১৮-দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচির কারণে বার বার পিছিয়ে দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাসহ স্নাতক-স্নাতকোত্তরের বিভিন্ন কোর্সের পরীক্ষা। ক্লাস-পরীক্ষা পিছিয়ে শিক্ষাজীবনে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছে দেশের লাখ লাখ মেধাবী শিক্ষার্থী। চলমান রাজনৈতিক সংকটে ক্লাস-পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়াসহ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর আধিপত্য বিস্তারে নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশান্ত পরিবেশের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় বড় ধরনের সেশনজটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ১৮-দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের চরম প্রভাব পড়ছে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে। বার বার পেছাতে হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নিতে না পেরে স্থগিত করতে হয়েছে বিভিন্ন কোর্সের পরীক্ষা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ২০১৩-১৪ সেশনে প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার 'এ' ইউনিটের সাক্ষাৎকার ৭, ৮ ও ৯ ডিসেম্বর নির্ধারিত ছিল। কিন্তু স্থগিত করা হয়েছে। নতুন তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গতকালের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। গুচ্ছ পদ্ধতির এ পরীক্ষার বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ভর্তি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ সেশনের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তির জন্য ই-ইউনিটের পরীক্ষা ৩০ নভেম্বরের পরিবর্তে ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫, ৬, ৭ ও ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এ পরীক্ষাগুলো ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা ১৪ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি সম্মান কোর্সের প্রথম বর্ষের ৩০ নভেম্বরের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এ পরীক্ষা সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে নেওয়ার কথা ছিল। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ নভেম্বরের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরীক্ষার পুনর্নির্ধারিত সময়সূচি এখনো জানানো হয়নি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠেয় ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল, অবরোধের কারণে বিএ, বিবিএ, বিএসএস অনার্সের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা আটবার পেছানো হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়ে শুক্র ও শনিবার দিন নির্ধারণ করা হলেও শনিবারে বিরোধী দলের কর্মসূচি দেওয়ায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সঠিক সময়ে নেওয়া যাচ্ছে না। রাজনীতির পরিবেশ-পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সারা দেশে হরতাল-অবরোধের মাঝে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কীভাবে যাবে। আন্দোলনকারীরা তো জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে না। শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সেশনজটের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দেরিতে নেওয়াসহ বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এখন সবচেয়ে কারণ হলো রাজনৈতিক অস্থির পরিবেশ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।