রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানবতার মূর্ত প্রতীক। কিশোর বয়সেই তিনি মানব কল্যাণে 'হিলফুল ফুজুল' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। কুরাইশদের নিষ্ঠুর অত্যাচারের মুখে তিনি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হন। সেখানে মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের সমন্বয়ে তিনি রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলেন। মদিনা রাষ্ট্রের সংবিধান বলে বিবেচিত হতো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রণীত সুবিখ্যাত 'মদিনা সনদ'। এ সনদ ছিল নিম্নরূপ_
১. সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী সব শ্রেণী ও ধর্মের লোক ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে একটি জাতি গড়ে তুলবে।
২. আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন।
৩. কোনো শ্রেণী বা সম্প্রদায় গোপনে শত্রু পক্ষ বিশেষত কুরাইশদের সঙ্গে সন্ধি করতে পারবে না।
৪. রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কেউ কুরাইশদের কোনোরূপ সাহায্য করতে পারবে না।
৫. যে কোনো বহিরাক্রমণকে রাষ্ট্রের বিপদ বলে গণ্য করতে হবে এবং সবাইকে সেই আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য অগ্রসর হতে হবে।
৬. মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি এবং অন্যান্য সব সম্প্রদায়ই ধর্মীয় ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে।
৭. নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
৮. রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের এবং তিনিই হবেন সর্বোচ্চ বিচারক।
৯. শত্রুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্র রক্ষার ব্যাপারে সব ব্যক্তিই মুসলমানদের পক্ষে যোগদান করবে।
১০. উৎপীড়িতকে সর্বাবস্থায়ই রক্ষা করতে হবে।
১১. অতঃপর সব ধরনের রক্তপাত, কলহ ও অন্যায় অপরাধ নিষিদ্ধ থাকবে।
১২. নিজ নিজ পেশা ও ব্যবসা প্রতিপালনের স্বাধীনতা সবার থাকবে।
১৩. সব নাগরিকের ওপর ন্যায়সঙ্গত কর ও খাজনা ধার্য করা হবে।
মদিনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন এক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে সব ধর্মের সমধিকার নিশ্চিত করা হয়। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সূত্রপাত হয়েছিল আখেরি নবী মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত ধরে।
লেখক : ইসলামী গবেষক।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।