ফুটবলে মোহামেডান-আবাহনী প্রথমবার মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৭৩ সালে প্রথম বিভাগ লিগে। ওই ম্যাচে আবাহনী ২-০ গোলে জিতে যায়। ক্রিকেটে দুই দলের প্রথম সাক্ষাত ঘটে ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে। সেবার প্রথম বিভাগ লিগ সেমিফাইনালে আবাহনী ৬ উইকেটে মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে। ওই ম্যাচে অবিস্মরণীয় এক রেকর্ড তৈরি হয় যা এখনো লিগে অম্লান রয়েছে। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিলেও আবাহনীর মারাত্দক বোলিংয়ে মোহামেডান সুবিধা করতে পারছিল না। মাত্র ৯৬ রানের মাথায় তাদের ৯ উইকেটের পতন ঘটে। শেষ জুটিতে ব্যাট করছিলেন দৌলতুজ্জামান ও রামচাঁদ গোয়ালা। মনে হচ্ছিল তিন অংকের ঘরে পেঁৗছানোর আগে মোহামেডান অলআউট হয়ে যাবে। না, প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানরা ঘুরে দাঁড়াতে না পারলেও দৌলত ও গোয়ালা প্রতিপক্ষ বোলারদের দিশেহারা করে ফেলেন। সমর্থকদের দুশ্চিন্তা ছিল কত আর করতে পারবেন তারা বড়জোর ১২০ বা ১৩০। না, পুরো গ্যালারিকে চমকিয়ে ১০ম উইকেট জুটিতে ৯৯ রান যোগ করে ছিলেন তারা। দুর্ভাগ্যক্রমে দৌলত আউট হয়ে গেলে শত রানের জুটি গড়া আর সম্ভব হয়নি।
৩৮ বছর আগে এই কীর্তি গড়েন দুই ক্রিকেটার। কিন্তু এই রেকর্ড এখন পর্যন্ত লিগে কারো পক্ষে ভাঙা সম্ভব হয়নি। দুই ক্রিকেটারের মধ্যে দৌলত মৃত্যুবরণ করেছেন অনেক আগে। অনেক দিনের আগের ঘটনা, তাই সে ম্যাচে কি ঘটেছিল দুই দলে খেলা অনেক ক্রিকেটারই তা মনে করতে পারছেন না। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সেও সেই ম্যাচের স্মৃতি এখন গোয়ালার চোখে বন্দি হয়ে আছে। প্রথমেই তিনি বললেন, 'আমার বোনের সংকটাপন্ন অবস্থা। তাই এ নিয়ে বেশি কথা বলতে পারব না। এতটুকু মনে আছে মোহামেডানের সম্ভবত ৯৫ বা ৯৬ রানে ৯ উইকেটের পতন ঘটেছিল। আমাকে তখন এক কর্মকর্তা বললেন, দাদা আপনিই শেষ ভরসা। দেখেন ১৫০ গড়ে কিছুটা চ্যালেঞ্জ দেওয়া যায় কিনা। দৌলতকে বললাম তুমি শুধু টিকে থাকবে। যা করার আমিই করব। আবাহনীতে তখন জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা ও চার্চিল মারাত্দক বোলিং করতেন। সত্যি বলতে কি এমন বিপর্যয়ে ওদের বোলিং মোকাবিলা করাটা মুশকিল ছিল। তারপরও নেমেই আমি দুটো বাউন্ডারি হাঁকালাম। দৌলতও এক পর্যায়ে মারমুখি হয়ে উঠল। তখনতো গ্যালারিতে আর স্কোর বোর্ড ছিল না। তাই বুঝতে পারছিলাম না দলের রান কত হলো। শেষ ওভারে আবাহনীর এক ক্রিকেটার আমাকে জানালেন, এই ওভারে আপনারা ৭ করতে পারলেই শত রানের জুটি গড়বেন। তখনও দুই বল বাকি। কিন্তু ছক্কা পেটাতে গিয়েই দৌলত আউট। শেষ পর্যন্ত ১ রানের জন্য হলো না শত রানের জুটি। দৌলত কত করে আউট হয়েছিল তা আমার মনে নেই। আমি সর্বোচ্চ ৪৫ রান করে ম্যাচে অপরাজিত ছিলাম। পরে ৩ ওভার ও হাতে ৬ উইকেট রেখে আবাহনী ম্যাচ জিতছিল। ফাইনালে তারা শান্তিনগরকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।