আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
ইদানিং প্রচন্ড গরম পড়েছে, তবুও বিশ্বাস করো এ শহর তার এতটুকু সৌন্দর্য হারায়নি। প্রতিদিন পথে পথে ঘুরে দেখি কতনা বিচিত্র সব মানুষ, কি বিচিত্র তাদের খেয়াল! কিছু কিছু ছবি বুকে গেথে যায়। কিছুদিন আগে হয়ে গেলো পহেলা বৈশাখের নামে বিশাল মহোৎসব। আমি চলেও গেলাম টিএসসিতে, বিশাল জনসমুদ্রের মাঝে হারিয়ে গেলাম।
কিন্তু একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম এত ভীড়ের মধ্যে থেকেও আমি এক নিঃসঙ্গতার বেড়াজালে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম সেদিন। কাউকে দেখি কারো হাত ধরে মিস্টি করে হাসি দিয়ে হেটে যাচ্ছে এত গরম উপেক্ষা করেও, কখনবা কপালের চুলটা ঠিক করে দিচ্ছে। মনে পড়ে গেলো শৈশবের কোনো এলো স্মৃতি।
আমাদের পাশের বাসায় এক বড় ভাই ছিলেন নাম সেন্টু। খুবই উচ্ছল, সুদর্শন, বিশেষ করে তার হাসি।
হয়তো সেই হাসি নিয়েই সে জয় করেছিলো ভাবীর মন। একরাতে ভাগিয়ে এনে বাউন্ডুলে থাকতে থাকতেই বিয়ে করে ফেলেন। সেন্টু ভাই এলাকার যেকোনো খেলায় সবার আগে, যখন স্টেডিয়ামে কোনো বড় খেলা গড়াতো সে হায়ারে খেলতে যেতো। আমরা তার পিছে এক গ্রুপ হয়ে ঘুরতাম। কোনো একদিন দুভাই গেলো ঢাকা শহরের দিকে: উদ্দেশ্য ফ্যামিলি বিজনেসে হাত বাটানো।
কিন্তু সে রাতে আরিচার কাছে এক ফেরীর সাথে ধাক্কা লেগে তাদের লন্ঞ্চ ডুবে গেলো। সে সাতারে ছিলো মাছের মতো, যত গভীর থাকুক বা নদীতে থাকুক যতনা স্রোত, তার কাছে কোনো ব্যাপারই না। সে রাতেও সে খুব সাতরে ছিলো। কিন্তু ফেরীটার চালক লন্ঞ্চটা ডুবতে দেখে ফেরীটা ঘুরিয়ে ফেলে আচমকা আর তখন ফেরীর প্রোপেলারের ঘূর্নীর প্রবল টানে অনেকের মতো সেও হারিয়ে যায়। তার ভাই দুদিন লাশের জন্য নদীর পাড়ে ঠায় দাড়িয়ে ছিলো আর পাগলের মতো প্রলাপ বকেছিলো।
ঘটনা ঘটেছিলো ১৯৯৫ সালের দিকে। যতদূর জানি ভাবী শিক্ষিত হয়েও এখনও সাদা শাড়ি পড়েন, অশ্রু ফেলেন আপন মনে। ভালোবাসা কতটা গভীর হলে একটা মেয়ে আজও ১২ বছর অপেক্ষায় থাকে তার স্বামী ফিরে আসবে, তাকে বুকে টেনে এনে বলবে,"পাগলী কেমন আছিস?"
এরপরও তার অনেক বিয়ের সম্বন্ধ এসেছিলো, সে শুধু বলেছিলো," ও আসলে আমি কি জবাব দিবো?"
যাই হোক, এদেশের অধিকাংশ মানুষের মাথানস্ট, তাই খুজে দেখলে দেখা যাবে পড়ার ফাকে খাতার কোনো এক ভাজে লিখে রেখেছে মাথানস্ট কোনো কবিতা!
"হয়তোবা বৃস্টি ঝরেছিলো তোমার দুচোখ বয়ে
তোমার গাল বেয়ে চলেছিলো কস্টের বুড়িগঙ্গা
আমি হাত বাড়িয়ে ধরেছিলাম দুফোটা জল
হঠাৎ দমকা হাওয়ায় পাল্টালো জীবনের সংজ্ঞা! "
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এ নগরীর বিষন্নতা সব আমার জন্যই! কখনো কখনো রাস্তার দুঃখ গুলো আমাকে ছুয়ে যায়, এলো গলির কান্না আমাকে ডেকে বেড়ায়, পাগলা হাওয়ায় মাথা নাড়িয়ে গাছ গুলো উড়িয়ে নিতে চায়। এ শহরকে কেউ যদি কোনোদিন বলবার ক্ষমতা দিতো, হয়তো সেদিন অশ্রুতে বইতো হাজারো বুড়িগঙ্গা। নিঃস্ব এ পৃথিবীর বিষন্ন এক শহরে আজো কোনো বিরহে প্রতি রাতে কেদে চলে নিঃশব্দ সুরে।
খুব কম লোকই এ সুর শুনতে পারে, যারা শুনতে পারে তারা কি সত্যি হতভাগা না সৌভাগ্যবান?
আমি জানি না! কখনো জানি না!
শোন একটু দাড়াও, আকাশে কি জটিল চাদ!
ওটাকে নামাই হাতের মুঠোয়
অশ্লীল এক রুপের রহস্য
গ্রাস করুক অনুভূতি আমাদের মাদকীয় ভাবনায়!
সাহস হবেকি তোমার, এই বিশালতায় হারাতে?
যার জন্য এত অপেক্ষা, এভাবে কি বলেছিলো তোমাকে?
হায়! কখনো অর্থ যদি বুঝে থাকো বলতে একটিবার
এইতো সময় দূরে পালাবার নিঃশব্দ তেপান্তর!
তবু কি রাত অভিশপ্ত, নাকি সিক্ত ভয়ন্কর জোৎস্নায়
দোতারার সুরে অদ্ভুত অনুরক্ত
বহুদূরে বসেছে রূপের বাজার
নিলামে উঠেছে দেখো দৈহিক ভালোবাসার আর জৈবিক বাসনার!
লোকে বলে, লালপাড়ের বাজারে বয় আনন্দের বন্যা
দালালেরা গুনবে মজা সব সত্য মিথ্যা
বাস্তবতায় শুকিয়ে যায় বুকের নোনা জল
তবু রাত কাটুক আজ অবৈধ প্রেমের লেনেদেনে!
পারবো না ফেরাতে তোমায় নেমেছো নীল মায়ার মরিচীকায়
হারাতে নেমেছি সব আমি জোৎস্নার প্লাবনে
তুমি বন্ঞ্চিত হলে তবু আমার ভালোবাসার
পুজিবাদ মোড়কে হারাবে ইদানিং আবেগ তার পরাজিত অহমিকায়!
বেহাল স্বপ্নগুলোর বন্দিদশা, তাই হাহাকারগুলো জমা তালাকনামায়
ধার জমেছে যতো আকাশের কাছে
বিদায় জানাবো আজ মৃত জনপদে
কর্তব্য পালিত হোউক তোমার মিথ্যা ভালোবাসার!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।