আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রেন পরিচালনায় সমন্বয়হীনতা একে অপরকে দোø

সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনায় দায়িত্বশীল বিভাগীয় প্রধানদের সমন্বয়হীনতায় নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে পূর্বাঞ্চলের জিএম চিঠি দিয়েছেন রেলের পরিবহন বিভাগসহ গুরুত্বপূর্ণ চার বিভাগে। এতে জিএমের দাবি নাকচ করে চিঠির জবাবে জনবল সংকটকেই প্রধান সমস্যা বলে উল্লেখ করে চিঠি ও মৌখিকভাবে উত্তর দিয়েছেন রেলের প্রকৌশল, পরিবহন, যান্ত্রিক ও সংকেত বিভাগ। এ চিঠি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে আছেন উভয়েই। তবে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পূর্বাঞ্চলের জিএম মোহাম্মদ মকবুল হোসেন গতকাল বিকালে ফোনে বলেন, আমি ঢাকায় একটি মিটিংয়ে আছি। চট্টগ্রাম এসেই রবিবার অফিসে চার বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বৈঠক করে সমস্যার সমাধানের জন্য বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তবে এখনো সব বিভাগ লিখিতভাবে জানায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের অধিকাংশ কর্মকর্তা বলছেন, রেলের বিভিন্ন বিভাগে কোথায় কী সংকট, কী সমস্যা ও কী পরিমাণ জনবল সংকট আছে তা জিএম অবগত নন। যার কারণে 'উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ের' মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ আনেন। এর মাধ্যমে রেলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার সম্পর্কে জিএম অবগত না থাকার বিষয়টিই পরিষ্কার হয়। তারা বলেন, বর্তমান জিএমের ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রে তেমন অভিজ্ঞতা নেই বলেই মাঝে-মধ্যে আমাদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।জিএমের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পূর্বাঞ্চলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার একেএম মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, লোকবলের সংকটের বিষয়ের পাশাপাশি বর্তমানে সীতাকুণ্ড-ভাটিয়ালীতে ৩৪ নং ব্রিজের কাজ চলছে। রেলের শুধু পরিবহন সেক্টর নয়, রেল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিটি সেক্টরেই শূন্য জনবল দ্রুত নিয়োগ দরকার। তিনি বলেন, রেলে আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয়সহ সব বিষয়ে মনিটরিং হচ্ছে বলেই এত নাশকতাসহ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেই বর্তমানে সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনা হচ্ছে। তবে জনবল সংকট থাকলে কিছুটা তো অসুবিধার সৃষ্টি হবেই।

রেল সূত্রে জানা যায়, ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্বাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মকবুল আহাম্মদ সুষ্ঠু ট্রেন পরিচালনা এবং সময়ানুবর্তিতা ও নিরাপত্তার সঙ্গে ট্রেন পরিচালনার জন্য বিভাগের প্রকৌশল, পরিবহন, যান্ত্রিক ও সংকেত বিভাগে চিঠি দিয়েছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয়ের অভাবে ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে জনমনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং রেলের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, সেন্ট্রাল কন্ট্রোল থেকে অনেক ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা হয় না। এই চার বিভাগের মনিটরিং বাড়ানোর বিষয়েও উল্লেখ করেন জিএম। জিএমের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবহন দফতর থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি আরেকটি চিঠি দিয়েছেন পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (সিওপিএস) মো. মিয়াজাহান। এতে তিনি পরিবহন পরিচালনার ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা নয়, মূল চালিকাশক্তি হিসেবে লোকবল প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। তিনি চিঠিতে আরও উল্লেখ করে বলেন, সময়ানুবর্তিতা শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই ৮৫ শতাংশ অনুযায়ী সময় ঠিক রাখতে বিভাগীয় কন্ট্রোলসহ জোনালকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করতে নির্দেশনা রয়েছে। এই সময় ঠিক রাখতে জনবলসহ বিভিন্ন সমস্যাই প্রতিবন্ধকতা কাজ করছে। চিঠিতে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে ৭টি পয়েন্টে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে মূল বিষয়টিতে রয়েছে ট্রেন নিয়মিত পরিচালনা করতে হলে অপারেটিং স্টেশন মাস্টারের ৭৮ শতাংশ, বিভিন্ন শ্রেণীর ট্রেন পরিচালক (গার্ড) ৪৯ শতাংশ, পয়েন্টসম্যান ৩২ শতাংশ, সান্টিং স্টাফ ৬৫ শতাংশ এবং ট্রেন কন্ট্রোলারের ৫৫ শতাংশ শূন্য পদ দ্রুত পূরণ বা নবনিয়োগসহ গতি নিয়ন্ত্রণাদেশ প্রত্যাহার, বন্ধ স্টেশনগুলো খুলে স্টেশন মাস্টার নিয়োগ, ট্রেন থামিয়ে চেকিং প্রোগ্রাম পরিচালনা, প্রতি ট্রেনের রেক কম্পোজিশন মোতাবেক সক্ষম লোকোমোটিভ জোগান দেওয়া হলে প্রায় সমস্যার সমাধান হয়ে আসবে। অন্যথায় সব বিষয়ে উন্নয়ন করা সম্ভব নয় বলে বিস্তারিত বলা হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.