মে ২৪,'১৩ইং
যেমন যেমন পরীক্ষার দিনগুলো এগিয়ে আসছে, আমাদের ক্লাস ফাঁকি দেয়ার প্রবনতাটাও বাড়ছে। আমাদের এখানের নিয়মটা হলো মূল পরীক্ষার একেবারে দুতিন দিন আগ পর্যন্ত টানা ক্লাস চলে, তিন মাসের শর্ট কোর্সে ছয় মাসের সারপদার্থটুকু গিলে খাওয়াবার ব্যবস্থা, তাই সময়টা এমনিতেই আমদের কম থাকে, তার উপর প্রথম দুই মাস সপ্তাহে মূলত গড়ে তিনদিন ক্লাস থাকলেও শেষের মাসটা হপ্তায় ছয়দিন -সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা। তারপর মানুষজনের আছে নিজের নিজের পার্ট টাইম জব, কারো কারো বেলায় যা টিকে থাকার বাধ্যবাধকতায় বিশ ঘন্টার সময়সীমাকেও পেরিয়ে যায়। অতএব পড়ার টাইমটা বের করা হয় এই ক্লাস ফাঁক মারার সময়টুকুতেই।
ক্লাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমান উপস্থিতি তো থাকা লাগে আর সেটা মাপা হয় নামের পাশের টিক চিহ্নের সংখ্যা গুনে।
অনেকেই নিজে না এসে বন্ধু বান্ধবদেরকে বলে দেয় নামের সাথের ঘরটায় একটা কলমের খোঁচা মেরে দেবার জন্য।
পাকিস্তানি এহসান যেমন এরকমই একজন, তাকে দেখলাম কয়েকদিন ক্লাসে ঢুকে এটেনডেন্স দিয়েই বাইরে এসে আড্ডা মারছে। জিজ্ঞেস করে জানলাম, সে এখন নিজেরটা দেবার সাথে সাথে অন্য বন্ধুর জন্যেও প্রক্সি দিচ্ছে, যার জন্য দিচ্ছে সে আসেনি- পড়া নিয়ে ব্যস্ত। বাকি সামনের কয়েকটা দিন আবার সে নিজে আসবে না, তার আজকের অনুপস্থিত বন্ধু ঐসময় এহসানের হয়ে প্রক্সি দেবে।
যতটুকু পার্সেন্টেজ থাকতেই হবে, ওটা না থাকলে বিপিপি থেকে মেইল যায়,নানা ঝামেলা করে- সেটার ব্যাপার ত আছেই।
তাছাড়া প্রতি সেমতে তিনটা কোর্স আমাদের নেয়া বাধ্যতামূলক হলেও পরীক্ষা আমরা ইচ্ছে করলে চাই কি একটা ও দিতে পারি। এবং আমর পরিচিত বেশীরভাগকেই আমি একটা দুটোই দিতে দেখেছি। নিজে কাজ টাজ করে সব কুল রক্ষা করে তিনটা ম্যানেজ করা মুশকিলও বটে। তিনটা নিয়ে একটাতে পাশ করার বদলে দুটা নিলে বরং ওদুটাতে কিছু বেশী মনোযোগ দেয়া যায়, তাতে অন্তত ঐগুলোতে পাশ করার সম্ভাবনা বেশী থাকে। বাকিগুলো অবশ্যই আবারও রিপিট নিতে হলে উপস্থিতি ভালো থাকা চাই।
তা হলে কোর্সপ্রতি কিছু কম দিয়ে পুনর্বার নেয়া যায়। এইসব বিবিধ কারনে আমরা উপস্থিতিতে বেশ সজাগ থাকার চেষ্টা করি।
সবার বেলায় আমাদের জানা রাস্তা ভালো কাজে দেয় না,কিছু কিছু টিচার শুরুতেই এটেনডেন্স নিয়ে নেন, তো কারো আবার শেষে নেয়ারও রেকর্ড আছে এবং তা নিজে স্টুডেন্টের কাছে গিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থেকে। যখনই নেন, একবার দিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গিয়ে কফির কাপে ঝড় তোলা আড্ডাই জমাই কি কম্পি্উটার ফেসবুক খুলে চ্যাট বা ঘোরাঘুরি করি কিংবা বই খুলে ভালো মানুষের মতো পড়াশোনা- এতে ওদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু একজন স্যারের বেলায় হলো মুশকিল।
