গোয়েন্দা পুলিশ জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ ভ্যান থেকে জেএমবির তিন শীর্ষ নেতাকে কমান্ডো কায়দায় ছিনতাই করার পেছনে এই দুই ব্যবসায়ীর অর্থায়নের প্রমাণও পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মতে, ছিনতাই মিশন সফল করতে অর্ধকোটি টাকার বাজেট করা হয়েছিল। এ টাকার পুরোটা দেন ওই দুই ব্যবসায়ী। আটক দুই ব্যবসায়ী গার্মেন্ট ব্যবসার আড়ালে জাল টাকা ও হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা জঙ্গি সংগঠন জেএমবির অর্থায়ন করে আসছিলেন। অল্প দিনের মধ্যে তারা বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হন জাল টাকা ও হুন্ডি ব্যবসার বদৌলতে। তাদের মালিকানাধীন গার্মেন্টে জেএমবি সদস্যদের চাকরি দেওয়া হতো। আটক জেএমবি সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হতো এই দুই ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহের আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রিজন ভ্যান থেকে জেএমবির তিন শীর্ষ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে দুই ব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতা উদ্ঘাটিত হয়। জঙ্গি কানেকশনের সূত্র ধরে পুলিশ সাতটি বিদেশি পিস্তল, বিস্ফোরক এবং গোলাবারুদসহ দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ। জঙ্গি সংগঠনের সদস্য এবং অস্ত্রশস্ত্র আটকের পাশাপাশি জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরও পাকড়াও করা দরকার। জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার সফল হলেও অর্থায়নের উৎস বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ যাবৎ তেমন কোনো সাফল্যের পরিচয় দেয়নি। দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমই বলা যায়। আমাদের মতে, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধে হুন্ডি ব্যবসা এবং জাল নোটের কারবার বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। জাল নোটের ব্যবসার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী একটি দেশের সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা একটি ওপেন সিক্রেট। জঙ্গিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হলে জাল নোট এবং হুন্ডি ব্যবসার হোতাদেরও উপড়ে ফেলতে হবে। আইনের ফাঁকফোকরে হুন্ডি ও জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা যাতে ছাড়া না পায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।