আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাপের মুখে অস্ট্রেলীয় প্রতিষ্ঠানগুলো

‘ব্যবস্থাটাই এমন যে এক ঘণ্টার মধ্যে আমি কয়টা পোশাক দিতে পারলাম। চাহিদামতো জোগান দিতে না পারলেই শুরু হয় পীড়নকর গালিগালাজ। মুখ, মাথা আর পিঠে চড়চাপড় মারেন তাঁরা। ’
পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ একজন নারী পোশাককর্মীর। গত সোমবার রাতে তাঁর এই বক্তব্য প্রচার করা হয় এবিসি টিভি চ্যানেলের ‘ফোর কর্নারস’ অনুষ্ঠানের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।

শাহানাজ নামের ওই পোশাককর্মী ঢাকার ইভ ড্রেস শার্টসে কাজ করেন। ওই নারীর প্রতিদিনের মজুরি বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪০ টাকা। প্রতিবেদনে বাংলাদেশি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হওয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়।
ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গতকাল দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের খবরে জানানো হয়, এসব পোশাক কারখানা থেকে অস্ট্রেলিয়ার খ্যাতনামা ব্র্যান্ড কোলস, টারগেট, কেমার্ট ও রিভারসে পোশাক সরবরাহ করা হয়। এতে এসব প্রতিষ্ঠান পোশাক আমদানির জন্য নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

নিজ দেশেই এখন তারা চাপের মুখে। এসব প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি বাংলাদেশি পোশাককর্মীদের অবস্থার উন্নয়নবিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
ঠিক দুই সপ্তাহ আগে কেমার্ট ও টারগেট বাংলাদেশের যে দুটি কারখানা থেকে পোশাক আমদানি করে, তাদের বিরুদ্ধেও শ্রমিক হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। এ মাসের শুরুর দিকে কেমার্ট জানায়, যেসব পোশাক কারখানা শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সামাজিক দায়িত্ব পালনের মানদণ্ড কঠোরভাবে মেনে চলে, কেবল সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই পোশাক কিনবে তারা।
তবে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এখনো অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তাবিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।

শ্রমিক সুরক্ষায় নিয়োজিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অল নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন বিশ্বের সব শীর্ষ ব্র্যান্ডকে একটি চুক্তি স্বাক্ষরে চাপ দেয়। এই চুক্তি অনুযায়ী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো কারখানার নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে পারবে এবং এই চুক্তিবলে কারখানার পরিবেশ অনিরাপদ হলে শ্রমিকেরা ইচ্ছে করলে কাজ না-ও করতে পারেন। ৫০টির বেশি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
বিগ ডব্লিউএর একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরাও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে চাই। কিন্তু আমরা চুক্তিটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চাই।

আমরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অলের সঙ্গে হরদম যোগাযোগ রাখছি। ’
জাস্ট গ্রুপ, জাস্ট জিনস, পিটার আলেক্সান্ডার ও পোর্টম্যানস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এড়িয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার আরও কিছু প্রতিষ্ঠান।
অক্সফাম অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী ড. হেলেন এসজোক ‘গার্ডিয়ান অস্ট্রেলিয়া’কে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে থাকছে। আমরা জানি, বিশ্বের সেরা ৫০টি ব্র্যান্ড চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার সমস্যা কী?’ তিনি বলেন, আলোচনায় অল্প কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে। হয়তো এর চেয়েও বেশি অস্ট্রেলীয় প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কারখানা থেকে পোশাক কিনছে।
অক্সফাম অস্ট্রেলিয়ার এক হাজার নাগরিকের ওপর একটি জরিপ চালায়। জরিপে ৭০ ভাগ অস্ট্রেলীয় বলেছেন, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অনুকূল পরিবেশে কাজের সুযোগ দেওয়া হলে তাঁরা পোশাক কেনায় আরও খরচ করতে রাজি। এসজোক বলেন, ক্রেতারা এসব প্রতিষ্ঠানকে জানাতে চায় যে এমন অস্বচ্ছতায় তারা হতাশ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.