মনওয়ার সাগর
একুশ শতকে যে সমস্যাটি গোটা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে তা হচ্ছে ঞবৎৎড়ৎরংস বা সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসবাদ আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাসে নতুন কোনো ধারণা নয়। যুগ যুগ ধরেই এটি ক্ষমতার লড়াইয়ে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। সন্ত্রাসবাদ বর্তমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার এক অস্থিতিশীল উপাদান। এটা শুধু উন্নত বিশ্বে নয় উন্নয়নশীল বিশ্বেও অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করেছে। স্নায়ু যুদ্ধোত্তর বিশ্বরাজনীতিতে সন্ত্রাসবাদ অন্যতম হুমকি।
সন্ত্রাস শব্দটি ছোট হলেও এর ব্যপ্তি বিশাল। প্রকাশও নানা রূপে, নানা মাধ্যমে। বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র (টুইন টাওয়ার) ধ্বংসের পর সন্ত্রাসবাদের বিশ্বায়ন ঘটেছে এমন অভিমত অনেকেরই। যেন ভাবটা এমন আমেরিকার বিশ্ববাণিজ্য ধ্বংস সাধনের পর সন্ত্রাসবাদ একটা বিশ্বজনীন স্বীকৃতি পেল।
সন্ত্রাসের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- অতিশয় ত্রাস বা ভয়ের পরিবেশ।
বাংলা একাডেমী রচিত অভিধানের মতে মহাশংকা, অতিশয় ভয়, রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের জন্য হত্যা বা নির্যাতন ইত্যাদি বুঝায়, অর্থাৎ ব্যক্তিগত অথবা দলীয় আধিপত্য বিস্তারের জন্য পেশী শক্তির নগ্ন প্রয়োগ দ্বারা, মানুষকে হুমকি, ভীতি প্রদর্শন, মারধর, আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া ইত্যাদির সমষ্টিকেই সন্ত্রাস বলে।
Academic American Encylopaedia (1983) Gi g‡Z- Terrorism is the Calculated use of violent acts, or the threat of violent acts, to frighten People into submission.
Colleins English Language Dictionary Gi g‡Z- Use of violence specially murder, Kidnapping and Bombing is order to achieve political aims or to force a government to do something.
Chamber Dictonary Gi g‡Z- Terrorism A system of Government by terror, An organized system of intimidation specially for political ends.
Oxford Dictionary Gi g‡Z Terrorism use of violence for Political Purpose.
এতো গেল সন্ত্রাসবাদের আভিধানিক অর্থ। তবে সন্ত্রাসবাদের ধারণা, প্রকৃতি এবং সংজ্ঞা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে।
দৃষ্টি ভঙ্গির পার্থক্যের কারণে সন্ত্রাসবাদের প্রতি একেক দেশের প্রতিক্রিয়া একেক রকম। Brian Michael Jenseins ‘Terrorism in the ১৯৮০’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলেন-One mans terrorits is another man freedom fighter, তাই দেখা যায় চখঙ স্বাধীনতা আন্দোলনকারী সংগঠন হলেও তাকে ইসরাইল ও তার মিত্ররা সন্ত্রাসী হিসেবে দেখে থাকে।
তাই সন্ত্রাস শব্দের ব্যাখ্যা আপন আপন স্বার্থানুসারে। তবে ধারণাগত দিক থেকে সন্ত্রাসবাদের গঠন প্রায় একই রকম। যেমন নিরস্ত্র লোককে হত্যা করা, ছিনতাই, গুপ্ত হামলা, বন্দী, হিংসাত্বক কার্যকলাপ, ভয়ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি।
সন্ত্রাসবাদের ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে যে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য বিদ্যমান তা হল- সন্ত্রাসবাদ সভ্যতা ও বর্বরতার মধ্যে বিরাজিত লড়াই এবং এটি বিপদগামী কিছু লোকের চরম হিংসাত্মক কার্যকলাপের ফসল।
১৯৮৬ সালে টোকিওতে ৭ জাতি গ্র“পের শীর্ষ বৈঠকে গৃহিত ঘোষণায় এ ধারনার স্পষ্ট ব্যখা পাওয়া যায়- Terrorism has no justification, it is such a morally contemptible means of struggle that it is absolutely wrong in all circumstances. There are some governments which sponsor or support terrorism and more balant and cynical use of it. Terrorism must be fought relentlessly and without compromise.