উনি পণ কেরছেন তাঁর ক্লাসের আগাগোড়া সব্বাইকে উনি উপস্থিত রাখবেন, তাই কখনো শুরুতে উপস্থিতি নেন তো কখনো শেষে, নির্দিষ্ট প্যাটার্নলেস ভাবে। তাও আবার একজনেরটা অন্যজন মেরে দেয়ার কোন উপায়ও নেই, শিটের টিক চিহ্নের সাথে উনি মাথা গনে মিলিয়ে নেন।
তা যাই হোক শিক্ষক চলেন ডালে ডালে তাঁর সাগরেদ চলে পাতায় পাতায়, আমর করলাম কি অ্যাটেনডেন্স নেয়া শেষে যখন উনি শিট জমা দি্তে বের হয়ে যান তখন আমার চুপি চুপি উনি ক্লাসে ফিরে আসবার আগেই বের হয়ে যাই। কিন্তু একবার এরকম পলায়নের সময় ধরা পড়ে গেলাম। আরেকজনকে উনি ধরলেন লিফটে।
সে বেচারা কাঁধে ব্যাগসমেত একেবারে বমাল গ্রেফতার দারোগার হাতে। ভেবেছিল , উপস্থিতির পাতা তো নিশ্চিত ,এখন চলে যাবে। কিন্তু লিফটে পড়বি তো পড় একেবারে বাঘের খপ্পরে।
তো আমদের রসিক শিক্ষক জিজ্ঞেস করলেন , 'তুমি কি আবারও ক্লাসে আসবে না? কেননা যদি না আসো নো প্রবলেম, শুধু তোমার নামটা আমাকে দিয়ে যাও। '
ছাত্র বেচারা আর কি করে, সে সজোরে জবাব দিল,' না না স্যার আমি আবারও আসছি।
এই একটু কাজে বাইরে যাচ্ছিলাম। স্যার ,আবারও ফিরে আসবো আমি। '
স্যার এই ঘটনাটা ক্লাসে এসে আবার রসিয়ে রসিয়ে আমাদের কাছে বললেন। তারপর থেকে তার মনিটরিং আরও কড়া হলো। কেউ ক্লাস থেকে বের হলে তিনি নাম নিয়ে নেন ও পরে ফিরে আসলে তবেই তার নামটি উপস্থিতির শিটে বহাল থাকে, নইলে না।
মজার ব্যাপার হলো এই ক্লাস ফাঁকিবাজদের চেহারা তার শেষতক মনে ছিল আর তাই শেষ যেদিন স্টুডেন্ট রিভিউ নেয়া হয় ঐদিন রিভিউ -এর শিট তিনি ফাঁকিবাজদেরকে দেননি। তাঁর বুঝি ভয় ছিল যদি ওরা তাঁর উপর ক্ষেপে গিয়ে খারাপ রিমার্ক করে!
আমাদের এখানে ক্যাম্পাসে আটটা সাড়ে আটটা পর্যন্ত থাকা যায়। এরপর আমাদের রিসিপশনের বিশালদেহী হাসিখুশী কালো লোকটি এসে জানায়, 'আর মিনিট পনের পরেই সব ক্লোজ করা হবে। '
পরীক্ষার সময়ে কাছিয়ে আসছে- তাই ক্লাস, বাইরের বসবার স্থান, নিচের ক্যাফেটেরিয়ার মত একটা জায়গা, সবগুলো এখন পরীক্ষার্থীদের দখলে।
বই পত্রের মাঝে বসে থাকলেও সারাক্ষণই যে আমরা খুব পড়াশোনা করি-তা ত নয়।
