অনুবাদ: আবু শুআইব মুহাম্মাদ সিদ্দীক
সূত্র : http://www.islamhouse.com
শান্তি, দয়া ও করুণার ধর্ম ইসলাম কখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অনুমতি দেয় না। আল কুরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ইরশাদ হয়েছে : দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দেয় নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন। [আল কুরআন - ৬০:৮]
সমগ্র পৃথিবীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরিত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সৈন্যদেরকে নারী, শিশু ছোট-বাচ্ছা, বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিদের প্রাণনাশ করা থেকে বারণ করেছেন। [দ্রঃ: আবু দাউদ:২৬১৪] মুসলমানদের সাথে চুক্তি রয়েছে এমন ব্যক্তিকে যে হত্যা করবে সে বেহেশতের সুগন্ধ পর্যন্ত পাবে না বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।
যদিও এর সুগন্ধি চল্লিশ বছর হাঁটার পথের দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়। ‘[দ্রঃ বুখারি: ৩১৬৬] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম অগ্নিদগ্ধ করে কাউকে শাস্তি দেয়া যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকী তিনি, একদা, মানব-হত্যাকে সমধিক বড় গুনাহের তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে উল্লেখ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এও বলেছেন যে, মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম ইনসাফ দেয়া হবে ঐ ব্যক্তিকে যাকে মারা হয়েছে হত্যা করে।
শুধু মানুষের প্রতি নয়, একজন মুসলমানকে, বরং, পশুপাখির প্রতিও দয়াবান হতে বলা হয়েছ।
এদেরকে কষ্ট দিতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জনৈকা মহিলাকে এই জন্য শাস্তি দেয়া হয়েছে যে সে একটি বিড়ালকে মৃত্যু পর্যন্ত আটকে রেখেছে। সে যখন বিড়ালটিকে আটকে রেখেছে, খাবার অথবা পানীয় থেকে তাকে বঞ্চিত করেছে। মুক্ত হয়ে পোকা-মাকড় খাবে এস সুযোগ থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি পিপাসিত একটি কুকুরকে পানি পান করিয়েছ, এর প্রতিদানে আল্লাহ তাআলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়,’য়্যা রাসূলাল্লাহ! আমরা জীবজন্তুর উপর দয়াশীল হলে কি আমাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে? প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন.’ সকল জীবেই ছাওয়াব রয়েছে। '
শুধু তাই নয় বরং মুসলমান ব্যক্তি তার আহারের প্রয়োজনে যখন কোনো জন্তু যবেহ করবে, যতদূর সম্ভব খুব অল্প ভীতিপ্রদর্শন ও সর্বনিম্ন কষ্ট পৌঁছিয়ে তা সম্পন্ন করার নির্দেশ এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’যখন তুমি জন্তু যবেহ করবে, উত্তম পন্থায় করবে, ব্যক্তির উচিত সে যেন যবেহ করার পূর্বে ভাল করে চাকু ধার দিয়ে নেয়; যাতে জীবের কষ্ট কম হয়। '
উপরে উল্লিখিত বাণীসমূহ ও অন্যান্য ইসলামী টেক্সটের আলোকে বলা যায় যে, নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে আতঙ্কিত করা, মানুষের সম্পদ ঘর-বাড়ি ও স্থাপনাসমূহ ধ্বংস করা, বোমাবাজি করে নিরপরাধ ব্যক্তি, নারী ও শিশুর অঙ্গচ্ছেদ ও পঙ্গু করা, এসবই শান্তিময় -দয়ার্দ্র-ক্ষমাপূর্ণ ধর্মের চিরায়ত আদর্শের বিপরীত। ইসলাম কখনোই এ ধরনের কার্যক্রম সমর্থন করে না।
বৃহৎ সংখ্যক মুসলামনদের কেউই এ ধরনের কার্যকলাপ মেনে নেয় না, নেয়া সম্ভব না। যদি কোনো ব্যক্তি নিজ থেকে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটিয়ে বসে, তবে ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করার অপরাধে সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে এবং ইসলামী শরিয়তের সুনির্ধারিত সীমানা অতিক্রম করে পাপীদের দলভুক্ত হয়েছে বলে ধরা হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিফাযত করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।