আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
ইদানিং বেশ ব্যাস্ততায় দিনকাটে। ব্যস্ততার মাঝে মনে হয় এক সময় কোনো কাজ করবো না, শুধু ভাববো অতীতের কথা।
ইদানিং খুব মনে পড়ে আমার পুরোনো বন্ধুদের কথা। কুফা জাহিদটার বাসায় যেতে মন চাইছে আজ।
কাজিপাড়ায় থাকতো ছেলেটা। কলেজে প্রথম এসে এই ছেলেটার সাথে দেখা এবং প্রথম দেখাতেই মনে হলো ছেলেটা মিশতে পারে যেকোনো পরিবেশে। আমরা মাঝে মাঝেই ফার্মগেটের খ্রীস্টান পাড়ায় আড্ডা বসাতাম। তখন ওখানে সুইডেন আসলামের ছোট ভাই জাকির, লীগের কচি ভাই ছিলো প্যাসিফিক এ্যাসেম্বলির হর্তাকর্তা। আমাদের ঐ আড্ডায় একটা ছেলে ছিলো "ক্যালকাশিয়ান" আলাউদ্দিন।
সাইজে বাট্টু হলে কি হবে, এলাকায় এমন কোনো ক্যাডার নাই যে ওরে মাইর দিয়া তাগো ক্যাডার লাইফ শুরু করে নাই। এক্সারসাইজ করতে করতে পেটে ৬টা এ্যাবস বের করে ফেলেছিলো। একবার কি হলো,কোরবানী ঈদের আগে হঠাত জাকির ভাই এসে ওর কলার ধরে,"তোর নাম কি?" চারিদিকে পোলাপান প্রায় ঘিরে ফেলেছে!
-জ্বী, আলাউদ্দিন!
কাপতে কাপতে আলাউলের জবাব।
-আবার যদি ঐ খানে দেখি তর ঠ্যাং এর নলি ভাইঙ্গা দিমু!এখন এইখানে খাড়া তরে সাইজ করতাছি!
আমাদের অনেকের ছোটাছুটি শুরু হয়ে গেলো। এলাকার পুলাপান জড়ো করে তার মাথা ঠান্ডা করার ব্যাবস্হা করতে হলো।
পরে যেটা জানতে পারলাম জাকিরের কোনো এক বোনের সাথে আলাউদ্দিন টাংকি মারতে প্রতিদিন। ওর স্কুলের পথে দাড়িয়ে থাকতো,পিছু নিতো, শয়তানী করতো। হঠাত একবার ও সাহস করে একটা চিঠি ছুড়ে দেয় গ্রীন সিগন্যাল পেয়ে। ও তখনও জানতো না এই মেয়েটা কে? যাই হোক সেই যাত্রায় ওর মাথা মুন্ডানো হয়, আর তেমন কিছুই খোয়াতে হয় নাই। আরেকবার থার্টিফার্স্ট নাইটে খুব হল্লাহাটি হলো।
এলাকার বড় ভাইদের সাথে অনেক বিটলামী। তখন রিগ্যানদের বাসায় জায়গা না হওয়ায় সবাই শুতে গেলাম আলাউদ্দিনের বাসায়। কারন রাতের বেলা গান আর গ্যান্জ্ঞাম করার পর অবস্হা ছিলো না বাসায় যাবার। ওর বাসায় যাবার পর ও লুঙ্গি দিলো সবাইকে। সকালে যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখি অধিকাংশ বাইরে বেরিয়ে গেছে।
আমি চোখে মুখে পানি দিয়ে বাইরে বেরোই। দেখি জাহিদ পাজকোলা করে আলাউদ্দিনকে উপরে তুলছে আর নামাচ্ছে। আমি বললাম," কিরে আবার কি করলো?"
জাহিদ বললো," আরে বলিস না,সকালে প্যান্ট পরার টের পাইলাম আমার সিণ্গাপুরী আন্ডুয়াটা চেন্জ্ঞ হইয়া গেছে। পরে শুনি আলাউদ্দিনেরটাও। এখন দেখি ওর ওয়েট মাপতাছি এই পিচকারটা আমার আন্ডুয়াটার পরার পর কত ওজনে বাড়লো!"
পরে শুনি কেউ কারো আন্ডুয়াটা ফেরত নেয় নাই।
জাহিদ এখন অস্ট্রেলিয়ায়। চট্রগ্রামে মেরিন ফিশারিজে পড়ার পর ওখানে এ্যাকাউন্টিং পড়তে চলে গেছে ২০০৩ সালে।
হয়তো সামনের বছর বিয়ে করতে আসবে হবে আবার একটা রিইউনিয়ন! তবে এখন মনে হয় অনেক বেলা পেরিয়ে গেছে।
আরো যাদের কথা মনে পড়ে তারা আহাদ, নাহিদ, জামিল, রাসেল, আহাম্মদ আলি, রাসেল লস্কর আরও কত। এদের সাথে নানা স্মৃতি আজও মিশে আছে।
যেমন নাহিদের একবার কি হলো এলাকার ঝর্নাকে বিয়ে করবে। পাগলা সাধেই পাগলা না, পুরা জাত পাগলা। ঝর্নার বাবা মা কোন মতেই চাইছিলো না, এই পাগলের সাথে ওর বিয়ে দেবে না। ও মাথা গরম করে পাশের কুমার নদীতে দিলো ঝাপ। ঝাপ দিয়েই পড়লো সমস্যায়।
কারন শীত কালে কুমার নদীতে হাটু পানি!
মাথাটায় আজ নস্টালজিক রোগে ধরছে। সবাই একে একে আসছে যাচ্ছে মাথার ভেতরে। পার্থর মাথানস্ট গানটা বার বার বাজছে বুকে:
একলা ঘরে ধুলোজমা গীটার
পড়ে আছে লেলিন পড়ে আছে সেক্সপীয়ার
টিশার্ট জিন্সগুলো দেয়ালে আছে
শুধু মানুষটা তুই নেই তো নেই কাছে
ও বন্ধু তোকে মিস করছি ভীষন
তোকে ছাড়া কিছু আর জমে না এখন!
আসলেই কিছু জমে না!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।