আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের কীর্তিকলাপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ পর্ব-৮

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।

পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩ পর্ব-৪ পর্ব-৫ পর্ব-৬ পর্ব-৭ সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী (সাকাচৌ) সাকা চৌধুরী নামে ব্যাপক পরিচিত সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন গহিরা গ্রামনিবাসী মৃত ফজলুল কাদের চৌধুরী (ফকা চৌধুরী)-র পুত্র। সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা সালাউদ্দীন ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ডের মূল হোতা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে সাকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ক্রমাগত প্রচারণায় নেতৃত্ব দেয় এবং পাকিস্তানী দখলদার সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করে। তার সকল ঘৃণ্য অপকর্মের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তার নিজ শহর চট্টগ্রাম।

সুযোগ্য পিতা ফকা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে এবং ভাই গিয়াসউদ্দীন কাদের চৌধুরী(একজন সাবেক সংসদ সদস্য এবং ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু জনগণের উপর ক্রমাগত অত্যাচার ও সমাজবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে রাউজান থেকে জনগণের রায় পেতে ব্যর্থ) এবং অন্যান্য আরও সহযোগিদের সাথে চট্টগ্রামে তার নিজ আবাসস্থল গুড’স হিল থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধ বিরোধী নানারকম কর্মকান্ড পরিচালনা করে। ১৯৭২ সালের ৮ই জানুয়ারী প্রকাশিত দৈনিক বাংলায় একটি রিপোর্টে সাকা চৌধুরীর যুদ্ধবিরোধী কর্মকান্ড প্রকাশিত হয়, “সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী এবং তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী শত শত যুবকদের ধরে এনে চট্টগ্রামে তাদের গুড হিল বাংলো-তে নিয়ে আসতো এবং তাদেরকে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করতো। সেইসব হতভাগ্য লোকদের মধ্যে ছিলেন শহীদ ডাঃ সানাউল্লাহ্‌র পুত্র। ১৯৭১ সালের ১৭ই জুলাই সাকাচৌ ছাত্রনেতা ফারুককে ধরে আনে এবং পাকিস্তানী সেনাদের সাহায্যে তাকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে আত্মসমর্পনের দিন পর্যন্ত পাকিস্তানী সৈন্যদের একটি দল তার বাংলো পাহারা দেয়ার জন্য নিয়োজিত ছিল।

স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ১৮ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ফজলুল কাদের চৌধুরীকে তার পরিবারের সদস্যসহ চট্টগ্রাম থেকে ১২০ পাউন্ড লুটকৃত স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক করে। ” মাহবুব আল আনোয়ার তাঁর রচিত The history of Bangalee’s war of liberation বই-এর ৬৯নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ১৮ই নভেম্বর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে নিজামুদ্দীনকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং তিনি উল্লেখ করেন… “৫ই জুলাই আমাকে ধরে নেয়া হয়। তারপর আমাকে ফজলুল কাদের চৌধুরীর কাছে নেয়া হয়। সেখানে ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দীন তাদের অন্যান্য সঙ্গী খোকা, খলিল এবং ইউসুফ মিলে পেছন দিক থেকে আমার হাত বেঁধে ফেলে এবং মোটা লাঠি এবং বাঁশ দিয়ে আমাকে মারতে শুরু করে। পাঁচ ঘন্টা আমি জ্ঞান না হারানো পর্যন্ত তারা এই কাজ চালাতে থাকে।

৬ই জুলাই রাত ১১টার সময় তারা আমাকে মাঠে ফেলে রেখে যায়। তখন পর্যন্ত আমাকে খাওয়ার জন্য কিছু দেয়া হয়নি, পান করার জন্য এক ফোঁটা পানিও দেয়া হয়নি। যখনি আমি পানি চেয়েছি তারা জবাব দিয়েছে, “তুমি হিন্দুতে রূপান্তরিত হয়েছ, তোমাকে এমনকি পানিও দেয়া যাবেনা। ” ১৩ই জুলাই আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এই সময়কালে তারা আমার পা ঝুলিয়ে আমাকে নিয়মিত মারধর করতো।

সারা দিনের জন্য একমাত্র খাবার ছিল দুই টুকরো হাতে বানানো রুটি এবং পানি। তারা যেকোন অজুহাতে আমাকে লাথি মারতো। এই পরিস্থিতিতে একজন মুসলমান হিসেবে আমার নামাজে আমি আল্লাহ্‌র কাছে স্বান্তনা প্রার্থনা করেছি। আমি নামাজরত অবস্থায়ও তারা আমাকে পেছন থেকে লাথি মারতো আর বলতো, “তুমি হিন্দু হয়ে গেছ, নামাজ তোমার জন্য না। ” ” .............................(চলবে) সূত্র


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.