রাডারের সংকেত দেখে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকা মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানটি ফিরে আসার আশা প্রকাশ করছে কর্তৃপক্ষ। এ দিকে বিমানটি 'নিখোঁজ' নাকি 'বিধ্বস্ত' তা নিয়ে গতকাল নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাত থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর মালয়েশীয় বিমানটি নিয়ে দিনভর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য প্রচারে এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত 'নিখোঁজ' ২৩৯ জন যাত্রীবাহী মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-২০০ বিমানটির খোঁজে তল্লাশি চলছিল।
এ দিকে মালয়েশিয়া বিমান বাহিনীর প্রধান রোদজালি দাউদ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'রাডারে লিপিবদ্ধ তথ্য থেকে বিমানটি ফিরে আসবে বলেই মনে করছি আমরা।' অনুসন্ধানকারীরা রাডারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পাশাপাশি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা সন্দেহভাজনদের ছবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিমানটির খোঁজ পেতে অনুসন্ধান এলাকা আরও সম্প্রসারণ করেছে উদ্ধারকারী দল। প্রায় ২২টি বিমান আর ৪০টি নৌযান বিমানটি উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়া সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল জুলকেফ্লি জিন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিমানটির কোনো ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মেলেনি। কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংগামী এমএইচ ৩৭০ বিমানটি ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে ভিয়েতনামের দক্ষিণ এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়। এ দিকে বিমানটি উদ্ধারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল কাজ শুরু করেছে।
প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আগে রাডার স্ক্রিন থেকে বিমানটি হারিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তের তথ্যাদি পর্যবেক্ষণ করছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে কর্মকর্তারা আরও আশঙ্কা করছেন, ওই বিমানটিতে অন্তত দুজন এমন ব্যক্তি ছিল, যারা ভুয়া কাগজপত্র ও নথি ব্যবহার করে বিমানটির আরোহী হন। ওই দুই যাত্রী চোরাই পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন। ওই দুটি ইউরোপের কোনো দেশের চোরাই পাসপোর্ট হতে পারে।
এ ছাড়া মালয়েশিয়ার বিমান বাহিনীর প্রধান দাবি করেছেন, ওই ফ্লাইটে যাওয়ার জন্য পাঁচজন যাত্রী টিকিট কাটলেও শেষ পর্যন্ত তারা বিমানে উঠেননি। তাদের লাগেজও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে থাইল্যান্ড উপসাগরের প্রবেশপথে দক্ষিণ চীন সাগরের কাছে শনিবার বিকালে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের জলসীমার মাঝামাঝি স্থানে প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ তেলের রেখা চিহ্নিত করে ভিয়েতনামের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছিল, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত বিমান থেকে তেল নিঃসরিত হয়ে এ রেখার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ওই এলাকায় বিমানের কোনো ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানে ১৪টি দেশের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে চীনের ১৫২ জন, মালয়েশিয়ার ৩৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১২ জন, অস্ট্রেলিয়ার সাতজন, ভারতের পাঁচজন, যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন, ফ্রান্সের তিনজন, নিউজিল্যান্ডের দুজন, ইউক্রেনের দুজন, কানাডার দুজন এবং ইতালি, তাইওয়ান, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রিয়ার একজন করে নাগরিক ছিলেন।
আরোহীদের স্বজনদের প্রতি বান কি-মুনের সমবেদনা : জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানযাত্রী ও ক্রুদের আত্দীয়-স্বজনদের কাছে তার শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। জাতিসংঘ মুখপাত্রের দফতর টুইটারে পোস্ট করা এক বার্তায় বলা হয়, মালয়েশীয় বিমান দুর্ঘটনায় এত বেশি লোকের মৃত্যুতে বান কি-মুন গভীরভাবে শোকসন্তপ্ত। এএফপি, বিবিসি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।