আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র‍্যাগিং না অপপ্রচার ? জাহাঙ্গীরনগর গতকাল আসলে যা হয়েছিল...

কিছুই বলার নাই । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গত রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা এখন বাংলাদেশের সব বড় বড় ব্লগ এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শোভা পাচ্ছে । সেখানে যে সকল বিবরন দেয়া হয়েছে একজন সাধারন জনতা হিসেবে আপনার যেমন লেগেছে আমার ও তেমন লাগছে । তারপর থেকে এর অনুসন্ধান করাটা হয়ে গেল আমার দায়িত্ব। কারণ ব্লগে যাদেরকে গালাগাল করা হয়েছে তারা সবাই আমার জুনিয়র, ডিপার্টমেন্ট এর জুনিয়র ।

জাহাঙ্গীরনগরে সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক নিয়ে অনেকেই অনেক কিছু লিখেছেন সামু তে । গতকাল মাহবুব হাসান সাহেবের ফেইসবুকের স্ট্যাটাস টা আমি দেখি উনার পোস্ট করার ৩০ মিনিটের ভিতর । তখন ল্যাবেই ছিলাম । দেখে আমি বর্তমান ২য় বর্ষের ছাত্র(যারা অভিযুক্ত) তাদের দেখাই এবং তাদের জিগ্যেস করি আসলে ঘটনা কি হয়েছে । ওরা বলে ভাই আমরা তো এইসবের কিছুই জানি না ।

উল্লেখ্য যাদের জিগ্যেস করা হয়েছে তারা একান্তই আমার কাছের ছোট ভাই-বোন। আমার কাছে কখনই তারা কিছু লুকায় না । যথারীতি আমি জাহানারা ইমাম হলের আইটির যারা আছে তাদের খোঁজ নিলাম এবং খুব ই গোপনীয়তার সাথে জানতে চাইলাম । তারা বলল তারা এখন ও ওই হলে আইটির কেউ উঠেছে কি না তারা জানেনা । তবে সবাইকে একজায়গায় রেখে হলে থাকতে বলা হয়েছে ।

এর কারন হল আমার ডিপার্টমেন্ট এর খেলা আগামীকাল । ওরা চাঁদা তুলে নুডলস ও কিনেছে ওদের খাওয়ানোর জন্য । কথাগুলো যখন আমি ফোন এ শুনছিলাম তখন মেয়েটি কাঁদছিল । এখন ওখানে দুইজন ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রী আছে । তাদের শিক্ষরা জিগ্যেস করেছে এইরকম কোন ঘটনা ঘটেনি ।

আমাকে ওই হলের অনেকেই ফোন দিয়েছে এবং বলেছে , ভাইয়া আমরা কিছু না করেই এতবড় একটা ঘটনায় জড়ালাম কিভাবে বুঝতে পারতেছি না। তবে ভাইয়া যেভাবে মানুষ না জেনে ব্লগ ফেইসবুক এ ছড়াচ্ছে তাতে কোনভাবে যদি এই ঘটনা আমার বাবা জানে সে আর বাচবে না । আমি কিন্তু তখন ও ওদের উপর ১০০% বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । তখন ও ওদের টেনশন । আমরা সবাই জেগে আছি ।

আমি শুধু ওকে বলছিলাম "তোরা যদি দোষ না করে থাকিস তাহলে জেনে রাখ কিছুই হবে না । তবে দোষী হলে অবশয়ই শাস্তি পাবি সন্দেহ নাই" । আমরা দুই সিনিয়র ব্যাচ আজ ১০ টায় ডিপার্টমেন্ট এ আসলাম ওদের সাথে কথা বলছিলাম । সব গোপনীয়তার উর্ধে থেকে । ওই হলের আমার যারা ছোট বোন আছে সবাই ই খুব ই কান্নাকাটি করছিল ।

সবার কাছ থেকে আলাদা করে শুনছিলাম ঘটনাগুলো । তখনও আমরা ওদের কথা শতভাগ বিশ্বাস করছি না । বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন, গোপনেও যদি কিছু করে থাকে এই সন্দেহে । যা হোক আমরা একদমই নিরপেক্ষ থেকে ঘটনা শুনেছি । কোন আবেগের স্থান হয়নি ।

১০০ ভাগ নিশ্চিত হতে হলে ফার্স্ট ইয়ারের সবার সাথে কথা বলা ছাড়া উপায় নেই । কয়েকজন অবিভাবক সহ আমাদের সমস্ত শিক্ষক এবং আমরা বড় ভাইয়েরা আপুরা ছিলাম । সবাইকে জগ্যেস করলেন স্যার। এবং যদি কারো অভিযোগ থাকে গোপনীয়তার সাথে তিনি তা হ্যান্ডেল করবেন বলে আশ্বাস দেন । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলেও সত্য কেউ ই এইরকম কুৎসিত ঘটনার ইঙ্গিত পর্যন্ত পায়নি ! বাংলাদেশের সমস্ত সোশাল মিডিয়া যে ঘটনায় সয়লাব সেই ঘটনার কিছুই ফার্স্ট ইয়ারের কেউ জানে না ! আমি এখন কি করে আপনার বোনের পক্ষ নিই মাহবুব ভাই ?? এই গেল উপরের পরিবেশ ।

