আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব সম্ভবের দেশ: চীন-১ [বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে]

ভুল করেছি,প্রায়শ্চিত্য করবো না, তা তো হয় না ১. আমরা ছোটবেলায় বাংলা বইয়ে একটা গল্প পড়েছিলাম, এক ছিল এক দেশ যেখানে কেউ মারা গেলে তাকে খাড়া করে কবর দেওয়া হয় কেননা এতে জায়গা কম লাগে। চীন বইয়ের গল্পের চেয়েও আরও একধাপ এগিয়ে, কেউ মারা গেলে তাকে পুড়িয়ে ফেলা হয়। মরদেহের ছাই একত্র করে একটা পাতিলে ভরে মাটিতে পুঁতে ফেলে তার উপর একটা নামফলক বসানো হয় যাতে মৃতের স্বজনরা তাকে স্মরণ করে পুষ্প দিতে পারে। চীনারা মনে তাদের দেশে জনসংখ্যা অনেক তাই লাশ কবর দিয়ে জায়গা নষ্ট করা যাবে না। আর কারো কবর বাঁধানো কিংবা কোটি কোটি টাকা খরচ করে নয়নাভিরাম মাজার বানানোর তো প্রশ্নই আসে না।

এমনকি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাও চে তং এর কোন মাজার নেই। এই নিয়মটা শুধুমাত্র যারা ধর্মে বিশ্বাসী নন তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর ১০% মত লোক যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। জায়গা বাঁচানোর জন্য কি আচানক নিয়ম!!! ২. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ব্যবহার করা জিনিস ক্যাম্পাসের ফুটপাতে বিক্রি করে। কোন একটা বই পড়া হয়ে গেলে সেটা বেঁচে ফলে।

সিনিয়রদের কাছ থেকে জুনিয়ররা বই কিনে নেয়। আমাদের দেশের মত নীলক্ষেতে কিংবা রাজশাহীর সোনাদীঘির মোড়ে কিংবা টাংগাইলের করটিয়াতে কেউ পুরনো বই বিকিকিনি করতে যায় না। এতে করে কোন মধ্যস্বত্ব ভোগীর খাওয়া নেই বলে যে ছাত্র বই বিক্রি করে সে একটু বেশি দামেই বিক্রি করতে পারে। এরা বইয়ের পাশাপাশি জামা-কাপড় থেকে শুরু করে চুলের ক্লিপ, হেয়ার ব্যান্ড, টপস্ , টেবিল ল্যাম্প সব সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস বিক্রি করে। তবে অবশ্য কাউকে সেকেন্ড হ্যান্ড বক্ষবন্ধনী কিংবা আন্ডি বেঁচতে দেখি নি চিন্তা করুন টিএসসি তে যদি কোন ছাত্র তার ব্যবহৃত এইসব জিনিস বিক্রি করে তাহলে সাথে সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংঘটন মিছিল বের করবে প্রশাসনের উচ্চ বেতন, পরীক্ষার ফি পরিশোধ করতে গিয়ে ছাত্ররা বাধ্য হচ্ছে তাদের পরনের জিনিস বেঁচতে।

৩. চাইনিজ ছেলেরা তাদের গার্ল ফ্রেন্ডের ভেনেটি ব্যাগ নিজে বহন করে আর মেয়েটি খালি হাতে ঘুরে। এবার একটু চিন্তা করুন ফার্মগেটে কোন যুগল হেঁটে যাচ্ছে ছেলের হাতে পার্স !!! মানবজমিন যদি এই দৃশ্য দেখে তাহলে কি অবস্হাটা হবে, ছাইয়া হিজড়া ট্যাগ দেওয়ার পাশাপাশি রং চং মিশিয়ে জটিল স্টোরি বানিয়ে ফেলবে। ৪. রাস্তায় চলার সময় মেয়েরা ছেলের কাঁধে চড়ে, দুই হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে আর দুই পা দিয়ে কোমড় বুক আঁকড়িয়ে থাকে। ছেলেরা মনুষ্য বস্তা নিয়ে বাস ষ্টপে দাঁড়িয়ে থাকে কিংবা ফুটপাতে হেঁটে চলে। কল্পনা করুন ঢাবির ফুলার রোডে কিংবা রাবির প্যারিস রোডে কেউ এমন করছে চাইনিজ ছেলেরা এটা পারে কারন অধিকাংশ মেয়ের ওজন ৫০ কেজির কম।

৪৬ কেজি হলেই মেয়েরা ডায়েট কন্ট্রোল করা শুরু করে। এদের টার্গেট থাকে কোমড় হবে ২১ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এমনও মেয়ে আছে যাদের কোমড় ১৭। ৫. এদের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ এত দ্রুত সত্যি কল্পনাতীত। আমি যে ফ্ল্যাটে থাকি তার জানালা দিয়ে প্রতিদিন সকালে অদূরে বয়ে চলা ইংরেজী এল অক্ষরের মত একটা নদী দেখতাম। মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে সেটা এখন আর দেখতে পারি না।

নদীটা যেখানে মোড় নিয়েছে সেখানে ২টা ব্রিজ একে অপরের উপর লম্ব অনেকটা ভৈরবের সমান্তরাল দুই সেতুর মত কেননা এই দুইটার একটা সড়ক সেতু আর একটা রেল সেতু। এই দুই সেতু থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে আর একটা নয়নাভিরাম সড়ক সেতু যার মাঝখানে সুউচ্চ টাওয়ারের মত আছে যা থেকে দুই দিকে স্ট্রিং গুলো নেমে গেছে। আমি যে ভবনে থকি তা থেকে ঐ নদীর দূরত্ব আনুমানিক ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার হবে। নদীর পাড় ঘেঁষে এই পুরো এলাকাটা হাই রাইজ বিল্ডিংয়ে ছেয়ে গেছে। উল্লেখ্য আমি ভবনের ১৮ তলায় থাকি আর ঐ নয়নাভিরাম সেতুর টাওয়ারের উচ্চতাও ২০ থেকে ২৫ তলার কম হবে না।

নিজের কাছেই অবাক লাগে সত্যিই কি ১ বছর আগে আমি জানালা দিয়ে নদীটা দেখতে পেতাম!!! আমার হাউজমেট ১ বছর আগে যখন এই ফ্ল্যাটে এসে উঠে তখন জানালার পাশে দাঁড়িয়ে নদীটার একটা ফটো তুলেছিল যা এখন কেবলই ইতিহাস। গানটাও মনে পড়ে গেল "ছবি যেন শুধু ছবি নয়" মাত্র ১ বছরের মধ্যে নদীর পাশে পুরো ১টা স্যাটেলাইট সিটি গড়ে তুলছে। এরা কোন অবকাঠামোতে হাত দিয়ে আবার কাজ বন্ধ রাখে না। দ্রুততার সাথে শেষ করে তা থেকে আউটপুট বের করবে। আর আমাদের....... পত্রিকাতে দেখি অমুক নদীতে সেতুর কজ ১ যুগেও শেষ হয় নি!! আমার মনে হয় সারা দেশে যে পরিমাণ অসমাপ্ত ব্রিজ, কালভার্ট আছে অর্থাৎ জলে যে পরিমান টাকা ফেলে রাখা হয়েছে তা হলমার্কের জালিয়াতি করা টাকার কয়েকগুন হবে।

অথচ যদি একই পরিমাণ টাকা দিয়ে যে কয়টার কাজ শুরু করত সে কয়টা শেষও করত তাহলে ওটা থেকে পাবলিক আউটপুট পেত। পর্ব-২ পর্ব-৩ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.