আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইরাকী মা-বোনের আহাজারি ঃ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী জর্জ বুশের বিচার চাই

মানবতার গান গেঁয়ে যায়-তারুণ্যের প্রেরণায় ইরাকে মার্কিন বাহিনীর আগ্রাসনের ফলে ১০ লাখ নারী বিধবা এবং ৪০ লাখ শিশু এতিম হয়েছে। ইরাকের সরকারি সূত্রে এ মর্মান্তিক খবর দেয়া হয়েছে। ২০০৮ সালের এক গোপন সরকারি দলিল থেকে আরব টাইমস তার ওয়েবসাইটে ওই খবর প্রকাশ করেছে। ইরাকের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য থেকেও একই চিত্র বেরিয়ে এসেছে। এ সব তথ্যে দেখা গেছে, মার্কিন বাহিনীর ইরাক আগ্রাসনের পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৫ লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে।

এ ছাড়া, ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আট লাখ ইরাকি নিখোঁজ হয়েছে। সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন দেশটিতে বিপুল পরিমাণ গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র জড়ো করেছেন বলে অভিযোগ তুলে মার্কিন সরকার ইরাকে সামরিক আগ্রাসন চালায়। তবে, আজ পর্যন্ত সেখানে এ ধরনের কোনো মারণাস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া, মার্কিন ও বৃটিশ সরকার তাদের গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে ইরাক আগ্রাসনের যে ত্রে তৈরি করেছিলেন পরবর্তীতে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। নানা চাপের মুখে ইরাক থেকে বহু সেনা ফিরিয়ে নেয়া হলেও এখনো দেশটিতে ৫০ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে।

২০১১ সালের মধ্যে সব সেনা ফিরিয়ে নেয়ার কথা থাকলেও সম্প্রতি মার্কিন কর্মকর্তারা এসব সেনাকে আরো বহুদিন ইরাকে রাখার বিষয়ে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন। তারা বলছেন, বাগদাদের অনুরোধেই ওয়াশিংটন এ কাজ করতে চায়। সূত্র : রেডিও তেহরান। ( ইরাক আগ্রাসনের ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষে লেখা) প্রায় ছয় বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে জোট বাহিনী ইরাক দখর করেছিল । এই দখল অভিযানের লক্ষ্য ছিল ‘সাদ্দাম হোসেনের স্বৈরশাসন থেকে জনগণকে মুক্ত করা’ ।

কি জঘন্য মানবতা প্রীতি! একই বলে মায়ের চেয়ে মাসির দরত বেশি। ধিক মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদ ধিক!। তৈল সম্পদ লুন্ঠনের জন্য কুখ্যাত মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদ বিনা উসকানিতে যুদ্ধ শুরু করার জন্য এ লক্ষ্যকেই তুলে ধরেছিল। মানবতা বিধ্বংসী জীবানু বোমার অজু হাতে ইরাকে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাত মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদ সেই জীবানু বোমা নিরীহ ইরাকীদের উপর নিক্ষেপ করে পরীক্ষা করলো। ইরাকের মানবতাকে তারা বিপন্ন করেছে।

মুক্তি, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির যে আশ্বাস ইরাকীদের দেওয়া হয়েছিল তা আজ কোথায়? আজ তাদের উপর কেন এত বর্বর নির্যাতন? আসলে এসব ছিল মরিচীকা, প্রতারণামূলক মিথ্যা আশ্বাস। ইরাকের তেল দেখে কুখ্যাত বুশ সাহেব হুশ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তৎকালীন মার্কিন উপপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছেন-তেলের জন্যই ইরাকে হামলা চালানো হয়েছে। কারণ দেশটি তেলের উপর ভাসছে। ইরাক দখলের ছয় বছর পরও কি ইরাকীরা মুক্তি পেয়েছেন? ইরাকী নেতা সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসির পরও কি ইরাকে, মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা এসেছে? উভয় প্রশ্নের উত্তর ‘না’।

