সোমবার সকালে বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ঠিক করে দেয়।
শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন হৃষিকেশ সাহা ও সৈয়দ হায়দার আলী। আর আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও তাজুল ইসলাম।
রোববার দুপুরে গ্রেপ্তারের পর বিকালে এই জামায়াত নেতাকে বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের চেম্বারে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে বিচারক সোমবার শুনানির দিন রাখেন।
রোববার প্রসিকিউশনের অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউসুফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ধানমণ্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদস্যরা। পরে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৫টি অভিযোগে গত ২২ এপ্রিল ইউসুফের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় প্রসিকিউশনের তদন্ত দল।
এরপর গত ৫ মে ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে প্রসিকিউশন।
এসব অভিযোগের মধ্যে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাও রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধকালে রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা এ কে এম ইউসুফ প্রায় ৭০০ জনকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ৩০০ বাড়ি ও ৪০০ দোকান লুটের পর অগ্নিসংযোগ এবং ২০০ হিন্দুকে ধর্মান্তর করার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশে পাকিস্তানিদের গঠিত কথিত মালেক সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ইউসুফ এক সময় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্বও পালন করেছেন। বর্তমানে দলের নায়েবে আমির তিনি।
একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে হত্যা-লুণ্ঠনে সহায়তা দেয়ার জন্য গঠিত সশস্ত্র বাহিনীর ‘রাজাকার’ নামটি তিনিই চালু করেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান।
সেই সময় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির নির্দেশে এ কে এম ইউসুফ নিজে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে বৃহত্তর খুলনা জেলায় (খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট) শান্তি কমিটি গঠন করেন। পরে মহকুমা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে জামায়াত ও মুসলিম লীগের সদস্যরাসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করেন তিনি।
বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯৬ জনকে নিয়ে তিনি খুলনার আনসার ও ভিডিপি ক্যাম্পে সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। ওই অঞ্চলের শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের নেতৃত্ব দেন।
জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের নেতা, বৃহত্তর খুলনার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ও মন্ত্রী হিসেবে ইউসুফ পাকিস্তানি সেনাদের বিভিন্ন নির্দেশনা ও পরামর্শ দিতেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউসুফ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, পরামর্শ ও প্ররোচনায় খুলনার বিভিন্ন এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ সংঘটিত হয় বলে তদন্ত কর্মকতারা জানিয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।