একজন চরম বোরিং মানুষ, কোন এক্সসাইটমেন্ট নাই আমার মাঝে। চিল্লাপাল্লা ভালো লাগেনা। নিজ হাতে বাচ্চাটিকে নার্সের হাতে তুলে দিলাম। নিথর নিস্তব্ধ। নাকটা যেন আমার উপর রাগ করে আছে।
নিস্পলক চোখ, চোখের পানি।
ঠিক সেদিনকার মত, বারান্দায় পায়চারি করছিলাম আমি, কোন এক হাসিমুখ নার্সের আশা নিয়ে। নার্সের হাসিমুখ দেখতে পাওয়া এমনিতে বিরল ব্যাপার। তারপরও নতুন বাচ্চাদের কোলে নিয়ে বারবার মায়ের মমতা জাগিয়ে নার্সরা নাকি হাসিমুখেই আসে। দরজার পর্দা নাড়িয়ে ওই দূর আলোকের সব আলোকে সঙ্গে নিয়ে হাসিমুখে নার্স কাপড়ের একটা পুটলি আমার হাতে দিয়ে বলল, দেখেন তো! আপনার বাচ্চাটা কতটা ফুটফুটে হয়েছে।
মুখের চেয়ে চোখ টাকেই বড় লাগছিল। অথচ সেই চোখে কত কল্পনা, কত অবাধ আশা। সেদিন ও নার্সের হাতে বাচ্চাটিকে তুলে দিয়েছিলাম, বলেছিলাম মায়ের কাছে দিয়ে আস, আগে মাকে চিনুক।
জানেন!ঠিক তার উলটা টি হয়েছিল। আদরের ছোট্ট খুকী সব সময় যেন আমার কোলেই থাকবে।
দিনরাত বসে তাকিয়ে থাকা, চোখে চোখ রেখে হাত ধরা ছাড়া যেন কোন কাজ নেই। দোলনাটারো যেন নিস্তার নেই। দিন হোক রাত হোক-দুলুনি যদি আমি না দিয়ে ওর মা দেয়, তবেই খবর।
কিন্তু সব দিনই দিন থাকে না। দুই তিন মাসের পর দেখলাম বাচ্চার সেই উজ্জ্বল মুখখানা ফ্যাকাসে লাগছে।
আমাকে দেখলে তার সেই রঙ্গিন দুস্টু হাসি আমার চোখ থেকে যেন সুদুর হয়ে গেল। মেঘের ওই সাদা পেজা তুলোর মত সে যেন আর উড়ছিল না। ক্রমেই কালো মেঘ হয়ে বৃস্টিধারার মত ঝড়ে চলছিল।
আপনাদের সন্ধানীর দেয়া সে রক্ত আর তার শরীরে যায় নি। আমার ছোট্ট খুকীটির শেষ দিনের চোখ মেলবার কিছুক্ষনের বন্ধন তো আপনার সাথে ছিল।
আপনার সাথেও সে হয়তো খেলতে চেয়েছিল।
"সুখী সেই পৃথিবীর কোমল বাগানে চির উদ্দামরত সেই ছোট্ট খুকীর উদ্দেশ্যে" থ্যালাসেমিয়ার সেই অভিশাপ কাটিয়ে বৃষ্টি শেষে ভিজে রাস্তায় হয়তো সে ছোট্ট সাইকেলে বসে বাবার অপেক্ষা করছে। বাবা না ঠেললে তার সাইকেল তো এগুবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।