বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩ পর্ব-৪ পর্ব-৫ পর্ব-৬ পর্ব-৭ পর্ব-৮ পর্ব-৯ পর্ব-১০
আব্বাস আলী খানঃ
আব্বাস আলী খান ছিল জামায়াতের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি। গোলাম আযমকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমীর ঘোষণার আগ পর্যন্ত আব্বাস আলী খান পার্টি প্রধানের দায়িত্বে ছিল। খান এর ভূমিকা ছিল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এবং বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনার বিরুদ্ধে। ১৯৭১ সালে সে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর উপ-প্রধান ছিল।
জামায়াত ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সমমনা দলগুলোর মাধ্যমে গঠিত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্ এর মত বেসামরিক শক্তিকে সে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এই তিন বাহিনী গঠন করার পেছনে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্রে সাহায্য করা, স্থানীয় প্রতিবাদী দলগুলো সম্বন্ধে গোপন তথ্য সংগ্রহ করা, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের উপকরণসমূহ খুঁজে বের করা ও তা নিশ্চিহ্ন করা এবং গ্রামগুলোতে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটসহ আক্রমণ করা। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের গণহত্যা অভিযানে এসব বেসামরিক বাহিনীর সরাসরি সহযোগিতা উপভোগ করেছিল যেটি বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ নিরস্ত্র মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল। আব্বাস আলী খান অগণিত মিছিলে বক্তৃতা, সংবাদপত্রে বিবৃতি ও প্রবন্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গণহত্যায় উৎসাহ ও সহযোগিতা দিয়েছিল। বাংলাদেশে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অভিযানকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাহায্য করার জন্য গঠিত কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিতেও খান একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল।
জামায়াত এবং ক্যাম্প সহযোগিদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটি তাদের শাখা সারা দেশে বিস্তৃত করেছিল। এই কমিটিগুলো তিনটি বেসামরিক শক্তির রাজনৈতিক শাখা হিসেবে কাজ করতো এবং ১৯৭১ সালে বাঙ্গালীদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে স্তব্ধ করার জন্য পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্দয় প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের সূত্রানুসারে, ১৯৭১ সালে ক্রমাগত কিছু সাজানো সংসদীয় উপনির্বাচনে অংশে নেয়ার পর গভর্নর এম এ মালেকের মন্ত্রীসভায় খান মন্ত্রী হয়েছিল। উপনির্বাচনের জন্য নির্ধারিত আসনগুলো আওয়ামী লীগের সদস্যদের কর্তৃত্বে ছিল। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর পাকিস্তানী সামরিক জান্তা আসনগুলো শূণ্য ঘোষণা করে।
১৯৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর মালেকের পুতুল সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে খান কাজ শুরু করে।
..................................(চলবে)
সূত্র
ছবিঃ আব্বাস আলী খান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।