আমি মূলত বসি ছয়তলায়- একদিন পাঁচতলায় নেমে দেখি আমাদের ক্লাসের একমাত্র কালো বন্ধুটি নেটে একগাদা ব্রাইডাল গাউন দেখায় ব্যস্ত। শুনলাম সে নাকি মাসখনেক বাদেই বিয়ে করছে। এখন ডিসকাউন্টে বিয়ের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে তাই আগেভাগেই কিনে রাখার ইচ্ছা তার। বরের ছবি দেখলাম, থাকে জিম্বাবুয়েতে, পড়াশোনা শেষে মেয়েটি তার বরের কাছে গিয়ে সংসার পাতবে।
আমি ফান করে বললাম,' তুমি যে একা একা নিজের বিয়ের পোশাক ঠিক করে ফেলছো, তোমার হবু বর তো কি ওটা পছন্দ করবে? সে দেখবে তোমার পছন্দ করা ড্রেস থেকে খুঁত বের করবে।
'
সেও প্রাণখোলা হেসে জানালো, তা তো ঠিকই, তবে ডিসকাউন্টের সুযোগটা সে নিতে চায়।
এখনে বলে রাখি বিলেতে জিনিসপত্রের কেনাকাটায় এই সেল শব্দটা বেশ গুরুত্বপূর্ন। আজ যা বিশ পাউন্ড , কদিন পরেই তা অর্ধেক হয়ে নেমে আসে দশ পাউন্ডে। দেখতে দেখতে এখন এতই অভ্যস্ত হয়ে গেছি, যে কোন কিছু পছন্দ হলেও অপেক্ষায় থাকি কখন ওটাতে সেল দেয়া হবে, কেননা মধ্যবিত্ত পরিবারের আমি শুধু তখনই ওটা কিনতে সক্ষম হই। আমার সহপাঠিনী যে এই সেলের সুযোগ নিতে চাইবে তাতে আর অবাক হবার কি আছে।
এই কৃষ্ঞাঙ্গ মেয়েটি ভারি অদ্ভূত। কালোরা বেশ স্টাইলিশ হয় সাধারনত, কি চুলের সজ্জায় কি পোশাকে রঙের বাহারে। মেয়েটার মাথায় ছিল বড় বড় চুল তাতে অযুত বেনী-পার্লার থেকে করানো। সে বললো যা ওটা করাতে তার দুশ পাউন্ডের উপরে লেগেছে। সময় লেগেছে কয়েক ঘন্টা।
খুব যত্নে পরিষ্কার করতে হয়, চুলের ঐ বিন্যাস নষ্ট না করে এবং তা থাকবেও মাস কয়েক পর্যন্ত। অবাক হয়ে দেখলাম কিছুদিন পরই ওর চুলের রাশি গায়েব , ছোট ছোট বয়কাট চুলে আমি তো ওকে শুরুতে চিনতেই পারি নি-ভেবেছিলাম অন্য কেউ। ভুল ভাঙলো পরে। সে আবার তার ঐ ছোট চুলে লালচে সোনালী রংও করেছে। আমাকে বললো তার কয়েকটা ছবি তুলে দিতে।
নানা ঢংয়ের ছবি,কয়েকটাতে সে হাতে ফোন নিয়ে কথা বলছে।
আমি বললাম',তুমি এ সব ছবি তুলছো তোমার নতুন হেয়ারস্টাইল তোমার বন্ধুদের দেখানোর জন্য ,তাই না? '
সে অবাক খুশিতে হেসে বললো ,'আরে সত্যিই তাই, কিভাবে বুঝলে?'
শেষের দিকের মোটামুটি নিয়মিত পড়ুয়াদের মাঝে একজন পাকিস্তানি ইরাম। পড়ার স্বগৃহীত ব্রেকের মাঝে ওর সাথে কথা জমলো আমার আর একই রুমে পড়ুয়া এক ভারতীয় মেয়ের। প্রায় চার বছর হলো ওর বিয়ে হয়েছে, তারপর নানা ঝামেলায় পড়ায় ছেদ পড়েছে, তাও বাবার কথায় আবার পড়া শুরু করেছে সে। এখন আর মাত্র একটা কোর্স বাকি তার, তাহলেই এসিসিএ-র যন্ত্রনাময় বোরিং পড়াশোনার কারাগার থেকে তার চিরমুক্তি।
জানতে পেরে বেশ ঈর্ষান্বিতই হলাম আমরা। ধরে বসলাম ওকে কিছু সাজেশানের জন্য, অমুক অমুক জটিল সাবজেক্টের বৈতরনী কিভাবে পার হওয়া যায়!
