কৃষ্ণশুভ্রারা বেঁচে থাকুক দূরে সুদূর স্বপ্নসীমান্তে
** আমার বিপন্ন বিস্ময় এবং দুঃখবিলাসী এই আমি লেখায় আমি দুঃখ বিলাসের কথা বলেছি। আমার হৃদয়ে দুঃখবিলাস সঞ্চারী কিছু ঘটনা আমি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করব। আজ তার প্রথম অংশ। উল্লেখ্য এই ঘটনার সবগুলোই সত্য কোন অলীক কল্পনাপ্রসূত নয়।
সন্ধ্যা নেমে এসেছে অনেক আগেই।
ঢাকার কোন এক রাস্তায় হাটছে নিলয়। নিসঃঙ্গতা উপভোগ করতে শিখেছে সে ছোটবেলা থেকেই। তার একান্ত নিজঃস্ব মূহুর্তগুলো কাটে নিঃসঙ্গতায়। টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে চারদিকে। কিন্তু তা তার হাটার স্পৃহা মোটেই কমাতে পারছে না।
অর্থহীন বিষন্নতায় ছেয়ে আছে তার মন। কোন এক অজানা কিছু হারাবার আশায় না জানা কিছু পাবার নেশায় তা সে ঠিক বলতে পারে না। শুধু সে জানে তাকে ছুটে চলতে হবে এ পথ ধরে।
ফুটপাতের পাশে কোন এক ভাসমান চায়ের দোকান দেখে থামলো সে। এককাপ গরম ধূমায়িত চা আর একটি জ্বলন্ত সিগারেট এই মূহুর্তে তার চরম প্রার্থিত বস্তু।
সিগারেট ধরিয়ে চায়ে ফু দিতে যাবে এমন সময় তার কানে ভেসে এল ,স্যার মালা নিবেন একটা?
সে চমকে তাকাল। অল্প বয়সী বার কি তের বছরের একটি মেয়ে তার সামনে দাড়িয়ে। বিরক্ত সহকারে সে মেয়েটিকে ফিরিয়ে দিচ্ছিল কিন্তু তার আগেই মেয়েটির চেহারার করুণ আকুতি তাকে থামিয়ে দিল।
সারা দিন কিছু খাই নি। প্লিজ স্যার।
নিলয় একটি মালা কিনে জিজ্ঞাসার ভংগিতে মেয়েটির বৃত্তান্ত জানতে চাইল। এই বয়সে যার লেখাপড়া করার কথা সে কেন জীবন সংগ্রামে নেমেছে তা জানার তীব্র কৌতুহল তাকে বাধ্য করল মালা কিনতে। বলল,
তোর মা বাবা নেই?
মা মারা গেছে বাবা অন্য খানে বিয়ে করেছে ,আমাদের দেখার কেউ নেই।
আমরা কারা তা জানার সৌভাগ্য নিলয়ের হলো না। তার আগেই সে দেখতে পেল মালার বিনিময়ে তার দেয়া টাকা দিয়ে মেয়েটি একটা বনরুটি কিনেছে আর কিছুদূরে দাড়ানো তার ছোট ভাইকে নিয়ে ছোট বনরুটি ছিড়ে খুড়ে খাচ্ছে।
নিলয়ের বুক থেকে চাপা দীর্ঘশ্বাস বেরহয়ে আসে। এই নিষ্পাপ পবিত্র শিশুদের প্রতি করুণা করার কোন অধিকার তার নেই। তাই সে ধীরে ধীরে দোকান থেকে বের হয়ে আবার হাটতে থাকে।
কিছুক্ষন পর তার এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়। সে তার হাতের মালা দেখে
ঠাট্টা করে।
বন্ধুর প্রতি মনে মনে করুণার হাসি হাসে নিলয়। আহারে। এই স্বর্গীয় শিশুদের জন্য কী এই ধুলামাটির পৃথিবীতে কোনই সুখের স্থান নেই। --হাতের ফুলের মালার দিকে তাকিয়ে তার বুক থেকে কষ্টের এক চাপা স্রোত বেরিয়ে যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।