নৃসংস প্রতিশোধের এক অভিনব হাইটেক কৌশল।
সহকর্মী মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগে বোমা ভরে দেয় তার কথিত প্রেমিক। মোবাইল সিম ভিত্তিক “মিসকল বোমা”.!!
খাবারের প্যাকেটের নামে তুলে দেয়া হয় এই ভয়ঙ্কর বোমাটি, খানিক পরে বোমার আঘাতে উড়ে যায় প্রেমিকা আয়েশার কোমর থেকে পেছনের অংশ, ঝলসে যায় একটি হাত। আয়শার কাছ থেকে তথ্য জানার পর পুলিশের দ্রুত একশান। দেড় ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার প্রেমিক জুবায়ের আহমেদ।
জুবায়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)-এর একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার। পিটুনি দেয়ার আগেই স্বীকার করেছে নিজের দায়। পুলিশকে সে বলেছে, আয়েশার প্রেম-প্রতারণা সহ্য হয়নি। তাই ওকে মারতে ২০ হাজার টাকায় বোমা কিনেছি। পরে ওর ভ্যানিটি ব্যাগে ভরে দিয়ে কৌশলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উচিত শিক্ষা দিয়েছি।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিসের সামনে আয়েশার ব্যাগে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তায় ছোপ ছোপ রক্ত দেখা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে আয়েশার ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ভ্যানিটি ব্যাগ, বোমার টুকরা, বিধ্বস্ত মোবাইলের সার্কিট, একটি পুড়ে যাওয়া বাংলালিংক সিম উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে আয়শা অলৌকিক ভাবে বেঁচে যাওয়াতে ঘাতককে ধরা সম্ভব হয়েছে।
চিকিৎসাধীন আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, জুবায়ের আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। টিফিনের কথা বলে বোমার প্যাকেট সরবরাহ করেছিল। ওই প্যাকেটটি ভ্যানিটি ব্যাগে ভরে অফিসের দিকে কিছুদূর এগোতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
পুলিশের তেজগাঁও জোনের ডিসি ইমাম হোসেন বলেন, আয়েশার প্রতি কোন কারণে জুবায়ের ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বোমা বিষ্ফোরনে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। সে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মোবাইল সিম ভিত্তিক বোমা সংগ্রহ করে বা তৈরি করে, যা মিসকলের মাধ্যমে বিষ্ফোরিত করা যায়।
বোমাটি কৌশলে সহকর্মি আয়েশার ব্যাগে ভরে বিস্ফোরণ ঘটায়। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত জুবায়ের ও তার সহযোগী নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া বোমা সরবরাহকারীকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, বিস্ফোরিত বোমাটি IED (ইমেপ্রাভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের বোমা সাধারণত বিদেশী জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা তৈরি ও ব্যবহার করে থাকে।
এটির বিস্ফোরণে মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত। বোমাটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন হওয়া সত্বেও সম্ভবত পাইপ নির্মিত বোমাটির নির্মান ত্রুটির কারনে বোমার থার্স্ট দ্বিমুখি হয়েছিল, যে কারনে মেয়েটি বেচে যায়।
চিকিৎসাধীন আয়েশা উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মিদের বলেন,
টিফিনের কথা বলে প্যাকেটটি ধরিয়ে দিল জুবায়ের। বলে, আমার একটি মিটিং আছে। এটি আমার টেবিলে রেখে দিও।
প্যাকেটটি ব্যাগে নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়ের সামনে থেকে পিকেএসএফ ভবনের সামনে আসা মাত্রই কানফাটা বিস্ফোরণ, আর কিছু মনে নেই।
সুত্র - ১৭ই জুলাই এর বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।