অথচ দখলদারিত্বের ছয় বছরে ইরাকে অকল্পনীয় রক্ত ঝরেছে। প্রতিষ্ঠিত ইরাক কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। মৃতপ্রায় সেই শিশুদের করুণ চাহনী, মায়ের বেদনা ভরা চোখের পানি, অসহায় নারী পুরুষের আত্মনাদ, ভুবুক্ষ মানুষের করুণ আকুৃতি,স্বজন হারা মানুষের ক্রন্দনে মুখরিত আকাশ বাতাস। কমেছে জীবনের দাম, অসহায় ছোট্ট বালিকা খানা-পানির অভাবে কাতর হয়ে মুখের ভাষা প্রকাশ করার জন্য কাগজ-কলম না পেয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখেছে, ওহে আমেরিকা! আগে আমাদের পানি ও আহার দাও তারপর আমাদের উপর বোমা মারো। কুখ্যাত বুশের যোগ্য উত্তরসূরী বারাক ওবামা ইরাক দখলের যষ্ঠ বার্ষিকী পালন করলেন।

সেদিনও ইরাকে প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। যেভাবে হারিয়েছিল গত ছয় বছর। ইরাকীদের জীবনের মূল্য মশা-মাছির চেয়েও কমে গেছে। কি দিয়েছেন ইরাকে কুখ্যাত বুশ-ব্লেয়ার সাহেবরা? ছয় বছর আগ্রাসনের করুণ চিত্র পাঠকদের উদ্দ্যেশে উপস্থাপন করা হলো ঃ নির্ভরযোগ্য হিসাব অনুযায়ী , গত ছয় বছরে ইরাকে প্রাণ হারিয়েছে ১৩ লক্ষেরও অধিক। যাদের বেশির ভাগই অসহায় নারী ও শিশু।

সংখ্যার দিক থেকে এ প্রাণহানিকে ব্যাপক গণহত্যা বলা যায়। ইরাকে এমন কোন পরিবার নেই, যাদের আত্মীয় স্বজন প্রাণ হারায়নি। সহিংসতা, নৃশংসতা ও বর্বরতার আতংকে দেশ ত্যাগ করেছে ২৫ লাখ ইরাকী। পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ ইরাকী নারীই পাশ্ববর্তী দেশগুলোকে পতিতা বৃত্তিতে বাধ্য হচ্ছেন। বহু ইরাকী নারীকে সিরিয়া, জর্ডান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক ও ইরানে পাচার করা হয়েছে।

কুখ্যাত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অসহায় কবলিত ইরাকী নারীদেরকে পাচার করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কেবলমাত্র সিরিয়াতে আছে ৫০ হাজার ইরাকী নারী । যার অধিকাংশই বিধবা। ইউরোপের অসংখ্যা দেশেও পাচার করা হয়েছে। তাদেরকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

জামার্নীর ক্ষমতাসীন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি এক প্রস্তাবে বলেছে, তারা ইরাক থেকে শুধু মাত্র খিষ্ট্রানদের স্বাগত জানাতে আগ্রহী। মুসলমানদের নয়। কি জঘন্য সাম্প্রদায়িক মানসিকতা(!!)শুধু রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে রাজী নয় নাগরিকত্ব দিতেও রাজী। ধিক! জার্মানী ধিক! খ্রিষ্টানরা যে কতটা নরপিশাচ এ-থেকেই তা বুঝা যায়। অথচ ইরাক আগ্রাসনের সবচেয়ে করুণ শিকার হয়েছে শুধু মুসলমানরাই।

হে পশু বিশ্ব (!) তোমাদের নরকের পরিবেশে ইরাকীদের যেতে হবে না। তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ৫৬ টি মুসলিম দেশ আছে। অভ্যন্তরীন উদ্বাস্তু হয়েছে আরো ৩০- ৪০ লাখ ইরাকী। আহত ও বন্দী হয়েছে লক্ষ লক্ষ ইরাকী। বন্দীদের রাখা হচ্ছে ইরাকজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মার্কিন বাহিনী পরিচালিত কারাগার ও নির্যাতিত কেন্দ্রে।

ফাঁস হয়ে যাওয়া কিছু নির্যাতন কাহিনী জেনেও গেছে বিশ্ববাসী। একই রকম নির্যাতন ও মানবাধিকার লংঘন অহরহ ঘটছে নির্যাতন কেন্দ্রগুলোতে। এছাড়া গত ছয় বছরে নিখোঁজ হয়েছে লাখ লাখ ইরাকী। স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে মুক্তি দিতে আসা (!) কুখ্যাত মার্কিন কুত্তা বাহিনী থাকা সত্ত্বেও নিখোঁজ হচ্ছে (!) ধারণা করা হচ্ছে, দেশের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। দখলদারিত্বের ছয় বছরে ইরাকের অবস্থা হয়েছে ভয়াবহ।

