ করা আছে। আধুনিক বিজ্ঞান চাঁদের এই কন্সেপ্টটাই দিচ্ছে।
আর সিরাজ ত স্পষ্টত lamp। আর আমরা জানি, ল্যাম্পই মানে আলো উৎস; সেটা যেমন লন্ঠন হতে পারে বা ইলেক্ট্রিক ল্যাম্প। কোন কোন অনুবাদে বলা হয়েছে burning lamp. এতে সূর্যের ভিতরের বার্নিং বোঝানো হচ্ছে। তাই সূর্যকে বলা হচ্ছে আলোর উৎস এবং এর আলোর উৎস ভিতরকার বার্নিং।
বিজ্ঞান থেকে আমরা জানি, সূর্যই আলোর উৎস।
আর কোরান খুব স্পষ্টভাবে সূর্যকেই আলোর উৎস বলেছে যেখানে আলো তৈরি হয়। আর চাঁদকে বলা হয়েছে আলো-প্রতিফলক ( এবং নুরের অর্থ কোনভাবেই ঘুরিয়ে পেচিয়ে আলোর উৎস বানানো সম্ভব না) । কোরানে চাঁদকে কোনভাবেই কোন জায়গাতেই সিরাজ বা ল্যাম্প বলা হয়নি; ল্যাম্প বলা হয়েছে। আর উপরের আয়াতে সূর্যকে শুধু light বলা হয়নি। অথচ আয়াত গুলো দুটি ভিন্ন সুরার।
শব্দগুলোর সিগ্নিফিকেন্স না বুঝে আপ্লাই করলে দুই সুরায় দুই রকম হয়ে ভুল হবার সম্ভনা ছিল। কিন্তু এখানে ভুল হয়নি? কেন? মুহাম্মাদ কি বৈজ্ঞানিক ছিলেন? কিভাবে বিজ্ঞানের এই তথ্যগুলো অনেক নির্ভুলভাবে ১৪০০ বছর আগে থেকেই কোরানে আছে? আর যার উপর নাজিল হয়েছিল তিনি ছিলেন একজন নিরক্ষর ব্যক্তি।
স্মর্তব্য যে, কোরান কোন বিজ্ঞানের বই নয়, বরং মানব জাতির মুক্তির জন্য, হেদায়েতের জন্য নির্দেশিকা। তবে বর্ণনার মাঝে মাঝে প্রাসাংগিকভাবে কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য চলে এসেছে যেহেতু সবই আল্লাহর নিজের সৃষ্টি আর তিনি সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।
অনুবাদঃ [১] http://quran.com/71/15-16
[২] http://quran.com/25/61
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।