যে কোন সন্ত্রাসী ঘটনার আকস্মিকতা ও প্রকৃতি দেখলে সহজেই সন্ত্রাসবাদকে সনাক্ত করা যেতে পারে।
সন্ত্রাসবাদের সর্বজন গ্রহণযোগ্য কোন সংজ্ঞা এখনও পর্যন্ত প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। কেননা ‘সন্ত্রাস’ ব্যাপারটা নানা ঐতিহাসিক কারণে ক্রমশ গুলিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষকগণ বিস্তর গবেষণা চালিয়ে তাদের স্ব-স্ব দৃষ্টিকোন থেকে সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা প্রদানের চেষ্টা করেছেন, সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে Brian Jenseins বলেছেন- Terrorism is the use or ahreatened to bring about political change. সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা আরও পরিষ্কারভাবে বুঝিয়েছেন- এভাবে Terrorism constitutes the illegitimate use of force of achieve political objective when innocent people are targeted, সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে- The Term Terrorism Premeditated, Politically motivated violence Perpetrated against non combatant targets by sub-national groups clandestine agents, usually intended to influence an audience অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদ কথার অর্থ- পূর্ব পরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিংসা, নিরস্ত্র (হড়হ-পড়সনধঃধহঃ) করার লক্ষ্যে উপজাতীয় বা গুপ্ত দালালদেও দ্বারা সাধারণ একদল মানুষকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত।
তবে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে গ্রহণীয় এবং আলোচিত সংজ্ঞা প্রদান করেছেন- মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ঋইও। ঋইও সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন-Terrorism is the unlawful use of force or violence against persons of property to intimidate or coerce a government, the civilian population or any segment there of in furtherance of political or social objectives.
অর্থাৎ সামাজিক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে কোন সরকার বেসরকারী জনগণ অথবা অন্য যে কোন অংশকে ভীতি প্রদর্শন বা দমানোর জন্য ব্যক্তিবর্গ বা সম্পদের উপর অবৈধ শক্তি প্রয়োগ বা সহিংসতা ব্যবহারকে সন্ত্রাসবাদ বলা হয়।
সুতরাং সন্ত্রাসবাদ হল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাধনের জন্য জনগণকে লক্ষ্য করে অবৈধভাবে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কোন দেশের সম্পদের উপর অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জনমনে আতংক সৃষ্টি করা।
সন্ত্রাসবাদের উদ্ভব ঃ ফ্রান্সে ১৭৮৯-৯৯ সালে ফরাসি বিপ্লব চলাকালীন সময়ে সন্ত্রাসবাদ বা ঞবৎৎড়ৎরংস শব্দটির উদ্ভব হয়। এ সময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু এবং জনপ্রিয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ঞযব জবমরসব উব খধ ঞবৎৎবঁৎ নামে একটি বিশেষ পরিষদ গঠিত হয়। কিন্তু ফরাসি বিপ্লবের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি এবং সহিংস কর্মকাণ্ডের জন্য এ পরিষদ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের হাতিয়ারে পরিণত হয়। ঠিক তখন থেকেই ঞবৎৎড়ৎ শব্দটি মানুষের মনে নেতিবাচক ধারনার জন্ম দিতে শুরু করে।
নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত থাকে তাদেরকে ঞবৎৎড়ৎরংঃ বলে আখ্যায়িত করা হয়। তবে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এ শব্দটি তেমন প্রসার লাভ করেনি। ঊনিশ শতকের শেষেরদিকে রুশ বিপ্লবীরা জার রাজবংশের শাসনের বিরুদ্ধে ঞবৎৎবঁৎ কে তাদের সহিংস সংগ্রামের উপায় হিসেবে গ্রহণ করলে ঞবৎৎড়ৎরংস বা সন্ত্রাস শব্দটি বিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। এরপর থেকে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে ব্যাপকভাবে সন্ত্রাসী ঘটনার সূত্রপাত করে। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে সন্ত্রাসবাদের সন্ধান মেলে খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে।