মানুষের জীবনের সামান্যতম নিরাপত্তা নেই। নেই খাদ্য, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ ও পানির নিশ্চয়তা। আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন ও সেখানকার পরিস্থিতিকে বিপর্যস্ত বলে মন্তব্য করেছে। এক সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে-ইরাকে সহিংসতায় প্রতিমাসে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। দারিদ্রের পাশাপাশি রয়েছে খাদ্যসহ সব ধরণের সেবার সংকট।

নারী হয়েছে বন্দী। মানবাধিকারও তারা পাচ্ছে না। তাদের ওপর চালানো হচ্ছে পাশবিক নির্যাতন। এক সময় নারী শিক্ষাক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক শীর্ষে থাকলেও ২০০৩ সালে ইরাক দখল হওয়ার পর থেকে শিক্ষার হার ক্রমাগত কমছে। সে দেশের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তথ্য অনুযায়ী ৭০ শতাংশের বেশি বালিকা ও তরুণী স্কুল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে না অপহরণ ও ধর্ষণের আশংকায়।

মার্কিন কুত্তা বাহিনীর জন্য ইরাকী মা-বোনেরা ঘর থেকে বের হতে পারে না। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক নিহত হয়েছে। দেশ ছেড়ে পালিয়েছ হাজার হাজার শিক্ষক। ফলে শিক্ষাব্যবস্থা চলছে কোন মতে। এক সময় যে নারীরা বাইরে কাজ করতেন তারাও এখন ঘরে বন্দী থাকছেন।

গত ছয় বছরে উদ্বাস্তু হয়েছে ১০ লাখ নারী। বিধাব হয়েছে আরো ১০ লাখ। মার্কিন দখলদারিত্ব এক সময়ের ধনী দেশ ইরাক বাড়িয়েছে দারিদ্র। অধিকাংশ পরিবার খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে। নারী ও শিশুরা অপুষ্টিতে ভূগছে।

অথচ কুখ্যাত মার্র্কিনীদের বসানো পুতুল সরকার রেশন ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। সাদ্দাম হোসেনের সরকার এ ব্যবস্থা চালু করে লাখ লাখ মানুষকে অনাহার থেকে রেহাই দিয়েছিল। সরকার রেশন ব্যবস্থা তুলে দিয়ে দরিদ্রের বেঁচে থাক কঠিন করে ফেলেছে। এতে দেশটিতে নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়বে। চলমান সহিংসতায় ও বর্বরতায় ইরাকে গত ছয় বছরে ৪৫ লাখ শিশুকে এতিম করেছে।

এদের মধ্যে পাঁচ লাখ গৃহহীন। আড়াই লাখ শিশু উদ্বাস্তু হয়ে প্রতিবেশি দেশগুলোয় আশ্রয় নিয়েছে। ইরাকের অবস্থা কত যে ভয়াবহ তা বুঝা যায় রেডক্রসের এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে-বর্তমানে বিশ্বে ইরাকের মানবিক পরিস্থিতি সবচেয়ে নাজুক। দুই কোটি ৭০ লাখ ইরাকী খাবার পানি পাচ্ছে না।

স্যানিটেশন সুবিধা নেই ৮০ শতাাংশের। পানি ও বিদ্যুৎ কোনটিই নেই। রেডক্রস বলেছে-ইরাকের চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংসের কিনারে পৌঁছে গেছে। ২০০৩ সালে মার্কিন কুত্তা বাহিনী ইরাক আক্রমনের আগে সেখানে ৩৪ হাজার চিকিৎসক ছিল। গত ছয় বছরে পাঁচ হাজার চিকিৎসক খুন হয়েছেন।

দেশ ছেড়েছে ২০ হাজার। অক্সফার্মের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইরাকী শিশুদের অপুষ্টির কথা। এতে বলা হয়েছে ২০০৩ সালে অপুষ্টি আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ছিল ১৯ শতাংশ । এখন তা ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। বেড়েছে কম ওজনে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যাও।

ফালুজা হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক ডাঃ কামাল আল আনি বলেন-প্রতিদিন এখানে ২০ টি শিশু মারা যায়। জন্মের পরপরই মারা যায় ৭ জন। হাসপাতালের সব কিছুরই চরম সংকট। ইরাকীদের মুক্তির ধূঁয়া তুলে দেশটি দখলের পর সর্বক্ষেত্রে এমনই হাল করেছে মার্কিন কুত্তা বাহিনী। তবুও সব লক্ষ্য এখনো পূরণ হয়নি দখলদারদের।

