আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গার্মেন্টে শিশুশ্রম শোষণ চলছেই

বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোয় যুক্তরাজ্যের ক্রেতাদের জন্য পোশাক উৎপাদনে মেয়েশিশুদের ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই অমানবিক পরিবেশে ১৩ বছর বা এমন বয়সী মেয়েশিশুরা কাজ করে যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইটিভিতে প্রচারিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সেদিন দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে এঙ্পোজার অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে গোপনে সেখানকার পরিবেশের দৃশ্য ধারণ করা হয়। এতে দেখা যায়, লি কুপার, বিএইচএসসহ যুক্তরাজ্যের যেসব প্রতিষ্ঠানের পোশাক বাংলাদেশের গার্মেন্টে তৈরি হচ্ছে, এসব কারখানার শ্রমিকদের শারীরিক ও মৌখিকভাবে হয়রানি করা হয়। এসব কারখানায় অগি্ন-নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেই।

প্রামাণ্যচিত্রে দেখা যায়, ভাস অ্যাপারেলস নামের একটি কারখানায় আগুন লাগার পর শ্রমিকদের বের হওয়ার যে বিকল্প পথ রয়েছে, তার দরজা তালাবদ্ধ। অথচ গত কয়েক বছরে আগুন লাগার পর কারখানার ভেতরে আটকা পড়ে শত শত শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

আইটিভির গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্যে মিরপুরের ওলিরা নামের আরেকটি কারখানায় দেখা যায়, একজন নারী শ্রমিককে সপ্তাহে ৮৯ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। দ্রুত কাজ করছে না- অভিযোগ তুলে কিশোরী শ্রমিকদের হয়রানি করছেন কারখানাটির পুরুষ ব্যবস্থাপকেরা। বড় অর্ডারে হাঁপিয়ে যাওয়া কর্মীদের তারা রাতভর কাজ করতে বাধ্য করেন। নির্দেশ অমান্য করলে মারধর বা চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখানো হয়। আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী কর্মীরা দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা কাজ করবে। তবে কারখানাগুলোয় শিশু শ্রমিকদের ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে প্রামাণ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে। ১৪ বছর বয়সী এক শিশু শ্রমিক গোপন ক্যামেরা বহনকারীকে বলেছে, 'খাওয়ার জন্য আমাদের কাজ করতে হয়'।

ভাস অ্যাপারেলসে ধারণ করা দৃশ্যে আরও দেখা যায়, পরিদর্শকরা কারখানা পরিদর্শনে গেলে তাদের প্রশ্নের জবাবে কী উত্তর দিতে হবে, তা শ্রমিকদের শিখিয়ে দিচ্ছেন ব্যবস্থাপকরা। তারা কারখানার কর্মপরিবেশ সম্পর্কে মিথ্যা বলতে শ্রমিকদের শিখিয়ে দেন। ওই দিন বড় একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শকদের ওই কারখানা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল। প্রামাণ্যচিত্রে ভাস অ্যাপারেলসের মালিকরা দাবি করেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা 'নৈতিক সম্মতি নিরীক্ষণ' পরিচালনা করেছেন। ওলিরা গার্মেন্টের মালিকদের দাবি, তাদের কারখানায় কোনো শিশু শ্রমিক নেই। তাদের ভবনে অন্য কারখানায় শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.