একাকী পড়ার সময়টায় সবচেয়ে বেশী বোধ হয় আমার দেখা হয়েছে ফিলিপিনো মেয়ে রোজেলের সাথে। দুইজন দুই ভিন্ন বিষয়ের পড়া নিয়ে আ্যাকা্উন্টিং এর গোলকধাঁধার পথ খুঁজে ফিরি- আর ফাঁকে ফাঁকে কুশল বিনিময় করতে করতে আমাদের চেনাশোনা। ওকে বেশ কমবয়সী দেখায়।
শুনে তাই বেশ ধাক্কাই খেয়েছিলাম- ওর বয়স বেশ ভালোই , তার উপরে একটা চার বছরের একটা মেয়েও নাকি আছে।
দ্বিতীয় ধাক্কাটা আরও বড়- শুনলাম ওর বিয়ে হয়নি , বয়ফ্রেন্ড আছে, সেই ওর নিজ দেশে বাচ্চাটার দেখশোনা করছে।
এখনকার ওযেদারের কোন ঠিকঠিকানা নেই, একদিন বেশ প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়ে গেল- ঠিক আমাদের বাংলা দেশের মতই। পড়াশোনায় মন বসছে না - আপেল খেতে খেতে বাইরের ঝড়ো তান্ডব মনকে পেছনের দিকে নিয়ে গেল, প্রলয়ের মাঝেও এক সৌন্দর্য বুঝি আছে-নিরাপদ বলয়ের মধ্য থেকে অনিমেষ তাকিয়ে তার গর্জন শোনা যায়, বাইরের বিরাট বিরাট গাছপালাগুলো দুলে দুলে বাঁকা হয়ে যাচ্ছে বাতাসের দমকে দমকে।
মনে পড়লো বাংলাদেশেও এটা এখন কালবৈশাখীর মৌসুম-আর ওখানে এটা অনেক মানুষ সাধারনত আমার মত নিশ্চিন্ত উপভোগ করতে পারে না, কত সময় মাথার উপরের চালটুকুনের ভরসাও থাকে না,মানুষ এমনকি গৃহহীনও হয়ে পড়ে। ঝড়বৃস্তিতে আমদের মানুষের কি অসহায়ত্ব!
দুদুটো ভয়াবহ ঘটনা খুব অল্প সময়ের ব্যাবধানে ঘটে গেছে,দুটার তুলনা হয় না আর কোন দিকেই - মিলটা শুধু মানবিক বিপর্যয়ে এ-বং দুটোই মনুষ্যসৃষ্ট।
একটা অবশ্যই আমাদের রানা প্লাজার ট্রাজেডি । বিদেশের মাটিতে বসে আমার বিজাতীয় বন্ধুরাও এই একটা ঘটনার কথা জানতে পেরেছে, বলেছে খুবই দুঃখজনক একটা ঘটনা এটা, এখানের পেপারেও এসেছে বেশ বড় আকারে। সাথে বাংলাদেশের সাথে কি পলিসি হবে ভবিষ্যতে তার ব্যাপারে নানা মুনির নানা মতবাদ। দেশেও আমরা যে নিজের দেশ সম্পর্কে খুব উচ্চাশা রাখতাম বা প্রতিদিন খুব ভালো কিছুর আশা করতাম -স্বপ্ন দেখতাম তা নয়, কিন্তু এই হাজার মাইল দূরে বসে যখন দেশ সম্পর্কে শুধু নেতিবাচকে খবরগুলো- দূর্যোগ- প্রকৃতি ও মনুষ্য নির্মিত চারপাশে শোনা যায় তখন কষ্ট আরো বহুগুনে বাড়ে-নিজের হতভাগা দেশর জন্য। একটা পজিটিভ কিছু শোনার জন্য মন আকুল হয়।
আমাদের মন্ত্রী- মিনিস্টাররাও হররোজ কেউনা কেউ আসছেন যাচ্ছেন দেশে বিদেশে -তারা কেন এই অগৌরব বুঝতে পারেন না-এই গ্লানি , এই আকাংখাটা অনুভব করেন না ? কোন খারাপ কিছু ঘটলেই ভাবমূর্টির দোহাই পাড়েন। শব্দটার অর্থ বা তাৎপর্য তারা আদৌ বোঝেন বলে ত মনে হয় না। আর যে কোন কিছুতে বিরোধীদলের উপর সরকারের দোষারোপ হচ্ছে চিরন্তন অনিবার্য ঘটনা। বালুতে মাথা গুজে থাকলেই বা অন্ধ হলেই ত প্রলয় বন্ধ থাকে না আর জেগে জেগে যারা ঘুমায় তাদেরকে কিছুতেই জাগানো যায় না।
দ্বিতীয় যে ঘটনাটির প্রসংগে আসছি-একেবারেই ছোট -প্রথমটির ব্যাপকতার তুলনায়-এখানের অভ্যন্তরীন একটা হত্যাকান্ড- কিন্তু একেবারে তুচ্ছ ব্যাপার নয়-বিশেষ করে আমদের - মুসলমানদের জন্যে।
