আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
PG13 v
কুটিকাল আমার বড় অদ্ভুত কাটছে। শুনছি আমি নাকি বেশ গুটলু গাটলু ছিলাম। সবাই নাকি আমার গাল খালি টিপতো। আর আমি উদাস হইয়া তাগো চেহারার দিকে তাকাইয়া ভাবতাম,"এ দাত মাজে নাই কেন?"
কিন্তু আমি দুনিয়া দেইখা এতই অবাক ছিলাম যে প্রথম দুই বছর অবাকের ঠেলায় কথাই কইতে পারি নাই।
যাই হোক, সেইটা নিয়া চিন্তায় ছিলাম না, আমি চিন্তায় থাকতাম কখন আমার ফিডার খান আমার কাছে দুলতে দুলতে আইবো আর তারে খাইয়া আমি নিদ যামু। আমার আম্মাজানের ভাষ্যমতে আমার ঘুমের মধ্যেও নাকি একটা আর্ট ছিলো। আর্ট টা কি, আমার বাম ঠ্যাং থাকতো পশ্চিম দিকে একটা বালিশের উপর আর ডাইন থাকতো পূর্ব দিকে আরেক বালিশের উপর। আরামের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ! পরে যখন আরেকটু বড় হইছিলাম তখন বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারছিলাম কোন জায়গার কোন নবাব ঈশা খাও নাকি এইভাবে শুইতেন, তার সাথে আমার আরেকখান মিল আছিলো: উনি নাকি খাটের এক কোনা থিকা ঘুম শুরু করতেন শেষ করতেন আরেক আরেক জায়গায় গিয়া অবশ্য সেই ঘুম নাকি হইতো হেরেম শরীফে আরো দুই চাইরজনের লগে। সে এক বড় এ্যাডভেন্ঞ্চারাস গভীর ঘুম ছিলো।
যাই হোক এইভাবে নাকি আমার নাদান কাল কাটছে বইলা আমার পাড়া প্রতিবেশী মুরুব্বি যারা তারা জানায়। আরো যেইটা জানতে পারি আমার সাইজ ভাত রান্ধনের ভুটকা পাতিলের সাইজের সাথে তেমন পার্থক্য ছিলো না। খাইতাম আর ঘুমাইতাম আর জাপানী সুমো হওনের তালে নাকি ছিলাম। অবশ্য আমার খাওনের একটা ব্যাপার ছিলো, আমারে একটা ঢাউস সাইজের দুইটা দুধের ফিডার ধরাইয়া আম্মা জান তার কাজে চইলা যাইতো, আর আমি লাটসাবের নাতীর মতো মাথার পিছনে দুইটা বালিশ দুই ঠ্যাং এর নীচে দুইটা বালিশ আর সাথে টিভি। খাওন হইলে ফিডার দুই খান এক চ্যাঙ্গা মারতাম বারান্দার খাড়াইয়া থাকা বিলাইটার দিকে।
যদিও বিলাইটা পর্যন্ত ফিডার দুইখান না গিয়া সেও লাটসাবের মতো কাছাকাছি জায়াগায় পইড়া ভচকাইতো আর আমার মায় সেই শব্দ শুইনা পিটাইতে আইসা দেখতো আমি অলরেডী ভুড়ি দুলাইয়া ঘুম। যাই হোক প্রত্যেকদিন নয়া বোতল একটু ঝামেলার বিষয় আর তাই দাদাজান নিজেই দায়িত্ব নিলেন আমারে গইড়া তুলানের। মাগার কে দেখে কার দেখা! যখন হাটা শিখলাম তখন আমি মাঝে মাঝেই চইলা যাইতাম বাড়ীর সাথে থাকা তালতলার মাঠে সরিষা ক্ষেত দেখতে। যেহেতু আমি সাইজে ছিলাম ছোট, সেহেতু চকটারে মনে হইতো বিশাল তেপান্তর, মনে হইতো কোনো এক রাজকুমার ঘোড়ায় চইড়া যাইবো এই মাঠ দিয়া রাক্ষস খোক্ষসের দেশে কোনো মায়াময়ী রাজকুমারীকে উদ্ধার করতে।
আমি উদাস হইয়া বইসা থাকতাম আর চিন্তা করতাম জসীম উদ্দিনের রুপকথার গল্প আর চাইয়া থাকতাম সাদা সাদা মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে, কখনোবা হলুদ সরিষার ক্ষেতে।
আমার এরম উদাস হইয়া চাইয়া দেখতে দেইখা আশেপাশের পুলাপান আইসা জুটতো। তারা আইসা জিগাইতো,"কি দেখো?"