মন কথাই বলা হয়েছে বিট্রেনের ফরেইন পলিসি সেন্টারের ইরাক কমিশন রির্পোটে। এতে বলা হয়েছে স্বৈরশাসনের অবসান ও একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে জোট বাহিনী অনেকটা সফল। তবে অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে ইরাকের সকল সম্পদ আমেরিকায় পাচার করে ইরাককে শশ্মান বানানো। কি জগণ্য পরিকল্পনা (!) ধিক সা¤্রাজ্যবাদী বিট্রেন ধিক (!) এই লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় ইরাকীরা লাভবান হয়েছে ।

সাদ্দামকে হটিয়ে ইঙ্গ-মার্কিন দখলদারিত্ব কায়েম করে ওয়াশিংটন তার নীল নকশা অনুযায়ী পুতুল সরকার সেখানে বসিয়েছে। নিরস্ত্র মানুষের উপর আগ্রাসনকে যৌক্তিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এর সবই ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ। এখনো সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা সচেষ্ট। এই পরিকল্পনায় রয়েছে-ইরাককে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করা, মার্কিন সেনাদের ওপর তাদের নির্ভরশীল করে রাখা এবং ইরাকের তেল সম্পদ নিয়ন্ত্রনসহ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ইসরাঈলের স্বার্থ হাসিল করা।

এজন্য রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ জিইয়ে রাখার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা স্থায়ী করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এ কারণেই মার্কিন কুত্তা বাহিনী প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। বরং দখল ও লুটপাট বজায় রাখতে দেশটি পূর্ণগঠনের ধূয়া তোলা হচ্ছে। আমেরিকা ফেরত মার্কিন কুত্তারাও বলছে আমেরিকা ইরাকে অন্যায় যুদ্ধ করছে এবং অযথা মানবতা ধ্বংস করছে। কিন্তু বর্তমান অবস্থা দেখে একদা সাদ্দামের ঘোর বিরোধীরাও ভাবনা বদলে ফেলেছেন।

সাদ্দাম বিরোধীদের বেশির ভাগই ছিলেন নির্বাসিত। তারা কাজ করেছেন ইরাকে দখলের পক্ষে। তাদের ভূল ভেঙ্গে গেছে। মার্কিন ট্যাংকে চড়ে ইরাকে প্রবেশ করা নির্বাসিত একজনের মন্তব্যেই তা বুঝা যায়। তিনি বলেন-সাদ্দাম এখনো ক্ষমতায় থাকলে দেশ অনেক ভালো থাকতো।

মার্কিন কুত্তাদের সাথে ইরাকে প্রবেশ করেছে অপরাধ ও দূর্নীতির সংস্কৃতি যা আগে ছিল না। ইরাক জুড়ে তৈরি করা হয়েছে পতিতা পল্লী। মার্কিন কুত্তাদের মনোরঞ্জনের জন্য। ইরাকী নারীদের সেখানে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ধিক! মার্কিন কুত্তা বাহিনী ধিক!!।

ইরাকী পুতুল সরকারও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। তারা বোঝাতে চাইছে, দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে এবং আসল ক্ষমা তাদেরই হাতে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দেশটি দখল করে রেখেছে এক লাখ ৫০ হাজার মার্কিন কুত্তা ও এক লাখ ৮০ হাজার ভাড়াটে কুত্তা। সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ও নেয় তারা এবং ওয়াশিংটন।

ইরাক সরকার দখলদারদের পক্ষে কাজ করছে এবং তাদের উপস্থিতিকে যৌক্তিক প্রমাণে ও বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ ইরাক থেকে মার্কিন কুত্তাদের প্রত্যাহার চায়। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন সরকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা না করে মার্কিন তাঁবেদারী করেই খুশি। দখলদারেরাও ইরাকীরা শাসনের জন্য প্রস্তুত নয় জানিয়ে অবৈধ রক্তাক্ত দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে। দখলদারদের পক্ষে কাজ করছে পশ্চিমা প্রচার মাধ্যম।

