আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাতিরঝিল বিড়ম্বনা

আধুনিক নির্মাণশৈলীর সঙ্গে নৈসর্গিক শোভার সমন্বয় হাতিরঝিলকে এক অনন্য বিনোদন কেন্দ্রের মর্যাদা দিয়েছে। প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার মানুষ আসেন সময় কাটানোর জন্য। শুধু রাজধানী নয়, বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে হাতিরঝিলের নাম। পাঁচটি থানার আওতাভুক্ত হওয়ায় বিনোদন কেন্দ্রটির ব্যাপারে কার্যত কোনো থানারই মাথাব্যথা নেই। আর এই সুযোগে হাতিরঝিল সুসংবদ্ধ অপরাধীদের মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। অবস্থানগতভাবে হাতিরঝিলের অবস্থান রাজধানীর ক্রাইম জোনের মধ্যে। দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপনা ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো বস্তি। মাদক, দেহব্যবসাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা বস্তিগুলোতে হয় না। হাতিরঝিলে রিকশা-ভ্যানগাড়ির যাতায়াত নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তা মানার কেউ নেই। ট্রাফিক পুলিশের সামনেই চলে আইন ভঙ্গের মহোৎসব। হাতিরঝিলে সন্ধ্যার পর আলো-অাঁধারীর খেলায় বসে গাঁজার আসর। ঝাউগাছের ঝোপে দিনদুপুরে ঘুরতে আসা তরুণ-তরুণীদের আপত্তিকর আচরণে বিব্রত হয় পথচারী ও ভ্রমণপিপাসু মানুষ। প্রকল্পের কয়েকটি পয়েন্ট ছাড়া কোথাও কোনো টহল পুলিশকে দেখা যায় না বললেই চলে। পশ্চিম প্রান্তের টঙ্গী ডাইভারশন রোডের দিক থেকে হাতিরঝিলে প্রবেশপথের ডান দিকে আলোর ব্যবস্থা নেই। তেজগাঁওর কুনিপাড়ার দিক থেকে হাতিরঝিলে যাতায়াতের পথটিও ডুবে থাকে অন্ধকারে। পূর্বদিকে রামপুরার ব্রিজঘেঁষা ও দক্ষিণে মহানগর প্রজেক্ট সংলগ্ন প্রবেশপথে আলোর ব্যবস্থা থাকলেও বাকি সব রাস্তা আলো-অাঁধারীর লুকোচুরিতে নিমজ্জিত। হাতিরঝিল প্রকল্পের আশপাশের বস্তি এলাকাকে ঘিরে চলে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ। সন্ধ্যা হতেই শুরু হয় যৌনকর্মীদের উপস্থিতি। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। যানবাহন চলাচলে কোনো নিয়মনীতি না থাকায় গত তিন মাসে হাতিরঝিলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অন্তত ১০ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। হাতিরঝিলে বহির্গামী গাড়ির চাপে কখনো কখনো মেরুল বাড্ডার মোড়ে এত বেশি যানজট লাগে যে, পার হতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়। রাজধানীর সেরা বিনোদন কেন্দ্রের অব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। এ অবস্থার অবসানে হাতিরঝিল এলাকাকে স্বতন্ত্র একটি থানার অধীনে আনার কথা ভাবতে হবে। যানবাহন চলাচলসহ সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও নেওয়া দরকার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.