আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিলুপ্তপ্রায় “শকুন”

মানুষ বাচেঁ তার কর্মে!

পরিচিত এ পাখিটিকে দেখা যাচ্ছে না গত কয়েক বছর ধরে । গ্রামীণ জীবনে এ পাখিটি পরিবেশ রক্ষার কাজ করত । মৃত পশুর সবটুকু মাংশ খেয়ে পরিবেশ রক্ষা করত । মানুষ, পরিবেশ ও শকুনের মধ্যে পরস্পর এ নির্ভরশীলতা বহুকাল আগের ! গত ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে শকুনের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক । এক দশকে প্রায় ৯৫ শতাংশ শকুনের মৃত্যু হয়েছে ! দায়ী কে ?--শকুনের এ মহামারী আকারে মৃত্যুর কারণ হিসেবে সবুজ বিপ্লবের কৃষি জোয়ারের কীটনাশক ও গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত “ডাইক্লোফেনাক” ওষুধকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা ।

বেরিয়ে এল বিস্ময়কর তথ্যঃ শকুনের সংগৃহীত দেহাংশ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল ওয়াশিংটনের টেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু চিকিৎসা বিভাগে । এখান থেকেই বেরিয়ে এল এক বিস্ময়কর তথ্য ! এ অঞ্চলের গৃহপালিত পশুকে যন্ত্রণা উপশমের ওষুধ “ডাইক্লোফেনাক” খাওয়ানো হয় । বিগত ২৫ বছরে ওষুধটির ব্যাপক ব্যাবহার বেড়েছে । শকুনের মড়কও এসময়ের ঘটনা । “ডাইক্লোফেনাক” ওষুধ খাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে কোনো পশুর মৃত্যু হলে কিংবা চিকিৎসা চলাকালে মৃত পশুর মাংশ শকুনেরা খেলে ওই ওষুধের রেসিডিউ বা অবশিষ্টাংশ চলে যায় শকুনের দেহে ।

তৈরি হয় বিষক্রিয়া । ট্রাজেডিটা এই যে, “ডাইক্লোফেনাক” পশুদের রোগ সারায়, কিন্তু শকুনের মরণব্যাধি তৈরি করে ! •গত কয়েক বছর ধরে শকুনের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে “ডাইক্লোফেনাক” ওষুধের পাশাপাশি বিষেজ্ঞরা আরেকটি কারণ দেখেছেন, মৃত সব শকুনই “ভিসেরাল গাউট” রোগে আক্রান্ত । তারা বলছেন, ভারী ধাতু অথবা কীটনাশকের দূষণই এ ধরনের রোগের জন্ম দিতে পারে । •বিষেজ্ঞরা আরো বলেছেন, চাষাবাদে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যাবহারে পাখির ডিমের খোসা এতটাই পাতলা হয়ে যাচ্ছে যে, পাখিরা ডিমে তা দিতে বসলেই তা ভেঙ্গে যায় । তাই প্রজনন সমস্যার কারণেও কমে যাচ্ছে শকুনের সংখ্যা ।

•বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি ২০০৩ সালে এক সমীক্ষা চালিয়ে বলেছে, ভারতীয় উপমহাদেশে শকুনের সংখ্যা কমেছে ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশ । অবশিষ্ট দুই থেকে তিন শতাংশ টিকে থাকা শকুনের সংখ্যাও কমছে । এই কমার হার অকল্পনীয় ও নজিরবিহীন ! এ অবস্থায় অবশিষ্ট শকুনেরা আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে । ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে হয়ত তা একেবারে বিলুপ্ত হয়েই গেছে !

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.