যে কারণে ইরাকের প্রকৃত অবস্তা বিশ্ববাসী জানতে পারছে না। সহিংসতা বাড়লেও বুশ প্রশাসনের মতো ওবামা প্রশাসনও এবং প্রচার মাধ্যমের হিসাবেও কমেছে। মার্কিন কুত্তাদের হাতে ইরাকী হলেও বলা হয় আল কায়েদা হত্যা করেছে। কিন্তু ইরাক জুড়ে সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি এবং তার নিয়ন্ত্রনও তাদের হাতে। নিজেদের নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্যই সহিংসতা জিইয়ে রাখা হয়েছে।

ফলে এই দখলদারিত্ব ইরাকে মানবাধিকার ও মানবিকতার সবচয়ে বড় বিপর্যস্ত ঘটাচ্ছে। ওয়াশিংটন পোষ্ট এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বারেন ডিইয়ং বলেন-ইরাকের সব জাতি সম্প্রদায়ের নেতারা মনে করেন তাদের মধ্যে সহিসতার বৈরিতার মূলে যুক্তরাষ্ট্র। তারা আরও মনে করেন, মার্কিন দখলদারিত্বের অবসান হলে এই বৈরিতা ভূলে ইরাকীরা আবারও এক হতে পারবে। বিভিন্ন দলকে অস্ত্র, অর্থ এমনকি প্রশিক্ষণও দিয়েছে ওয়াশিংটন। এসব দল আল কায়েদার বিরুদ্ধে না লড়ে লড়ছে নিজেরা।

এ কারণে বর্তমানে ইরাকীদের হতাহতের সংখ্যা বাড়লেও মার্কিন সেনাদের মৃত্যুর ঘটনা কমেছে। পশ্চিমা অপ্রপ্রচারে বিভ্রান্ত বিশ্ববাসীও এই অন্যায় যুদ্ধাপরাধের প্রতিবাদ করছে না। এই সুযোগে কুত্তা বাহিনী নিরস্ত্র ইরাকীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। নুরেমবার্গ চার্টার অনুযায়ী আগ্রাসন যুদ্ধ শুরু করা সর্ব্বোচ আর্ন্তজাতিক যুদ্ধাপরাধ। বিনা প্ররোচনায় ইরাক দখল করে এই চার্টার লংঘন করছেন মার্কিন নেতারা।

কিন্তু তাদের বিচার কে করবে? বিশ্বের সব কিছুর বিচার যে তারা করেন। আর্ন্তজাতিক ফৌজদারী আদালত যদি তথাকথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সুদানের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করতে পারে! তাহলে পৃথিবীর শীর্ষ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী বুশ-ব্লেয়ার ও বারাক ওবামা কে আর্ন্তজাতিক শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ঘোষনা করে তাদের ফাঁসির ব্যবস্থা করা আইসিসির কর্তব্য। তা না পারলে আইন আদালতের নাম দিয়ে এ ভন্ডামী বন্ধ করুণ। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধের সময় ধর্ষণ করা যুদ্ধাপরাধের অর্ন্তভূক্ত, তাহলে অনতিবিলম্বে মার্কিন কুত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করা জাতিসংঘের কর্তব্য। তা না পারলে এখনই বিলুপ্ত ঘোষনা করুণ জাতিসংঘকে।

ভন্ডামীর জন্য এরকম সংঘের কোন দরকার নেই। * পৃথিবীবাসীর কাছে আকুল আবেদন ঃ- হে শান্ত প্রিয় পৃথিবীবাসী! মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদ শান্তির এ পৃথিবীকে অশান্ত করছে। পৃথিবীতে করছে রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত, ধ্বংস করছে মানবতাকে। লংঘিত করছে মানবাধিকার। গলাটিপে হত্যা করছে পৃথিবীর মানুষগুলোকে।

তারা প্রতিষ্ঠিত ইরাক ও আফগানিস্তানকে কে শশ্মানে পরিণত করেছে। গণহত্যা চালিয়ে পৃথিবীর মানবতাকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। তাদের শক্তি সামর্থ আজ সবই পৃথিবীর শান্তি প্রিয় মানুষগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। তারা মানবতার দুশমন, তার মানবাধিকারের দুশমন, তারা পৃথিবীর অস্তিত্ত্বের জন্য হুমকি। তাই পৃথিবীর শান্তি প্রিয় জনগণ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াও।

