আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উদাসীর দূষিত জোসনা দেখা! এ বেলা চন্দ্রবিহার, সবকিছুরই চোখে আধার!

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

ধরতে গিয়ে হেরে গেছি দেখতে গিয়ে হেরে গেছি হাত বাড়ালেই কেউ নেই একাকীযে... -দলছুট (জোছনাবিহার) কালকে রাতে এক অদ্ভূত জোসনা ছিলো সারা শহর জুড়ে। আসলেই অদ্ভূত!ঢাকা শহরের জোসনাটা অবশ্য সবসময়ই দূষিত। কারন যেখানেই দেখতে গিয়েছি সেখানেই সোডিয়াম, নিয়ন লাইটে জোসনার আলো হারিয়ে গেছে। এরকম কি করা যায় না, জোসনার রাতে ঢাকার সব লাইট গুলো বন্ধ থাকবে, আমরা দল বেধে দেখতে যাবো জোসনাকে! অনেক চিন্তা করে মনে হলো কোনো বন্ধনে আবদ্ধ হবার জন্য উদাসীর জন্ম হয়নি।

সে ছন্নছাড়া জীবনের জন্যই উপযুক্ত। হয়তো একটা বাউন্ডুলে জীবনই তার জন্য উপযুক্ত। মাথায় একটা ঘোর লাগা নিয়ে সে ঘুরে বেড়াবে নগরীর আনাচে কানাচে। খুজে ফিরবে ঘোর কাটানোর গলি, যেনো পথ হারিয়ে ফেলা এক নিঃসঙ্গ হরিন! গতকাল দেখা হলো পুরোনো কিছু বন্ধুদের সাথে আইডিবির সামনে। সবাই এখনো আগের মতোই আছে, শুধু এডিশনাল ফিচার: এখন সবাই শৃঙ্খলার মধ্যে আছে।

কেউ স্বপ্ন দেখছে কাউকে নিয়ে ঘর বাধার, কেউ স্বপ্ন দেখছে জীবনটাকে নিজের মতো গড়ার। তবে সবার একটাই ইচ্ছা আজকের জোসনাকে গায়ে মাখা। এমন সময় আমার হলো নিম্নচাপ। আমি চলে গেলাম আইডিবির পাশের স্কুলের সামনে মেহগনির বাগানে। হঠাত দেখলাম ঝলমলে পোশাকে কেউ দাড়িয়ে আছে একুশে বাসের অপেক্ষায় তার মনের মানুষ সাথে।

সে ছিলো দাড়িয়ে তার ঘাড়ে মাথা দিয়ে। আমার সময় ছিলোনা ভাবার কারন আমার প্রয়োজন চাপ কমানোর। ফিরে এসে দেখি তারা চলে গেছে। চলে গেলাম বন্ধুদের মাঝে। ভুলে গেলাম কিছু ক্ষনের জন্য কি ভাবতে হবে বা কি ভাবার আছে।

কথা বলতে বলতে জানতে পারলে আমরা নাকি কেউ সম্মান ডিগ্রী না কারন ইন্জিনীয়ারিং ডিগ্রীটা নাকি সম্মান বা পাস কোনোটার আওতায় পড়ে না। আমি জিজ্ঞেস করলাম "তাহলে আমাদের তো আর মান সম্মান থাকলো না!" -আচ্ছা, এটা বল বিএসসি বা ব্যাচেলর অব সাইন্স মানে কি? - এটার মানে হলো আভিধানিক অর্থ অবিবাহিত বিজ্ঞানে, মানে বৈজ্ঞানিক ভাবে অবিবাহিত! সবাই হেসে লুটালো! যাই হোক এ আলোচনা শেষে তার কথা জিজ্ঞেস করলাম। সে বললো তার গল্প! সে যখন কথাবলছিলো অনেকটা এইভাবে: আমি তেমন ভালো ছাত্রী নই। যখন আমি বার্ষিক পরীক্ষা দিতাম, পাশ করার মতো পড়তাম। সবাই বলতো পরীক্ষা দিতে যাইবো এইটাই অনেক পাশ ফেল মেলা দূরে।