ইহুদী ধর্মাবলম্বীদের একটি গোষ্ঠী জিলট (তবধষড়ঃং) এ সময় বর্তমান ইসরাইলের ওপর রোমান আধিপত্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায়। দ্বাদশ শতাব্দীতে ইরানে অ্যাসাসিন্স (অংংধংরহং) নামে শিয়া স¤প্রদায়ের একটি সংগঠন সুন্নী স¤প্রদায়ভূক্ত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজকর্ম চালায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের মূল অনুপ্রেরণা ছিল ধর্ম। উনবিংশ শতাব্দী থেকে সন্ত্রাসবাদে অনেক বেশী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুসঙ্গ দেখা দেয়। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং ধর্মীয় সন্ত্রাস মিলে মিশে সন্ত্রাসবাদের নগ্ন কদর্য রূপের প্রকাশ ঘটেছে।
ধর্মীয় সন্ত্রাস বলতে ধর্মীয় মৌলবাদী সন্ত্রাসকেই বুঝানো হয়েছে, এই মৌলবাদী সবধর্মেই আছে।
যেমন- ভারতে গোধরা কাণ্ডে যারা ট্রেনের কামরা জ্বালিয়ে সাধারণ মানুষদের জীবন্ত দগ্ধ করে মেরেছে তারা যেমন সন্ত্রাসবাদী, গোধরা কাণ্ডের জের হিসেবে পরবর্তী সময়ে যারা গুজরাত জুড়ে প্রতিহিংসার দাবানল ছড়িয়ে জীবন্ত মানুষ মারছে, বাড়ীঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে তারাও সন্ত্রাসবাদী।
আর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস প্রসঙ্গে বলব ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রে বিমান হামলার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীরা আমেরিকার আকাশচুম্বী অট্টালিকার স্পর্ধিত অহংকারকে নিমেষে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার পর বুশ প্রশাসনের বিশ্ববাসীর কাছে আহবান এসেছে সন্ত্রাসবাদকে যে কোন মূল্যে পৃথিবী থেকে নির্মূল করতে হবে। হোক না তা নিরীহ মানুষ মেরে, তাদের আশ্রয় স্থল চুরমার করে দিয়ে। সন্ত্রাস নিমূলের নামে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বুশ প্রশাসন আফগানিস্তান, ইরাকে যে নৃশংস বর্বরতা চালিয়েছে, যুদ্ধ, গোলাগুলি, অগণিত বোমাবর্ষণের মাধ্যমে যেভাবে শিশু, বৃদ্ধ, নারীসহ বেসামরিক লোকজন হত্যা করেছে তাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছাড়া আর কি বলা যায়, সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের নামে পররাষ্ট্রের সমাজ সভ্যতার উপর অসি আস্ফালনের বিষয়টি কি সন্ত্রাসবাদের সমার্থক নয়?
Mare w. Herold তাঁর ‘The human cost of the war’ cÖe‡Ü (Front time, January, 18, 2002) ১৮, ২০০২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের নগ্ন চেহারার দু’একটি ধারণা দিয়েছেন-
Infect, a careful analysis of Published reports shows that Afganistan has been subjected to barbarous aerial bombardment, which has killed an average of 60 to 65 civilians a day since October 7, When the sunset on November 23, at least 3006 Afgan civilians had died in the U.S bombing attacks.
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদীদের শায়েস্তা করার নামে নিরীহ জনগণের উপর যেভাবে আক্রমন চালিয়েছে তা উল্লেখিত হয়েছে উক্ত প্রসঙ্গে- Infect, a careful analysis of Published reports shows that Afganistan has been subjected to barbarous aerial bombardment, which has killed an average of 60 to 65 civilians a day since October 7, When the sunset on November 23, at least 3006 Afgan civilians had died in the U.S bombing attacks.