- আকাশ দেখি। কি সুন্দর দুধের রং হইছে! আবার দেখতে ফুলকপির মতো।
-আসলেই। আমাগো ক্ষুধা লাইগা গেলো।
যাই খাইয়া আসি।
এই বইলা পুলাপান সব চইলা যাইতো আর আমি উদাস হইয়া বইসা থাকতাম। আমার উদাস ভাব কাটতো অবশ্য হাফপ্যান্টের চিপা দিয়া ঢুকা লাল পিপড়ার কামড়ে। ঐ সরিষার ক্ষেতে রেগুলার লাল পিপড়ার কামড় খাইতে যাওয়া আসা আমার আম্মাজান মোটেই পছন্দ করেননাই। তাই ভাবলো আমারে যেমন কইরাই হোউক পড়ালেখা শিখাইয়া বিদ্যার টাইটানিক বানাইবো।
মাগার তার এই ভয়ও আছিলো আমার বিদ্যার টাইটানিক তলানী জানি উইদাউট সিগন্যালে না ফাটে। তাই সে কোমড় বাইন্ধা লাগলো বিদ্যার জাহাজ বানানের প্রজেক্টে কথা শিখনের আগেই স্বরে-অ,স্বরে-আ শিখাইতে। আমি ভাবলাম আমার শের শাহী দিন শেষ।
তবুও মাঝে মাঝে আমি ক্ষেতের ধারে যাইতাম আর উডাস হইয়া বসতাম লাল পিপড়ার বাসার উপর। ঐ ক্ষেতে আমার রোজ একজনের সাথে দেখা হইতো, নাম গুজরান খা।
সে ক্ষেত দেখতো আর গরু ছাগল তাড়াইতো। কথা বলতো বাহারী চালে। একবার গরু ছাগল তাড়াইতে গিয়া লাঠি দিয়া আমার পশ্চাদ্দেশে এমুন বাড়ী মারছিলো যে সেই ব্যাথায় আমি কাইন্দা বাসায় আইছিলাম, মাগার আম্মাজানরে দেইখা টিউব লাইটের মতে ফিউজ হইয়া যাই। আমি অবশ্য পুরা ব্যাপারি বংশে তখনও একমাত্র চেরাগ ছিলাম বইলা আমার দুই কাকা আর ফুফুরা অনেক আদর করতো। ছোট কাকারে আমি বেশ ফলো করতাম।
তার অনেক বদ অভ্যাসের সঙ্গীও ছিলাম। যেমন তার পুচকি আর অতি বুইড়া লোকের লুঙ্গি টাননের অভ্যাস ছিলো। এলাকায় অবশ্য সে ঘুরতো দল বাইন্ধা। মাঝে মাঝেই বুড়ারা আসতো দাদার কাছে বিচার চাইতে। তাগো সেম ডায়লগ- গোসল করতে গেছে লুঙ্গী পাল্টাইতে গিয়া দেখে লুঙ্গি নাই।
আবার কেউ হয়তো বইসা রইছে, হঠাত দৌড়াইয়া আইসা এক টানে লুঙ্গি খুইলা ফেলাইলো। মাঝে মাঝেই দাদাজান দিতো পিটানি। উল্লেখ্য কাকাজান আমার চেয়ে ৬ বছরের বড়। মাগার হের লগে খুব জমতো। কারন তার আকামের কিছু অংশ আমিও শেয়ার করতাম, আমি টানতাম কুটি পুলাপানের লুঙ্গি।
সে এক দিন ছিলো।
যাই হোউক আইজ এ পর্যন্তই!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।