এই মুহুর্তে যা হচ্ছে তা আরো বেশি ভয়াবহ । ওই মেয়ের কোন হদিস ই নাই অথচ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার ডিপার্টমেন্ট এর নির্দোষ মেয়েগুলো নির্বিচারে গালাগাল শুনছে । বাইরে বের হলে সবাই জিগ্যেস করছে তোদের ডিপার্টমেন্ট এ কি না হইছে ? এই তাইলে অবস্থা না !! কি অসহ্য যন্ত্রনা । মাহবুব সাহেবকে আমি চিনিও না চেনার প্রয়োজন ও বোধ করছি না । তবে গত রাতের হিরো তিনি ।

উনার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট উপচে পড়ছে । সাবস্ক্রাইবারের তো অভাব নাই । এক রাতেই !এর ই মধ্যে শুরু হল পেইজ এডমিন দের রমরমা ব্যাবসা । তথাকথিত লাইক কমেন্ট আর শেয়ারের ব্যাবসা । মাহবুব সাহেব যেভাবে ঘটনার মিথ্যা বর্ননা বা ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা আরো শালীনভাবে দেয়া যেত ।

ওনার ই তো বোন । জাহাঙ্গীরনগরের প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বাইরের কেউ ই জানে না । যারা বড় বড় মুখ করে বলেন যে "ভালো হইছে, ওইখানের ফর্ম ই তুলিনাই !" তাদের বলি , আপনার মত মানুষের জন্য বাংলাদেশে কোন বিশ্ববিদ্যালয় আছে কি ! র্যা গিং এখনকার কোন ছাত্রই বোঝে না । শোনা ব্যাপার দিয়ে চালিয়ে দেয় । আমি আর সব ডিপার্টমেন্ট এর কথা বলতে পারব না , আমাদের আইটিতে ২৪ ঘন্টা ল্যাব খোলা থাকে যখন যার ইচ্ছা নিরাপদেই আসা যাওয়া করে ।

এ বিষয়ে আমরা এবং শিক্ষকেরা সবাই ই সচেতন । আমি ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। তবে অবাক হবার ব্যাপার মানিক সম্পর্কে ভিতরের থেকে ক্যাম্পাস এর বাইরের লোকজনই বেশি জানে । আমি বাংলাদেশের মানুষের সেন্স দেখে অবাক হই যে ক্যাম্পাসে একাধিক প্রেম করলেই সবাই ঘৃনা করে সেখানে মানিক ১০০ ধর্ষন করে ! হাস্যকর । জাহাঙ্গীরনগর খারাপ কারণ এই মানিক কে আন্দোলনের মাধ্যমে তাড়ানো হয়েছিল।

জাহাঙ্গীরনগর খারাপ কারণ এখানে বড়রা কৌশলে ছোট ভাইদের আপন মানুষ হয় । জাহাঙ্গীরনগর মেয়েদের জন্য নিরাপদ নয় কারণ এখানে মেয়ের রাতের বেলায় ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারে এবং পরে সেই বন্ধুরাই নিরাপদে হলে পৌঁছে দেয় । যেহেতু দেখা গেল যারা অভিযুক্ত বলে সবাই গাই গালাজ করল তারা আসলে নির্দোষ এখন এই মেয়েগুলোর সম্মান কে ফিরিয়ে দিবেন ? আছেন কোন সুশীল ? জাবি আইটি একটি নতুন ইন্সটিটিউট । ধীরে ধীরে বাংলাদেরশের প্রযুক্তিখাতে উঠে আসছে । কয়েদিন আগেও একটা সফটওয়্যার প্রতিযোগিতায় ইন্সটিটিউটের একটি দল চ্যাম্পিয়ন ও হয়েছে ।

মিঃ মাহবুব যে বদনামের আমাদের সকলকে জড়িয়েছেন, মানুষের কাছে ভিক্ষা চেয়েছেন কিছু নির্দোষ মেয়েদের গালাগাল করার জন্য । ও ভালো কথা কাল ২ টায় নাকি মেয়েটা উদ্ধার হইছে হল থেকে । কোথার মেয়ে কোথায় আছে কেউ জানে না কিন্তু ফেইসবুক লাইকার রা জানে সেই মেয়েকে হল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে । কে ওকে বন্দী করছে মাহবুব ভাই ? উপসংহারঃ আমি আইটির সকল ছাত্রদের পক্ষে সকল পাঠককে উদ্যেশ্য করে কয়েকটি কথা বলব যা হয়েছে তা একদম ই সত্যি নয় । একটা কাল্পনিক মেয়ের ইজ্জত বাঁচাতে আপনারা যারা পোস্ট লাইক কমেন্ট করেছেন তারা সত্যি সত্যি কিছু নির্দোষ মেয়েকে বিপদে ফেলে দিয়েছেন ।

আপনাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা কোন লেখা বিশ্বাস করার আগে একটু যাচাই করুন । আপনার বোন ও এই পরিস্থিতিতে পড়লে আপনি করতেন? কি করতেন কোন একজন মানুষ যকে আপনি চেনেন না সে আপনার বোনকে নিয়ে মিথ্যেমিথ্যি এরকম পোস্ট দিলে আপনি কি করতেন, সেটাই করুন । গুরুত্বপুর্ন লিঙ্কঃ http://d.pr/i/qf3O http://d.pr/i/TP2v Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.