এইটা মনে কইরা পরীক্ষা দিতে যেতাম পাশও করতাম মানে হয় ১ম নাহলে ২য় হতাম। কিন্তু স্কুলটা আবার তেমন ভালো না, কারন গ্রামে গন্জ্ঞের স্কুল, ১ম হইলেই বা কি আর না হইলেই বা কি! যখন ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিলাম, তখন বাবা ডেকে বললো,"দেখো পরীক্ষা ভালো মতো দিয়ো, ভালো রেজাল্ট করবা সেই আশা করি না, তবে যেটা ভালো বুঝো সেভাবে দিয়ো। তোমারতো আর চাকরি করা লাগবে না। " আমি সে মনে করেই পরীক্ষা দিতাম। বেশী ভালো রেজাল্টের আশাও করি নাই।

কোনো মতে পাশ করলাম আর কি! -তা কি রেজাল্ট ছিলো? -কেমনে জানি স্ট্যান্ড করে ফেললাম। -ও! -তারপর ইন্টারে উঠলাম বাসার সবাই মনে করলো ভালো রেজাল্ট যখন করেই ফেলেছে তখন একটা কোনোরকম কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়া হোক। যেইভাবা সেই কাজ, গ্রামের কলেজে না ভর্তি করিয়ে সদরের কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলো। আমিও কোনো মতে পড়তে লাগলাম। বাসার সবাই ভাবলো ম্যাট্রিকে যখন ভালো রেজাল্ট করেছে, তখন ইন্টারেও ভালো রেজাল্ট করবে।

আমি অবশ্য অতটা আশাও করিনাই। গেলাম পরীক্ষা দিলাম এই আর কি? -মনে হয় স্টার পাও নাই, ঠিক না? -সেটা ঠিক না, তবে কেমনে জানি সেবারও স্ট্যান্ড করলাম। (আমি দেখি আমার পাশের একজন হা হয়ে বসে পড়লো) তারপর ভর্তি পরিক্ষা। বাবা-চাচারা চিন্তা করলো এরকম ধুম ধাড়াক্কা রেজাল্ট এখনতো ঢাকা পাঠাতেই হয়, কিন্তু থাকবো কার কাছে সেটা নিয়ে সমস্যা। যাই হোক, পরীক্ষা তেমন ভালো কোনো জায়গায় দিতে পারিনি, আর আমি তেমন একটা আশাবাদীও ছিলাম না।

-বলো কি তাই বলে বুয়েটে না দাও বিআইটি, মেডিকেলে দিতে পারতা? সেটা করো নাই কেন? -আসলেই আমি বুঝতে পারিনি। ভর্তি পরীক্ষা দেবার পড় দেখি বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যালে চান্স পেলাম। (এবার আমার পাশে আরো একজন বসলো) তারপর পাশটাশ করার পর কোনো মতে একটা রেজাল্ট হলো ভাবলাম একটা চাকরি খুজি। বাবা মা বললো দেশে চলে আসতে তাদের ব্যাবসা দেখি আর বিয়ে করি। আমিও তাই ভাবছিলাম।

চলেও যেতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু যাবার আগের দিন দেখি একটা চিঠি এসে পৌছলো। -হুমম, প্রেমপত্র তাই না? কে দিলো? -সেটা দিলে তো ভালোই হতো! এত সুন্দর চেহারা নাম তার পেয়ারা- একথাটা আর তুমি বলতে পারতে না। -আবারও পিন? - আরে সেটা না। যাই হোক চিঠিটা খুলে দেখি আমেরিকার একটা ভার্সিটি থেকে ফুল ফ্রী স্কলারশিপ, তারা আমার ফালতু রিসার্চ পেপারটা চুজ করেছে। গতকাল ভিসা পেলাম! আমি আর বন্ধুকে কিছু বলতে পারিনি!কারন কিছু বলার ছিলো না! এভাবেই দিন যাবে,পৃথিবী এগিয়ে যাবে আমাকে ফেলে! আমি হাসি ঠাট্টায় মজে যাই।

আসলেই জোসনাটা খুব সুন্দর, খুব দূষিত রকমের সুন্দর। আমি ঠিক করে ফেললাম আমি বাউন্ডুলেই থাকবো। কারো সম্পর্কে জড়াবো না, এ জোসনা দেখার লোভ ছাড়বো না। যারা আছে সম্পর্কে নিয়ে তাদের জানাবো বিদায়। ভালো আছি, একাই আছি! কারন আমি ধরতে গিয়ে হারতে চাই না, একাকী উপভোগ করবো জোসনা, কলূষিত হোক সৌন্দর্য চেতনা!


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.