একটা ব্রিটিশ সৈনিককে প্রকাশ্য প্রথমে গাড়ি দ্বারা আঘাত করে তারপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে- একেবারে খুল্লামখুল্লা। কোন ঢাকা ঢাকি নেই। খুনিরা মহানন্দে অস্ত্র হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ' পোজ' দিয়েছে, রক্তরাঙা টকটকে লাল ছুরি হাতে ঘাতকের উল্লম্ফন দেখে ভীতিটা ব্রিটিশ আমজনতার চেয়ে আমদের কম নয়- কেননা, খুনি দুজনের ভাষ্যমতে এটা হচ্ছে অত্যাচারিত মুসলিমদের পক্ষ থেকে পশ্চিমাদের প্রতি বদলা। এ ধরনের বক্তব্য নিয়ে যে কোন হামলা আমদের কে পৃথিবীতে আরও বেশী পরিমানে টেররিস্ট করে তোলে- যা মুসলিমদের প্রতি যেকোন আগ্রাসনকে আরও বেশী জায়েজ করে তোলে মানুষের কাছে। আমদের আতঙ্কের কারনটাও এইখানেই।
তবে সবার মতামত একরকম নয়, যুক্তিও আছে তদের কথায়। একজনের মুখে শুনলাম' একজন ঘাতকের ভাই এক সাক্ষাৎকারে বলেছে ,একবার একটা কাজের সহায়তার জন্য পুলিশ কোন একসময় তার ভাইয়ের খোঁজ করেছিল।
তাই এটা মোটেই অসম্ভব নয় যে পুরো ঘটনাটা আসলে পুলিশের সাজানো, তাদের প্রিপ্লানড একটা মার্ডার।
এটা আসল না নকল ত একমাত্র আল্লাহ্ই জানেন।
তবে পশ্চিমা বিশ্ব আজ পর্যন্ত সাদ্দাম , অস্ত্র সম্পর্কিত ভুয়া তথ্য প্রচার, আফগানিস্তান, ইরান ইরাক, সিরিয়া সহ মুসলিম দুনিয়ার প্রতি যে পরিমান আগ্রাসন ও অপপ্রচারের 'ক্রুসেডে' নেমেছে তাতে ওদের কথায় চোখ বুজে বিশ্বাস করার মত মানুষ আর এখন নেই।
আমাদের ক্যাম্পাস থেকে নেটে কাগজ পড়ি আমি। হাজারো খবরের ভিড়ে নেতি নিউজ গুলো মনকে ভারাক্রান্ত করে ফেলে বার বার।
বিপিপির দরজা দিনের মতো বন্ধ হবার পর বাড়ির দিকে রওনা দেবার পালা। গন্তব্যের মাধ্যম বাস। বাসের জন্য দাঁড়াবার জায়গাটার মাঝে পড়ে টিউব স্টেশনটা।
তাতে প্রায় দিনই নানা নাম না জানা পথ গায়ক গান গেয়ে বা গিটার বাজিয়ে বিনোদন জোগায়। তাদের সামনে রাখা পয়সা ফেলার জায়গাটাও ভরে ওঠে ধীরে। সারাদিনের ক্লান্তি, সব অশুভ খবরের স্মৃতি ম্লান হয়ে যায় নিমেষেই-পথ গায়ক বটে, তাই বলে এদের প্রতিভা তো কম নয়। সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে পড়ে সামনের বিস্তীর্ন চত্বর জুড়ে। আমার বাস, ২৩৭ নম্বর আসতে মাঝে মাঝে বেশ দেরী লাগায় কিন্তু বিরক্তির বদলে মন যেন একধরনের প্রশ্রয় দেয় এই প্রতীক্ষাকেই।
হালকা শীত এখনও আছে,সন্ধ্যার দিকে এখনও অনভ্যস্ত আমাকে মন্দ ভোগায় না কিন্তু পরিবেশ উষ্ঞ করে তোলে সাঁঝবেলার দক্ষ সুরেলা মানুষগুলো। বাস একসময় এসে থামে স্টপেজে, কে জানে তখন মন জুড়ে কোন অংশটুকু বেশী থাকে- এই সুরের ঝঙ্কারে আরও একটু ক্ষন অবগাহন না করার আফসোস, নকি হোম সুইট হোম এ আজকের দিনকার মত ফিরে যাওয়ার তাড়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।