শিশুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, কারণ এই বইটি আমি একজন লোককে উৎর্সগ করছি। তার কারণ: পৃথিবীতে এই লোকটি আমার একমাত্র বন্ধু। আরেকটি কারণ: এই লোকটি সব বোঝে, এমনকি শিশুসাহিত্যও। তৃতীয় কারণ: এই মানুষটি ফ্রান্সে থাকে, যেখানে সে শীত আর ক্ষুধায় কষ্ট পায়। সান্তনা তার খুব দরকার।
এত কারনও যাদের যথেষ্ট নয়, তাদের বলছি: বইটা উৎর্সগ করলাম সে শিশুটিকে, যে শিশুটি একদিন এই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষটি ছিল। সব মানুষই একসময় শিশু ছিল (খুব কম লোকই তা জানে)। কাজেই আমি আমার উৎর্সগ সংশোধন করলাম, লেও বের্থকে যখন সে শিশু ছিল। চলবে...
বাংলা রুপান্তর:
পৃথিবী নামক গ্রহের শুভ-কে
প্রথম
ছ'বছর বয়সে "বাস্তব অভিজ্ঞতা" নামের জঙ্গল বিষয়ক একটা বইয়ে, একটা ছবি দেখছিলাম। অজগর একটা হরিন গিলছে।
ছবিটা অনেকটা এরকম:
সেখানে লেখা ছিল; অজগর তাদের শিকার কখনো চিবোয়না, গিলে খায়। তারপর ছ'মাস কোন নড়াচড়া করতে পারেনা, শুধু ঘুমায়, হজম করার জন্য।
আমি জঙ্গলে অভিযান করব। মনে মনে খুব ভাবছি। আর রং-তুলি দিয়ে আমার প্রথম ছবিটা আঁকা শেষ করেছি।
আমার প্রথম ছবিটা এরকম:
ছবিটা সবাইকে দেখালাম। অবাক কান্ড! ভয়তো কেউ পেলইনা বরং বলল:
একটা টুপি দেখে ভয় পাওয়ার কি আছে?
আমি কিন্তু কোন টুপির ছবি আঁকিনি! অজগরটা মস্ত একটা হাতিকে গিলে ফেলেছে! আমি সে ছবিটাই এঁকেছি।
ওরাতো নিজে কিছুই বোঝেনা। সবকিছুই ব্যাখা করে বুঝিয়ে দিতে হয়। এখন কি করি? আবার অজগরের পেটের ভেতরের ছবিটা আঁকলাম।
এটি আমার দ্বিতিয় ছবি:
ছবি দেখে সবাই পরামর্শ দিল; অজগরের বা তার পেটের ভেতরের ছবি না এঁকে, আমার বরং ভূগোল, ইতিহাস, অর্থনিতী আর ভাষা শেখা উচিৎ। প্রথম এবং দ্বিতীয় ছবিটির ব্যার্থতা আমার মনোবল ভেঙ্গে দেয়। আর এভাবে ছ'বছর বয়সেই আমি একজন বিখ্যাত শিল্পী হওয়ার স্বপ্নটি ত্যাগ করতে বাধ্য হই। ওরা কিচ্ছু বোঝেনা। সবকিছু ব্যাখা করে বুঝিয়ে দিতে হয়।
ছোটদের পক্ষে ব্যাপারটা খুব সহজ নয়। নিরুপায় হয়ে আমাকে অন্য একটি পেশা বেছে নিতে হয়। এবং আমি পাইলট হই। আমি সারা দুনিয়া ঘূড়ে বেড়িয়েছি এবং ভূগোল এতে আমাকে খুব সাহায্য করেছে। যেমন; প্রথম দৃষ্টিতেই চিনদেশকে আরিজোনা থেকে আলাদা করে চিনতে পারি।
অন্ধকারে পথ হাড়ালে ভূগোল খুব কাজে আসে।
এভাবে, দীর্ঘ কর্মজীবনে আমি অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই। অনেক লোককে খূব কাছে থেকে দেখেছি। এতে তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা বারেনি।
যাকেই এতটুকু জ্ঞানি মনে হয়েছে, আমার প্রথম ছবিটা দেখিয়েছি।
যা সর্বদাই স্বযত্নে সঙ্গে রাখতাম। বুঝতে চাইতাম লোকটা সত্যিই জ্ঞানী কিনা। কিন্তু প্রতিবারই জবাব ছিল; "এটা একটা টুপি। " তারপর তাদের সাথে আমি অজগর, জঙ্গল বা তাঁরা নিয়ে কোন কথাই বলতাম না। তাদের বোধগম্য বিষয় যেমন; তাস বা গল্ফ খেলা, রাজনীতি কিংবা টাইবাঁধা নিয়ে আলোচনা করতাম।
একজন সমজদার মানুষ পেয়ে বিখ্যাত লোটি খুব খূশী হত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।