সম্রাজ্যবাদীরা সন্ত্রাস দমনের নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ফলে শতশত নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুকে যুদ্ধের অঙ্গ বলে যতই বৈধতা প্রদান করার চেষ্টা হোক না কেন, মৃত্যুতো মৃত্যুই।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের নগ্ন কদর্য শরীরখানা কোন আবরণেই অবগুণ্ঠিত থাকে না। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয়-
‘The U.S Air force’s use of weapons with enormous destructive capability including fuel air bombs, B-52, Carpet booms, BIU 82 and CBU-87, Cluster bombs (Shown to be so effective at killing and mining civilians who happen to come upon the unexploded ‘bomb lets) – reveals the emptiness of its claim that the U.S. has been trying to avoid Afghan civilian causalities. ১৫. ২০০১) এ কথা অনস্বীকার্য যে সন্ত্রাসের মদদদাতা কিংবা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের লালনকর্তা হচ্ছে ধনতান্ত্রিক দুনিয়া ও সমাজতান্ত্রিক দুনিয়া, যাদের নের্তৃত্বে ছিল যথাক্রমে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়া। এই দুই মহা শক্তিধর দেশের মধ্যে চলেছিল ঠাণ্ডা লড়াই (ঈড়ষফ ধিৎ)। আপন আপন স্বার্থ সিদ্ধিলাভ, পেশি আস্ফালন প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে নানা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে সযতেœ লালন-পালন করে ব্যবহার করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম সংগঠন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার পর বিশ্ব যখন এক শিবিরে আত্মসমর্পন করল তখন যে সব সংগঠন গুলিকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছিল, ব্যবহার করা হয়েছিল তাদের উপড়ে ফেলে নিজের হাতে রাশ বা লাগাম টেনে ধরার প্রয়োজন পড়ল।
বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র ধ্বংশের পর ওসামা বিন লাদেনকে বিশ্বের সেরা সন্ত্রাসবাদী বলা হলেও ওসামাকে ‘ওসামা’ বা লাদেন করে তোলার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সহযোগিতা ছিল, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয়ের অবকাশ নেই। অন্তর্ঘাতের তালিম সে ওয়াশিংটনের মাধ্যমেই পেয়েছে। পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে আঙ্গুল নেড়ে পুতুল নাচিয়ে দেবার বিদ্যা সে বিদ্যাধরের কাছ থেকেই শিখেছে। ঠাণ্ডা যুদ্ধের (ঈড়ষফ ধিৎ) এর সময় ওসামা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাপেট’। মূলত সে সময় (আশির দশকের মাঝামাঝি) সোভিয়েত রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যখন রীতিমত চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে তখন সিনিয়র বুশ ওসামাকে তার ইচ্ছা পুরনের জন্য মুসলমানদের মিত্র শক্তির ভান করে ব্যবহার করেছিল।
তখন সোভিয়েত রাশিয়ার কবল থেকে আফগানিস্তানকে মুক্ত করার জন্য লাদেনপুত্র ওসামার মতো বেশ কিছু ‘ডিনামাইট’ তৈরী করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সবাইকে ছাপিয়ে ওসামা হয়ে উঠল ‘সুপার ডিনামাইট’। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতা ওসামাবিন লাদেনকে আল কায়দা সংগঠিত গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
সোভিয়েত রাশিয়ার ভাঙ্গনের পর এবং উপসাগরীয় যুদ্ধের পর পরিস্থিতি বদলে যায় সৌদি আরবের মাটিতে মার্কিন সেনার ঘাঁটি গাড়া এবং এরপর একে একে সোমালিয়া, বসনিয়া, প্যালেস্টাইন এবং চেচনিয়ায় মুসলিম জেহাদী নেতাদের মারার পর ওসামা বুঝে যান- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরপর তাকেও ছাড়বেনা। তাই ওসামার অভিযান শুরু হয় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে।
তাছাড়া সন্ত্রাস দমনের নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে নগ্ন কদর্য রূপের প্রকাশ ঘটেছে, বিশেষ করে আফগানিস্তান ইরাক আক্রমণ এবং প্যালেস্টাইনের উপর ইজরাইলের আক্রমনে আগ্রাসনের জনক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে ওসামা বিন লাদেন মুসলিম দুনিয়ার মৌলবাদী সংগঠনগুলোর পরোক্ষ সমর্থন পেয়েছেন।
তাই বলে সকল মুসলমান মৌলবাদী তথা সন্ত্রাসবাদী বা তার সমর্থক এমন সরলীকরণ অবিবেচনাপ্রসূত।
মনওয়ার সাগর - লেখক ও গবেষক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।