সব শক্তি সামর্থ দিয়ে ধ্বংস করো মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদকে। আইন আদালতের শিকল দিয়ে বন্দী করো, ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলাও তাদের। হে পৃথিবীর তরুণ সমাজ! তোমাদের কাছে সারা পৃথিবী ঋণী। তোমাদের তারুন্যের সেই শক্তি দিয়ে একেকজন তারেক, মুসা ,খালিদ, মোহাম্মদ বিন কাসিম হয়ে মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদকে পৃথিবীর মাটিতে কবর দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসো। তোমরাই পারো কুখ্যাত মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদকে ধ্বংস করে পৃথিবীকে রক্ষা করতে।

তাই তরুন্যের প্রেরনায় জেগে উঠো। রক্ষা করো পৃথিবীকে। হে শান্তি প্রিয় পৃথিবীবাসী! তোমাদের সকল শক্তি ও সামর্থ দিয়ে মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াও। মার্কিন কুত্তাদের খতম করো। মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদ মুক্ত একটি শান্তির পৃথিবী গড়ো।

আজ মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের কবলে সারা পৃথিবী জ্বলছে। তোমরা যদি এগিয়ে না আসো তাহলে তাদের পরবর্তী শিকারে তোমরাই পড়বে। হে শান্তিপ্রিয় জনতা ! তোমরা কি শুনতে পাচ্ছো না, পৃথিবীর দিকে দিকে নির্যাতিত মা-বোন, শিশু কিশোরদের আর্তচিৎকার। তাহলে কেন এভাবে নিশ্চুপ রইবে? তোমরা কি শুধু তাকিয়েই থাকবে! তোমাদের ভেতরে কোন মায়া, মমতা, মানবতা মানবাধিকার বলতে কিছুই নেই। তোমরা না আশরাফুল মাখলুকাত, সৃষ্টির সেরা জীব, তাহলে কেন সৃষ্টির সেরা এ জীবগুলোকে বাঁচানোর জন্য তোমরা কোন উদ্যোগ নিচ্ছ না।

হে খিষ্ট্র বিশ্ব! তোমরা না বল যিশু খ্রিষ্ট পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছেন, তাহলে তোমরা কেন পৃথিবীতে এত অশান্তি সৃষ্টি করছ, মানুষকে খুন করতেছ। বন্ধ করো এসব অনাচার। তা না হলে তোমরাও রেহাই পাবে না। কুরআনের আইন চালানোর অপরাধে যদি আফগানিস্তানকে ধ্বংস করা হয়। তাহলে কেন খীষ্ট্রীয় আইনের তৈরি ভ্যাটিকান সিটি ধ্বংস হবে না? কেন মায়ানমারের মুসলমানরা আজ নিজ দেশেই পরবাসী? কেন পৃথিবীর দিকে দিকে মুসলমানদের নির্যাতন করা হচ্ছে? কেন নানা ছলচাতুই মুসলিম দেশগুলোর উপর অবরোধ আরোপ করে তিলে তিলে শেষ করে দেয়া হচ্ছে? এর একটি কারণ একটিই তারা (ইহুদী, খিষ্ট্রান) চক্র চায় পৃথিবী থেকে মুসলমানদের ধ্বংস করে দিয়ে খিষ্ট্র বিশ্ব বানাতে।

এজন্য যত দোষ নন্দ ঘোষ। তাই সব মুসলমানদের তাদের অস্তিত্ত্বের স্বার্থে রুখে দাড়াতে হবে। পৃথিবীর সকল মুসলিম ভাই ভাই, একই সূতোই আবন্ধ হয়ে আসুন সা¤্রাজ্যবাদকে উপড়ে ফেলি, পৃথিবীর সকল গণহত্যার বদলা নেই, কাশ্মিীরকে স্বাধীন করি, ফিলিস্তিনকে মুক্ত করি, পৃথিবীকে গড়ে তুলি একটি শান্তির নীড়ে, যে নীড় করে গেছেন হয়রত উমর, ওসমান, আলী (রাঃ)। এটাই হোক বর্তমান সময়ের মুসলিম তরুণদের, যুব সমাজের প্রতি আগামী প্রজন্মের একান্ত প্রত্যাশা। তাদেরই কন্ঠে ধ্বণিত হবে আমরা ফুটাব আশার পূষ্প সুবাস ছড়াবো বিশ্বময় হেরার জ্যেতি বক্ষে বেঁধে নিখিল ভূবন করবো জয় \ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.