আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ধ্বংশের পায়তারা

thanks all over

শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানকে ধ্বংশের পায়তারা করছে মার্কিন তেল ক্ম্পোানী শেভরন। বাংলাদেশের নৈসর্গিক ও রেইন ফরেষ্ট লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আবারও গ্যাস কূপ খনন করার জন্য জোর তদবির ও চেষ্টা চালিয়েছে মার্কিন কোম্পানী শেভরণ। মার্কিন কোম্পানীর লেভেল পাল্টিয়ে শেভরন বাংলাদেশ নামে পরিচিতি দিয়ে জাতীয় উদ্যান ধ্বংশের পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে ওই বিদেশী কোম্পনী। শেভরনের এমন উদ্যোগে পরিবেশবাদিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিবশেবাদীরা মনে করছেন মার্কিন কোম্পানী গ্যাস কূপ খননের নামে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানকে ধ্বংস করে দিবে।

যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি ও বিদেশী পর্যটকরা আসেন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন। তাছাড়া বিরল প্রজাতির বন্যপ্রানীর আবাসস্থলও চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে শেভরনের উর্ধতন কর্মকর্তারা সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের বৈঠক করেছেন বলেও জানা গেছে। একাধিক সূত্র জানায়, স¤প্রতি পেট্রোবাংলায় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেভরনের কর্মকর্তাদের এক বৈঠক হয়েছে। মার্কিন এ কোম্পানি জানিয়েছে, গত ২০০৮ ও ২০০৯ সালের প্রথমার্ধের ত্রিমাত্রিক সার্ভের ফলাফল ইতিবাচক।

আগামী মাসের (এপ্রিল) মধ্যে জরিপের চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এরপরই কূপ খননের কর্মসূচি বাস্তবায়নের বাজেট পেট্রোবাংলার কাছে পেশ করা হবে। বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আশ্রয়স্থল লাউয়াছড়ায় ২০০৮ সালে মার্কিন তেল কোম্পানি শেভরন সিসমিক সার্ভে করে। সেই জরিপের ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে বলে শেভরনের কর্মকর্তারা পেট্রোবাংলাকে জানিয়েছেন। তবে কূপ খনন না করা পর্যন্ত গ্যাস পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

শিগগির বিদেশী এ তেল কোম্পানি কূপ খননের পরিকল্পনা সরকারের কাছে পেশ করবে। শেভরণ কর্মকর্তারা দাবী করেছেন লাউয়াছড়া বনের নিচে গ্যাসের ভাণ্ডার পাওয়া যেতে পারে। লাউয়াছড়ায় গ্যাস পাওয়া গেলে সেটি মৌলভীবাজার েেত্রর অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। মৌলভীবাজার জেলার মাগুরছড়া গ্যাস েেত্রর পাশে ২০০৮ সালের শেষে এবং ২০০৯ সালের শুরুর দিকে শেভরন লাউয়াছড়া বনে ১৫০ বর্গকিলোমিটার সিসমিক সার্ভে করে। ১৪ নম্বর ব্লকভুক্ত েেত্রর পাশেই লাউয়াছড়া ইকোপার্ক।

বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর কলকাকলি দেখতে দেশী-বিদেশী পর্যটক বনটিতে ভিড় করেন। এ ত্রে আবিষ্কৃত হয় ১৯৯৭ সালে এবং এটিতে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস আছে ৩৫৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। ইতিমধ্যে এ মজুদ থেকে ১৩৫ বিসিএফের বেশি গ্যাস উত্তোলন করা হয়ে গেছে। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালের শুরুর দিকে লাউয়াছড়ায় সিসমিক জরিপকালে গুরুত্বপূর্ণ বনটি থেকে অনেক প্রাণী অন্যত্র চলে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে। তখন এটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্দোলন করেছিলেন পরিবেশবাদীরা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেছেন, শেভরন ১৪ নম্বর ব্লকে মাগুরছড়া কূপের বিস্ফোরণের তিপূরণ না দিয়ে লাউয়াছড়ায় কূপ খননের পাঁয়তারা করছে। এ কূপ খননের আগে মার্কিন এ তেল কোম্পানির কাছ থেকে মাগুরছড়ার ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকার তিপূরণ আদায় করার উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। ১৯৯৭ সালের জুনে মার্কিন তেল কোম্পানি অক্সিডেন্টাল কূপ খননের সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণে ২৪০ বিলিয়ন ঘনফুটেরও বেশি গ্যাস পুড়ে যায়। অক্সিডেন্টালের কাছ থেকে এবং পরে ইউনিকলের কাছ থেকে শেভরন বাংলাদেশের সব শেয়ার কিনে নেয়।

গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ এ তিপূরণ পায়নি। পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, জরিপের ফলাফল ইতিবাচক হওয়ার আভাস দিয়েছে শেভরন। কিন্তু জরিপের চূড়ান্ত ফলাফল এবং কূপ খনন না করা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন শেভরন চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর অথবা ২০১১ সালের জানুয়ারিতে লাউয়াছড়ার নিচের সম্ভাবনাকে বাস্তব করতে কূপ খনন করার কাজ শুরু হবে। তবে বনের ভেতরে কোন কূপ খনন করে বনের কোন তি করা হবে না বলে জানিয়েছে শেভরন।

বনের বাইরে থেকে আড়াআড়িভাবে কূপ খনন করে গ্যাসের স্তরে পৌঁছানোর পরিকল্পনা শেভরনের আছে। এদিকে জ্বালানি মন্ত্রণালয় গত ৪ মার্চ জালালাবাদ েেত্রর বাইরে আরও ৭৫ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার শেভরনকে বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে। এজন্য শেভরনের সঙ্গে ১৩ নম্বর ব্লকের (যার আওতায় জালালাবাদ ত্রে) পিএসসির (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) সম্পূরক চুক্তি করতে বলা হয়েছে। পেট্রোবাংলা গত বছর সম্ভাবনাময় জালালাবাদ েেত্রর বাইরের ৭৫ কিলোমিটার এলাকা শেভরনকে বরাদ্দ দেয়ার সুপারিশ করে। পেট্রোবাংলার অনুমোদনের বিরোধিতা করেছে দেশের বিভিন্ন সংগঠন।

তেল-গ্যাস রা কমিটিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন এর আগেও বলেছে, একটি দুর্নীতিবাজ চক্র দেশের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দিতে এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.