নির্ধারিত সময়ে ২-২-এ সমতা। যোগ হওয়া সময়ে আক্রমণে বেসামাল শেখ রাসেল। ১০৩ মিনিটে পেনাল্টি পেল বিজেএমসি। জয় উদ্যাপনে প্রস্তুত খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা। প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের হাজার দুয়েক দর্শক।
সবাইকে হতাশ করে হাওয়ায় ভাসিয়ে বল বারের ওপর তুলে দিলেন বিজেএমসি অধিনায়ক ইকাঙ্গা!
ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানেও নখ কামড়ানো উত্তেজনা। অবশেষে সাডেন ডেথে জিতল বিজেএমসি। ফেডারেশন কাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে কাল ট্রেবলজয়ী শেখ রাসেলকে বিদায় করল ৫-৪ গোলে জিতে। অভিজ্ঞ গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য, একটি পেনাল্টি রুখে দিয়েছিলেন।
কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেননি।
৬ ডিসেম্বর প্রথম সেমিফাইনালে আবাহনীর প্রতিপক্ষ শেখ জামাল। পরদিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে খেলবে বিজেএমসি।
এবারের ফেডারেশন কাপে সবচেয়ে উত্তেজনায় ভরা ম্যাচটিই কাল দেখল দর্শকেরা। দু-দুবার পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্তভাবে সমতায় ফিরিয়েছে বিজেএমসি।
আর টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচটি পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। টাইব্রেকারে রাসেলের ম্যাক্সিম, ফ্রান্সিসকো, আমিনি ও মিঠুন গোল করলেও শাকিল বল পাঠিয়েছেন বাইরে। বিজেএমসির স্যামসান, বাঙ্গুরা, ফয়সাল, ইকাঙ্গা গোল করেছেন। সাইফুলের শটটি দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন বিপ্লব। নাটকীয়তার তখনো বাকি।
রাসেলের রেজাউলের বল ক্রসবারে লেগে ফেরে। আর জয়সূচক গোলটি করে বিজেএমসিকে আনন্দে ভাসান ফেলিক্স।
গতবারই ট্রেবল জিতেছে শেখ রাসেল, আর এবারই তাদের মলিন চেহারা। গ্রুপ পর্বে একমাত্র জয় নিয়ে উঠেছে শেষ আটে। গত মৌসুমের ৯ জন গেছেন বিভিন্ন দলে।
তার পরও ফ্রান্স, জ্যামাইকা থেকে ভালো মানের বিদেশি খেলোয়াড় আনা হয়েছে। কিন্তু বিদেশিদের সঙ্গে যেন মাঠে মানিয়ে নিতেই পারছেন না স্থানীয় খেলোয়াড়েরা। মাঝমাঠ থেকে ম্যাক্সিম কাল বেশ কয়েকটি বল বানিয়ে দিয়েছেন, মিঠুন একটা বলকেও কাজে লাগাতে পারেননি।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাসেলের হয়ে একাই যা লড়েছেন জাতীয় দলের একসময়কার সেরা গোলরক্ষক বিপ্লব। ম্যাচটি টাইব্রেকার পর্যন্ত নিয়ে গেছেন আসলে তিনিই।
তা না হলে বিজেএমসির শক্তিশালী ফরোয়ার্ড লাইন আগেই ম্যাচটিকে পুরে ফেলত মুঠোয়। দুই উইং দিয়ে সমানে আক্রমণে উঠেছেন বিজেএমসির বাঙ্গুরা ও স্যামসন। পক্ষান্তরে রাসেলের একমাত্র স্ট্রাইকার মিঠুন সারা মাঠ দৌড়েছেন। ম্যাচ শেষে কোচ মারুফুলের কণ্ঠে আক্ষেপ, ‘আমার আর কোনো স্ট্রাইকারই নেই। খেলাব কাকে?’
শুরু থেকে আক্রমণে গেছে রাসেলই।
২২ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় তারা। বক্সের মধ্যে দাঁড়ানো মিঠুনের হেড বিজেএমসির সাইফুলের পায়ে লেগে জড়ায় জালে। ৩৮ মিনিটে বাঙ্গুরাকে বক্সের মধ্যে অবৈধভাবে ফেলে দেন রাসেলের ডিফেন্ডার রজনী। পেনাল্টি থেকে বিজেএমসিকে সমতায় ফেরান ইকাঙ্গা। ৫৯ মিনিটে ফ্রান্সের ম্যাক্সিমকে বিজেএমসির গোলরক্ষক আরিফুল বক্সের মধ্যে ফেলে দিলে এবার পেনাল্টি পায় রাসেল।
স্কোরলাইন ২-১ করেন উসুকার। আর ৭৩ মিনিটে জটলা থেকে গোল করে ২-২ করেন বিজেএমসির স্যামসন। রেফারি অবশ্য এটিকে আত্মঘাতী গোল দেখিয়েছেন। এরপর যোগ হওয়া সময়ে পেনাল্টি থেকে জয়ের দারুণ সুযোগ পেয়েও সেটা হাতছাড়া করেছেন বিজেএমসির ইকাঙ্গা। ওই বলটি উড়িয়ে দেন বারের ওপর দিয়ে।
মৌসুম সূচক টুর্নামেন্টেই বিদায় ট্রেবলজয়ীদের। হতাশ মারুফুল ব্যর্থতা মেনে বললেন ‘ছেলেরা মোটেও পরিকল্পনামতো খেলতে পারেনি। অপরিপক্ব ফুটবল খেলেছে। সব বিভাগেই ব্যর্থ হয়েছে। ’ ওদিকে ৯০ মিনিটেই জিততে চেয়েছিলেন বিজেএমসির কোচ আলী আকবর নাসির, ‘নির্ধারিত সময়েই আমাদের জেতা উচিত ছিল।
দুটি গোল খাওয়ার পরও আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। ’
সেমিফাইনালে মুখোমুখি
৬ ডিসেম্বর আবাহনী-শেখ জামাল বিকেল ৫টা
৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা-বিজেএমসি বিকেল ৫টা
দুটি সেমিফাইনালই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।