আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্ণ ধর্ম মানুষ



আমি দাঁড়িয়ে আছি লেইক ইরির উত্তর প্রান্তে, দক্ষিণ প্রান্তে দেশটি আমেরিকা । লেইক ইরির মাঝ বরাবর দুদেশকে ভাগ করা হয়েছে। অন্যান্য বিশাল লেইক গুলোর মতন বিস্তির্ণ নয় ইরি অনেকটাই নদীর মতন বয়ে চলেছে সুপেয় জলের ধারায়। বিশেষ বৈশিষ্ট এর জলে মাছের বসবাস। আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখান থেকে চোখের আঙ্গিনায় সুষ্পষ্ট ওপারে ডেট্রয় শহরের সুদৃশ্য দালান গুলি ।

ক্যামেরার লেন্স জুম করে হাতের ছোঁয়ার মাঝে নিয়ে আসা যাচ্ছে অন্য দেশের সব ঘর বাড়ি। দেখা যাচ্ছে ঘরের ভেতর মানুষের চলাচল। জলের মাঝে সাঁতার কাটছে মাছ, অনায়াসে করছে এপার ওপার। জলের উপর বাতাসে উড়ছে পাখি উড়ে যাচ্ছে ইচ্ছা মতন দেশ থেকে ওদেশ। নাহ্ কোন বাধা নিষেধের বালাই নেই ওদের জন্য শুধু মানুষের জন্য সব বাঁধা নিষেধ।

আনন্দ করার জন্যও যারা ভাসছে জলে নিজস্ব নৌকায়। ভুল করেও যদি সীমানা লঙ্ঘন করে ফেলে তবে তাদের দিতে হবে তার খেসারত। মানুষের জন্য যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল। জন্ম সুত্রে মানুষ হয়ে যায় পরিবার, বর্ণ, ধর্ম, দেশ ও জাতীর মানুষ। কোথায় কিভাবে জন্ম নিবে কোন মানুষ কেউ কী জনে? নিজের জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না মানুষ অথচ জন্মের বড়াই এত বড় হয়ে উঠে কেন তাদের কাছে? ধনীর ঘরে জন্মেছে বলে গরীবকে মানুষ না ভাবা।

ইংলেন্ডের মানুষ সাদা চামড়ার বড়াই করে এক সময় আর সব মানুষকে তুচ্ছো তাচ্ছিল্য করে গেছে। সারা পৃথিবীর মানুষের উপর করেছে অমানবিক অত্যাচার। তারা যদি আফ্রিকায় কালো বর্ণ নিয়ে জন্ম নিতো তা হলে কী হতো? আমেরিকানরা আফগানীস্থানে! কতজন মানুষ নিজে ভেবে চিন্তে পরিবর্তন করেছেন ধর্ম? গ্রহণ করেছেন নিজের ধর্ম? ইহুদী খৃস্টান, হিন্দু মুসলিম, জৈন বৌদ্ধ, আরো যত গোত্র বর্ণ সবই তো প্রতিটি মানুষের নিজেদের জন্ম সূত্রে পাওয়া। ব্রাক্ষ্মণ যদি ডোমের ঘরে জন্ম নিত বা ইহুদী যদি মুসলিম ঘরে জন্ম নিত, ক্যাথলিক হিন্দু হয়ে জন্ম নিত তাহলে তারা কী একই রকম আচরণ করতো না? মানুষ আগে না ধর্ম আগে? জীবন আগে না নিয়ম আগে? ধর্মের বড়াই নিয়ে মারা মরি, কে দিয়েছে সে অধিকার? হিটলারের অমানবিকতা ইহুদীদের উপর, বর্বর অত্যাচার এখনো শিউরে উঠে স্মরণ করে সেই সময়ে অত্যাচারিত মানুষ। আপন মাটি থেকে উচ্ছেদ করে নিয়ে আসা কালো মানুষ, গরু ছাগল ভেড়ার মতন বিক্রি হলো অন্যদেশে, পরিণত করতে চাইল অন্যদের হুকুমের রোবট।

ক্ষেতি জমি আবাদের জন্য তুলে আনা হলো ভারতের লোক মুনুষ্য বিহীন দ্বীপে। বদলে দিয়েছে মানুষের জীবন যাপন যুগে যুগে শক্তিমানের হাত। শক্তিমানের হুকুমে জীবন দিয়েছে লাখ লাখ সৈনিক। এখন তারা ভাবে কেন তখন যুদ্ধ করে ছিলাম। অথচ এখনও যারা যুদ্ধ, মারামারি করে যাচ্ছে তারা নিজেরা কী একবারের তরেও ভাবে কেন এই যুদ্ধ, নিরিহ মানুষ মারা? প্রতিটি মানুষ এই পৃথিবীর মানুষ সবার অধিকার এই পৃথিবীর উপর সমান।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।