আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরাধীনতার শৃংখল পড়ে সংবিধানের কথা বলা কতটুকু জরুরী?

পথের সন্ধানে পথে নেমেছি.........

আমাকে মাফ করবেন। সংবিধান নিয়ে কথা বলাটা আমার মত নগন্য মানুষের পক্ষে একবারেই উচিত না। এটা নিতান্তই উপরের লোকদের বিষয়। সংবিধান আমি কখনও পড়িওনি। এর ভিতর কি আছে তা আমি জানিনা এবং জানার প্রয়োজনও হয়নি।

আমি এটাকে একটা দেশের হৃতপিন্ড বলেই মনে করি। একটা মানুষ যেমন হৃতপিন্ড ছাড়া বাচে না বা বাচতে পারেনা তেমনি সংবিধান ছাড়া একটা দেশ হতে পারেনা, চলতে পারেনা। একটা স্বাধীন দেশ মানেই একটা স্বচছ ও শক্তিশালী সংবিধান থাকতে হবে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে একটা দেশ কিভাবে পরিচালিত হবে, জনগনের কল্যানের জন্য কি করা যাবে, কি করা যাবে না তার একটা স্বচছ ও সঠিক দিক নির্দেশনা সংবিধানে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা থাকে এবং সময়ের প্রয়োজনে তা জনগনেরই কল্যানের জন্য পরিবর্ধিত, পরিমার্জিত ও যুগোপযুগি করে তোলা হয়। আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় ৩৮ বছর হয়ে গেল।

স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে আত্নপ্রকাশের পর পর যথারীতি আমাদের দেশেও একটি সংবিধান রচিত হয়েছে। আমি যদি ভুল বলে না থাকি স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ বার সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। যদি ধরে নেই প্রতিবারই সংবিধান সংশোধিত হয়েছে সময়ের তাগিদে জনগনেরই কল্যানের কথা ভেবে। যদিও জনগনের কল্যানের থেকে আমাদের নেতা নেত্রীদের কল্যানের দিকেই বেশী নজর থাকে। সে যাই হোক সময়ের তাগিদে এবং জনগনেরই কল্যানের কথা ভেবে (?) এখনও যদি কোন ধরনের সংশোধনী আনতে হয়, তাহলে সবার সাথে (সরকারী দল ও বিরোধী দলগুলোর সমঝোতার ভিত্তিতে) আলোচনা স্বাপেক্ষে সংশোধনী আনা যাইতে পারে অথবা হ্যা না ভোটের মাধ্যমে জনগনের রায় নিয়ে করা যেতে পারে।

এর কোন বিকল্প নেই। কিন্তু যদি ভুল না শুনে থাকি আওয়ামীলীগের মন্ত্রী এমপিরা বলছেন যে দেশ রক্ষার্থে, স্বৈরশাসকদের ঠেকাতে ও জনগনের কল্যানার্থে আমদেরকে নাকি আবার ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। এটা যদি সত্যিই হয়ে থাকে তবে কি তাহলে ৭২ পরবর্তী সব সংসোধনী বাতিল হয়ে যাবে? ৭২এর সংবিধান যে যে জিনিসকে বৈধ ও অবৈধ ঘোষনা করেছিল তা আবার কার্যকরী হবে? এই যদি হয় তাহলে ৭২ পরবর্তী আওয়ামীলীগ সরকার যে কটি সংশোধনী এনেছিল তার সবকটি সংশোধনীও কি বাতিল হয়ে যাবে? আর আওয়ামীলীগের মন্ত্রী এমপিরা খুব জোর দিয়েই বলছেন স্বৈরশাসকদের ঠেকাতে নাকি তাদের এই মহা পরিকল্পনা। একটা জিনিস সুস্পষ্ট যে, দেশে দেশে স্বৈরশাসকরা যখন ক্ষমতা গ্রহন করে তখন তারা যত শক্তিশালী ও কঠোর সংবিধানই হোক না কেন তাকে অগ্রাহ্য করেই ক্ষমতা গ্রহন করে থাকে। সেই উদ্দেশ্যে সংবিধান সংশোধনের কোন প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমার মনে হয়না।

সব ধরনের সহিংসতা ও অপশক্তির হাত থেকে দেশকে একমাত্র রক্ষা করতে পারে রাজনৈতিক সমঝোতা। আওয়ামীলীগ ঐ পথে অগ্রসর না হয়ে কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচেছ? আমার এই ক্ষুদ্র মস্তিস্ক তা কোন ভাবেই বুঝে উঠতে পারছেনা। আপনাদের কারও কি কোন স্বচছ ধারনা আছে? আর একটা কথা হচেছ, কিছু বাধ দিয়ে আর কিছু রেখেই যদি ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে হয় তাহলে ফিরে যাওয়ারই বা কি দরকার? তার কোনটাই আমার কাছে বোধগম্য হচেছ না। বড়ই পরিতাপের বিষয় হচেছ আমদের রাষ্ট্র নায়কেরা জনগনের কল্যানের কথা না ভেবে শুধুমাত্র নিজেদের কল্যানের জন্যই সংবিধানকে কাটাছেড়া করতে কোনই কুন্ঠিত বোধ করেন না। তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য নিজেদির সুবিধার্থে সংবিধানের অপব্যাখ্যা করেন।

এই ধরনের হীন মন মানসিকতা থেকে জাতি হিসাবে কি আমাদের কোনদিনই মুক্তি হবেনা? কারও অদৃশ্য সুতার টানেই যেন আমাদের নেতা নেত্রীরা দেশ চালাচেছন। এখানে কারোর যেন কোন দায়বোধ কাজ করেনা। ক্ষমতাটাই তাদের কাছে যেন মুখ্য বিষয়। স্বাধীন হয়েও যেন আমরা পরাধীনতার শৃংখল পরে আছি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.