সংগ্রাম চলছে...চলবেই
ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মাস্টারদা সূর্যসেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিপ্লবের প্রধান নায়ক বলা হয় তাকে। প্রথম জীবনে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনেও অংশ নেন তিনি।
সূর্যসেনের বাবার নাম রামানিরঞ্জন। চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সময়ই এক শিক্ষকের মাধ্যমে তিনি বৈপ্লবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধু হন এবং অনুশীলন নামে ব্রিটিশবিরোধী দলে যোগ দেন।
১৯১৮ সালে তিনি বহরম কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এরপর স্কুলে শিক্ষকতা করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে অনুরূপ সেন, চারুবিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, নগেন্দ্র নাথ সেন প্রমুখের সঙ্গে চট্টগ্রামে গোপন বিপ্লবী দল গঠন করেন। গান্ধী কর্তৃক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে অনেক বিপ্লবী এই আন্দোলনে যোগ দেন। এ সময় চট্টগ্রাম গুপ্ত বিপ্লবী সমিতির নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে সমিতি ভাগ হয়ে যায়।
এরপর সমিতির অবশিষ্ট অংশটি কংগ্রেসের প্রকাশ্য আন্দোলনে কলকতার যুগান্তর দল-এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে থাকে। এই অংশের সভাপতি ছিলেন সূর্যসেন। ১৯২৩-এর ১৩ ডিসেম্বর সূর্যসেনের গুপ্ত সমিতির সদস্যরা প্রকাশ্যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাবদ নিয়ে যাওয়া টাকা ছিনতাই করে। এরপর সদলবলে পুলিশের সঙ্গে এক খণ্ডযুদ্ধে লড়াই করে গ্রেফতার হন সূর্যসেন। ১৯২৬ সালে টেগার্ট হত্যা প্রচেষ্টায় আবারও গ্রেফতার হয়ে ১৯২৮ সালে ছাড়া পান।
১৯২৯ সালে চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৩০ সালে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেন। এর ক’দিন পর ২২ এপ্রিল জালালাবাদ পাহাড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিপ্লবীদের নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর ৮০ জন এবং বিপ্লবী বাহিনীর ১২ জন নিহত হয়। এ যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনী সাময়িকভাবে পলায়ন করে, যা ছিল ১৫০ বছরের মধ্যে ব্রিটিশদের সুস্পষ্ট পরাজয়।
১৯৩৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি গৈরলা গ্রামের এক বাড়িতে নিকটাত্মীয়ের বিশ্বাসঘাতকতায় গ্রেফতার হন সূর্যসেন। ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।